বিএনপিই পাটশিল্পের ধ্বসের কারণ: প্রধানমন্ত্রী

0
541

আওয়ামী লীগ সরকার পাটশিল্পকে এগিয়ে নিতে সবসময় কাজ করেছে, আর এ শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছে বিএনপি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পাটশিল্পের দৈন্যদশার কারণ বিএনপি। বিএনপি ৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একটি চুক্তি করে। এতে বাংলাদেশের বহু পাটকল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিশ্ববাজারে আড়াই লাখ বেল পাট রফতানির সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ওই বাজার দখল করে ভারত। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার পাট দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পাট দিবসের অনুষ্ঠানে পাটের শাড়ি পরে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বক্তৃতাপর্বের পাশাপাশি নানা ধরনের পাটপণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটশিল্পের ওপরে পাকিস্তানের হুমকি ছিল। কিন্তু বিএনপির ক্ষেত্রে এটা কেন? আমরা জানি এটা কেন। তাদের মধ্যে পিয়ারে পাকিস্তান কাজ করে। তারা পাকিস্তানের পদলেহন করতেই বেশি পছন্দ করে। এ দেশের স্বাধীনতায় তাদের বিশ্বাস নেই। এ কারণেই এ দেশে শিল্পের অগ্রগতির বিষয়েও তাদের ভ্রূক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর পাটের ওপর গবেষণা শুরু করি এবং পাট পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিই। এতে পাটের উৎপাদন বাড়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সরকার আবারও আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেয়। ফলে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় এক কোটি মানুষ সমস্যায় পড়ে। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাটপণ্যের দিকে গুরুত্ব দিল আওয়ামী লীগ সরকার। পাটের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কীভাবে পাটপণ্যের বহুমুখি ব্যবহার বাড়ানো যায় সেদিকে ‍দৃষ্টি দিল সরকার। আমরা আমেরিকায় গবেষণারত মাকসুদুল আলমকে এ দেশে নিয়ে এলাম এবং তিনি গবেষণা করে পাটের জীবনরহস্য উদঘাটন করলেন। এতে আমাদের পাট উৎপাদনের সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে গেছে। এছাড়া ২০১০ সালে পাটপণ্যের ব্যবহারের বিষয়ে আমরা সংসদে একটি আইন করি। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ নিজেদের অনেক প্রয়োজনে পাটপণ্য ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পাটপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি আছে, মূল্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাট থেকে উন্নতমানের শাড়ি, ব্যাগ, জুতা ফার্নিচার, তৈরি হচ্ছে, যা অনেক বেশি মূল্যবান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটচাষিরা চাষে যাতে মনোযোগী হয় সেইদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। পাট থেকে ছাল ছাড়ানোর সহজ পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। আমরা নতুন নতুন পাটশিল্প গড়ে তুলছি। এরইমধ্যে খুলনায় চারটি ও সিরাজগঞ্জে একটি কারখানা চালু করেছি। তিনি বলেন, পাটশিল্পগুলোর আর্থিক সংকট সমাধানে আমরা ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ মওকুফ করে দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে এ শিল্পকে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এখন শ্রমিক কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে। বক্তৃতাপর্ব শেষে সম্মেলন কেন্দ্রে পাট দিয়ে তৈরি নানা পণ্যের প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখানে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যাতে অংশ নেয়া সবাই পাটের কাপড় এবং নানা অলঙ্কার পরে অংশ নেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × one =