জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদনের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এজলাসে আসেন। ততক্ষণেও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর ঘোষিত রায়ের নথি হাইকোর্টে পৌঁছেনি। এ কারণে গতকাল রবিবার এ মামলায় জামিন চেয়ে বেগম খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদনের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। : এদিকে গতকালই দুপুর ১২টার দিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর ঘোষিত রায়ের নথি হাইকোর্টে পৌঁছেছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নথিটি এসে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন নিম্ন আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন। তিনি বলেন, পাঁচ হাজার ৩৭৩ পৃষ্ঠার নথি পুলিশ পাহারায় হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেয়া হয়েছে। এর আগে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের কোন আদেশ না দিয়ে আজ সোমবার দিন ধার্য করেছেন। আদালত জানান, আজ দুপুর ২টায় এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে। এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতকে বলেন, শুনানি শেষে আজ জামিনের আবেদনের ওপর আদেশের দিন ধার্য রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নথি এসে পৌঁছেনি। অবশ্য চাইলে হাইকোর্ট নিজস্ব ক্ষমতাবলে আদেশ দিতে পারেন। এ সময় আদালত বলেন, আমরা নথি আসার জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়ে আদেশ দিয়েছিলাম। এই আদেশ ২৫ তারিখে যদি পৌঁছে, তাহলেও ১৫ দিন শেষ হবে আজ। আমরা শেষ সময় পর্যন্ত দেখি। এর পরে আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশ দেবো। জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, আদালতের হাত অনেক লম্বা। কারণ এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালত চাইলে আদেশ দিয়ে দিতে পারেন। তখন আদালত বলেন, আমরা আজকের দিনটি দেখি। : এর আগে গত বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বেঞ্চ সহকারী মোকাররম হোসেন জানিয়েছিলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয়া মামলার মূল নথি হাইকোর্টে পাঠানো হচ্ছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে বেগম খালেদা জিয়া ওই মামলায় জামিন আবেদন করলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চ বিচারিক আদালতের নথি তলব করেন। আদেশের ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে নথি পাঠাতে বলা হয়। হাইকোর্টের আদেশ ২৫ ফেব্রুয়ারিই বিচারিক ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পৌঁছায়। ফলে হাইকোর্ট নির্ধারিত শেষ দিনেই নথিটি পৌঁছল। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়। : গত ২০ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এর পরই গত ২২ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া সাজার বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন। সেইসঙ্গে স্থগিত করেন বেগম খালেদা জিয়ার অর্থদন্ড। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়। : শুনানি শেষে বেগম খালেদা জিয়ার মামলার নথি নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে এসে পৌঁছানোর পরই আদেশ দেয়া হবে বলে জানানো হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়। : আদালতে আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট রেজ্জাক আলী খান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, অ্যাডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাসির, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট সিমকী ইমাম খান, অ্যাডভোকেট আরিফা জেসমিন নাহিন, ব্যারিস্টার মীর হেলাল প্রমুখ। : এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ হারুন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহস্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, সহস্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় মোট বিবাদী ছয়জন।