ওয়াদা-আশ্বাস নিয়েই এখন ভাবছেন সচেতন মানুষজন

0
465

চাওয়া-পাওয়া নিয়ে এখন হিসাবের পালা। পর পর বিগত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর কাছে নির্বাচনী ওয়াদা-আশ্বাস নিয়েই এখন ভাবছেন সচেতন মানুষজন। আর প্রত্যাশার নিরিখে প্রাপ্তি তথা নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ কতদূর কী হয়েছে তার চুলছেঁড়া হিসাব-নিকাশ চলছে। কেননা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস গণনা শুরু হয়েছে। তদুপরি দ্বিতীয় ও প্রধান কারণটি হলো চলমান ভোট রাজনীতির নরম-গরম হাওয়ার প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম সফর আগামী ২১ মার্চ।

তিনি পটিয়ায় জনসভায় ভাষণ দেবেন। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দলের নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা ওইদিন বড়সড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর আগামী জনসভাকে সামনে রেখেই বিগত নির্বাচনী অঙ্গীকারের আলোকে চট্টগ্রামের পানিবদ্ধতা, গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কট নিরসন, মানুষের কর্মসংস্থান, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ-শিল্পায়ন, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের কাক্সিক্ষত উন্নয়নের দাবি-দাওয়াসমূহ চট্টগ্রামবাসীর মুখে মুখে ফের জোরালো হয়ে উঠেছে। কেননা নির্বাচনী ওয়াদা-আশ্বাস পূরণে গত ৯ বছরে আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছে মানুষ। অনেক নেতা-এমপিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে কাছে-কিনারেও দেখা যায়নি। তারাই আবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার আশা নিয়ে কখনও দলের হাইকমান্ডের কাছে কখনওবা স্থানীয় ‘প্রভাবশালী’ অথবা ‘ভোটের কারিগরদের’ কাছে গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন। একইভাবে ২১ মার্চ চট্টগ্রামে (পটিয়ায়) শোডাউনের টার্গেট নিয়ে এখন ব্যস্ত। এলাকাবাসী এসব কিছু নীরবেই পর্যবেক্ষণ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ মার্চ বুধবার চট্টগ্রাম সফর করবেন এবং ওইদিন তিনি নগরীর অনতিদূরে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণে পটিয়া হাইস্কুল মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত জনসভার ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের এ জনসভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ২১ মার্চের পটিয়ায় জনসভাকে ঘিরে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী, মেয়র, এমপি থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জনসভাকে ষোল আনা সফল করে তুলতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এক লাখেরও বেশী লোক সমাগমের মাধ্যমে বিশাল শোডাউনে চমক সৃষ্টির টার্গেট রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জনসভা সফল করার লক্ষ্যে গত শনিবার মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে দলের চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার যৌথ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত এ জনসভার স্থান যুক্তিসঙ্গতভাবেই মহানগরীতে না করে কেন পটিয়ায় নির্ধারণ করা হলো সে সম্পর্কে বাদ-প্রতিবাদ জানিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন মহানগর ও উত্তর জেলার নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলে।

তখন সভার প্রধান অতিথি দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আশ্বস্ত করেন, পরবর্তী সময়ে মহানগরী এবং উত্তর চট্টগ্রামে আরও দু’টি জনসভা অনুষ্ঠিত হবে, আর সেখানে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তখন নেতা-কর্মীরা শান্ত হলেও পরবর্তী সময়েও জনসভার স্থান নিয়ে নেপথ্যে গুঞ্জন-বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। পূর্তমন্ত্রী এ জনসভার সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। প্রসঙ্গত চট্টগ্রামের অধিকাংশ নেতা-এমপির পছন্দের ভ্যানু নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দান অথবা এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। তবে পলোগ্রাউন্ডে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার কারণে স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। জনসভার চলমান প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পটিয়ায় বড় ধরনের জনসভা আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা সবধরনের প্রস্তুতি কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি। বর্ধিত সভায় এ বিষয়ে নেতৃবৃন্দ বিস্তারিত গাইড লাইনসহ আলোচনা করেছেন। এতে কর্মীরাও বেশ উৎসাহিত।

এদিকে জনসভার আগে তড়িঘড়ি করে দলীয় আন্তঃকোন্দল, বিরোধ, গ্রæপিং মিমাংসার জন্য চট্টগ্রামের নেতারা কেন্দ্রের কড়া নির্দেশনা পেয়েছেন। তবে চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের সাংগঠনিক পর্যায়ে এখন পর্যন্ত নেপথ্যে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী-মেয়রের সমর্থনে মেরুকরণ চলছেই। মূল দল আওয়ামী লীগ ছাড়াও ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ গ্রæপিং ও বিরোধ কম-বেশী মাথাচাড়া দিয়েছে দীর্ঘদিন। এলাকাওয়ারি আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় ঘটেছে নিজেদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত রক্তারক্তির ঘটনাবলী। যা এখন আপাতদৃষ্টে চাপা রয়েছে।

আগামী নির্বাচনমুখী শোডাউনের মাধ্যমে সরকারি দলের প্রতি জনসমর্থন মজবুত করতে আগামী ২১ মার্চ চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সফর ও বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত জনসভাকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখছেন সচেতন চাটগাঁবাসী। কেননা প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জনসভায় কী কী ঘোষণা দিয়ে যাবেন তা নিয়ে এখানকার জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও দাবিগুলো এখন আবারও জনে জনে আলাপে-আড্ডায়, আলোচনায় ও গুঞ্জনে উঠে আসছে। বৃহত্তর চাটগাঁর মানুষ বলাবলি করছে, এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে চট্টগ্রামবাসীর আশা কী পূরণ হবে? নাকি সমস্যা-সঙ্কটের বহর যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে যাবে? বৃহত্তর চট্টগ্রামে অনেকদিন ধরে উচ্চারিত দাবি-দাওয়া কিংবা সমস্যার বহরে রয়েছে- বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামে প্রতিবছর বর্ষায় ও তার আগে-পরে মারাত্মক পানিবদ্ধতায় লাখ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা অচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সমন্বয়হীন অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে নানামুখী জনদুর্ভোগ, সিটি কর্পোরেশনের চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের অভাবে ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট সড়ক অবকাঠামো সংস্কারসহ উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত, গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কটে শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে স্থবিরতা, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ ও নতুন নতুন শিল্পায়নের সুযোগ আটকে থাকা, কন্টেইনার যোগে শিপিংয়ের চাহিদা ও চাপ বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামকে যুগোপযোগী আধুনিক মানে উন্নয়ন, প্রস্তাবিত ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে বন্দরের স¤প্রসারণ ইত্যাদি। চট্টগ্রাম মহানগরীর ‘দুঃখের বারমাইস্যা’ পানিবদ্ধতা সঙ্কট নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প একনেক কর্তৃক অনুমোদনের দীর্ঘদিন পর গতকাল (রোববার) গণপূর্ত মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট সেবা ও উন্নয়ন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সিডিএ ভবনে প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় মনিটরিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এতে কিঞ্চিৎ আশার সাথে সার্বিক হতাশার আলামত ফুটে উঠেছে। কেননা আসন্ন বর্ষার আগে আপাতত ৫শ’ কোটি টাকার যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পানিবদ্ধতা সমস্যা ‘সহনীয় পর্যায়ে’ (নিরসন নয়) আনা হবে। এরজন্য খালগুলোর সংস্কার, পুনঃখনন করা হবে। তাও নগরীর ৩৬টি খালের মধ্যে ১৬টির! এরফলে নগরীর পানিবদ্ধতার সঙ্কট অনেকাংশেই জগদ্দল পাথরের মতো লাখ লাখ নগরবাসীর উপর চেপে থাকবে এই শঙ্কা থেকেই যায়।

এদিকে চাটগাঁবাসীর দাবি ও প্রত্যাশা অনুযায়ী চট্টগ্রামের উন্নয়নে বরাদ্দ না আসায় কোন কোন ক্ষেত্রে জনমনে বিরাজ করছে হতাশা, অপ্রাপ্তির বেদনা। এরফলে সচেতন নাগরিক মহল এখন চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছেন। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে চট্টগ্রামের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিকতার প্রতিফলন লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এই অঞ্চলের নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা উন্নয়নের রোড ম্যাপ নিয়ে সরকারের চার বছরেরও বেশি মেয়াদকালের মধ্যে একটি বারও এক টেবিলে বসতে সক্ষম হননি। উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে সমন্বয়হীন ও যথেচ্ছভাবে। নাগরিক সেবা ও উন্নয়নের সাথে জড়িত চট্টগ্রামের ২২টি সরকারি সংস্থা বা বিভাগের কাজেকর্মেও নেই সমন্বয়। অন্যদিকে চট্টগ্রামের অন্যতম মেগাপ্রকল্প কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের জন্য চুক্তিমাফিক চায়না এক্সিম ব্যাংকের অর্থ ছাড়করণে সাড়া দিলেও ‘ধীরে চলো’ নীতি অব্যাহত রয়েছে। এরফলে মূল টানেল নির্মাণ কার্যত শুরু হয়নি।

এরমধ্যেই কর্ণফুলী টানেলের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজে নদীর ওপাড়ে নিয়োজিত ৬ জন চীনা প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাকে গত ২ ফেব্রæয়ারি দিনদুপুরে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন ব্যবহার্য মূল্যবান সামগ্রী লুট, একজনকে মারধরের ঘটনার জের ধরে সংশ্লিষ্ট মহলে চলছে তোলপাড় প্রতিক্রিয়া। চীনা কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ভীতি-আতঙ্ক। এ ঘটনায় চীনসহ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং চীনা কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোনসহ আংশিক মালামাল উদ্ধার হলেও প্রকৃত অপরাধীরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। চট্টগ্রামে বিদেশী নাগরিকরা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার আরও কিছু ঘটনা সম্প্রতি ঘটে। চট্টগ্রামে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি। যা পর্যটন শিল্পখাতকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশার পরদ দিনে দিনে উঁচুতে উঠছে। তাদের দাবি-দাওয়া, প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে, দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইন কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ দ্রæতায়িত করা, নাজিরহাট লাইনের উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারের লক্ষ্যে নতুন নতুন শিল্পপ্লট ও শিল্পজোন স্থাপন, পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী দেশের প্রধান পাইকারি ও ইন্ডেন্টিং বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জের উন্নয়ন, পানিবদ্ধতা ও দুর্যোগ থেকে চট্টগ্রামের সুরক্ষায় পরিকল্পিত ও স্থায়ী উপকূলীয় বেড়ীবাঁধ কাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ, চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নে ঝুলে থাকা প্রকল্পবহর অবিলম্বে বাস্তবায়নসহ যান্ত্রিক সরঞ্জাম, ইয়ার্ড ও টার্মিনালের ঘাটতি নিরসন, চট্টগ্রামে সরকারি উদ্যোগে আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল স্থাপন, নির্মল বিনোদন সুযোগ-সুবিধা প্রসার, কালুরঘাট সেতু নির্মাণ ইত্যাদি। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রামেই গার্মেন্টস শিল্পখাত জন্মলাভ করে। আর সেখানেই এখন ৫০টিরও বেশি কারখানা বন্ধের মুখে রয়েছে। এই খাতে বিরাজ করছে সঙ্কট আর হতাশা। এর পেচনে মূল কারণটি হলো সরকারের কর্তাব্যক্তিদের নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামের শহরতলীতে প্রস্তাবিত গার্মেন্ট পল্লী বা শিল্পজোন গড়ে তোলার ব্যাপারে নির্লিপ্ততা।

সবকিছু মিলিয়ে অনেক হতাশার মাঝেও চট্টগ্রামবাসীর মাঝে প্রত্যাশা জাগরুক হয়েছে হয়তো এবার প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফর ও বিভাগীয় পর্যায়ের জনসভায় দেশের ‘গেইট ওয়ে’ ও অর্থনীতির চাবিকাঠি চাটগাঁর উন্নয়নের দাবি-দাওয়া ও নির্বাচনী ওয়াদা-আশ্বাস পূরণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেবেন। কেননা চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে সমগ্র দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন। যা কোনো আঞ্চলিক উন্নয়নের দাবি-দাওয়া নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্দরনগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ সর্বশেষ জনসভায় ভাষণ দেন। তাছাড়া চট্টগ্রাম জেলায় ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট ফটিকছড়িতে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। ২০১৬ সালে ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এবং ছয়টি প্রকল্পের উদ্বোধনকালে সুধী সমাবেশে এবং ওইদিন আগ্রাবাদে চিটাগাং চেম্বারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণ প্রদান করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 − twelve =