আমরা একক সরকার চাই না –এরশাদ

0
3404

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। দেশকে বাঁচাতে হবে। এখন তো নির্বাচন হয় না, সীল মারে। নির্বাচন কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা একক সরকার চাই না। সবকিছুতে একজনের কথায় দেশ চলছে। নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার দাবি করে তিনি বলেন, দেশ একজন শাসন করবে সেরকম কোথাও নেই। সুশাসন নিশ্চিত করতে আগামীতে ক্ষমতায় গেলে সাতটি প্রদেশ করব।

চট্টগ্রামকে করা হবে ‘চট্টলা’ প্রদেশ। আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন খুন, গুম হচ্ছে। কে কখন খুন গুম হবে একমাত্র আল্লাহ জানেন। গতকাল (শনিবার) লালদীঘি ময়দানে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোটের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এরশাদের বক্তব্যের সময় দলীয় নেতাকর্মীরা মুহূর্মুহ শ্লোগান দেয়। জনসভায় ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মী, সমর্থকদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনএ চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী মনি, জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, ইসলামী ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ, মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদী আল কাদেরী, জাতীয় পার্টির নগর আহ্বায়ক সোলায়মান আলম শেঠ, জাপা দক্ষিণ জেলার সভাপতি শামসুল আলম মাস্টার প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জোটের শীর্ষ নেতা ও ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান। এরশাদ আরও বলেন, এখন দেশের অবস্থা কি? জনগণকে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা থাকলেও চালের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও ৪ কোটি ৭৬ লাখ বেকার। কাজ নেই, তারা সমাজের বোঝা, পরিবারের বোঝা। তারা মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এখন রাস্তায় ধর্ষিতা হওয়ার পর লাশ ধানক্ষেতে পাওয়া যাচ্ছে। বাল্যবিবাহের প্রকোপ বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ১৩-১৪ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছে অভিভাবকরা। কিছুদিন আগে শুনেছিলাম ব্যাংকে টাকা নেয়ার লোক নেই। এখন ব্যাংকে টাকা নেই। টাকা কোথায় গেল? দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, শেয়ার বাজার ধ্বংস, ব্যাংক লুটপাটসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় পচন ধরেছে। উন্নয়নের মহাসড়কের নামে দুর্নীতির মহাসড়কে আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি। আমাকে একসময় স্বৈরাচার বলা হতো। অথচ আন্তর্জাতিকভাবে বর্তমান সরকারকে স্বৈরাচার বলা হচ্ছে। এরশাদ বলেন, আমরা মুসলমান। আমরা সৌভাগ্যবান। আমরা মহানবীর (সাঃ) উম্মত। যারা জুলুম করে তারা মহানবরীর উম্মত নয়। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী বলে ইসলামে কোন কথা নেই। পশ্চিমা দেশগুলো এরকম আখ্যা দিয়েছে। এরা আফগানিস্তান, সিরিয়া ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, আমি যতদিন বেঁচে আছি ইসলামের খেদমত করে যাব। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করব এবং দুঃশাসনের অবসান ঘটাবো। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার আগামী অন্তত একবারের জন্য এরশাদকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। তিনি যখন আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন তখন তাকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। দুই দল থেকেই মুক্তি চায়। ব্যাংক ও শেয়ার বাজার লুটপাটসহ আজকে রাতকে দিন বানানো হচ্ছে। সংবাদপত্র লিখতে পারছে না। সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে। ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন বলেন, চট্টগ্রামের অধিকারহারা মানুষ আগামীতে এরশাদকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়। তিনি এ অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবেন। জাতীয় অভিভাবক হিসেবে আমরা এরশাদকে বেছে নিয়েছি। সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইসলামের জন্য অনেক কিছু কেেরছেন। তিনি সুফিবাদী ইসলামের অনুসারী। এরশাদের নেতৃত্বে সফল পরিবর্তন আসবে। জনগণ আবারও এরশাদকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

sixteen + 4 =