সংসদ সদস্য এ কে এম আউয়াল জলবায়ু তহবিলের টাকায় দুর্নীতি

0
684

পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম আউয়াল জলবায়ু তহবিলের টাকায় এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করেছেন মা-বাবার নামে। ঝালকাঠিতে এই তহবিলের টাকায় স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও গভীর নলকূপ পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, বিত্তশালী থেকে বীমা কম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের পৌর মেয়র ছালেক মিয়া ‘ওপর মহল’কে হাত করে আগের দুই কোটি টাকার সঙ্গে জলবায়ু তহবিল থেকে সম্প্রতি আরো সাত কোটি টাকা অনুমোদন বাগিয়ে নিয়েছেন।

এই তহবিলেরই টাকায় গাজীপুরের সাফারি পার্কের জন্য দুটি মিনিবাস কেনা হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টাকায়। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ড এক প্রভাবশালীর অনুরোধে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চার কোটি টাকায় তিন হাজার ৬৯০ বর্গফুট আয়তনের আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া, বিনা প্রশ্নে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশি ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলের বদলে অন্যত্র অর্থ যাচ্ছে এবং রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণের মতো কাজের নাম করে লুটপাট চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম শীর্ষে থাকায় বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ২০১০ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) গঠন করে। এ তহবিলের টাকায় দেশে এখন ৪৫০টি প্রকল্প চলমান। সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছে, ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার উদ্যোগও নিয়েছে, কিন্তু স্বার্থের ভাগ বসিয়েছে মহলবিশেষ। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট থেকে শুরু করে পিরোজপুর, বরগুনা, গাজীপুর ও ঝালকাঠিতে অন্তত ২০টি প্রকল্প অনুসন্ধান করে দেখা গেছে লক্ষ্যচ্যুত হওয়ার চিত্র। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্যতম ঝুঁকিতে থাকা জেলা বরগুনার বেতাগী পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির জলবায়ু তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত এক পয়সাও পাননি। সচিবালয় থেকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, সেখান থেকে মহাখালীতে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড অফিস—ঘুরে ঘুরে জুতার তলা ক্ষয় করলেও লাভ হয়নি। তিনি  বলেন, ‘আমি নদীপারের মানুষ। বাড়ির পাশে বঙ্গোপসাগর। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আমরা। আমরাই এ তহবিল থেকে সহায়তা পাই না। কারণ আমাদের ক্ষমতা, প্রভাব কিছুই নেই।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরগুনার আরেক পৌরসভা আমতলীতেও দিন দিন লবণাক্ততা বাড়ছে, কিন্তু তহবিল থেকে যায়নি একটি টাকাও। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় পানির অভাবে বিস্তৃত জমি পড়ে আছে। বোরো চাষ করা যাচ্ছে না। সেখানেও জলবায়ু তহবিলের টাকা পৌঁছেনি। উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, খুলনা জেলাও জলবায়ু তহবিলের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত। উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটে এক থেকে দুটি করে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গ্রীষ্মের সময় ওই সব জেলায় পানির জন্য হাহাকার থাকে। অথচ যেসব জেলা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কোনো ঝুঁকিতে নেই, প্রভাব আর ক্ষমতার কারণে সেসব জেলায় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মানুষ শেষ বন্যা দেখেছে ১৯৯১ সালে; তা-ও এক দিনের জন্য। পাহাড়ি বনাঞ্চলে আবৃত কমলগঞ্জ সমতল থেকে বেশ উঁচুতে আছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, গত দুই দশকে কমলগঞ্জে বন্যার রেকর্ড নেই। এসব রেকর্ডকে আমলে না নিয়ে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপে গত বছর জুনে জলবায়ু তহবিল (বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড-বিসিসিটি) থেকে চার কোটি টাকা ব্যয়ে তিন হাজার ৬৯০ বর্গফুট আয়তনের আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ড। ওই একই ব্যক্তির প্রভাবে জলবায়ু তহবিলের টাকায় কমলগঞ্জ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নে আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। তেমন ঝুঁকিতে না থাকলে পাশের জেলা হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের পৌর মেয়র ছালেক মিয়া প্রথমে তহবিল থেকে দুই কোটি টাকা পান রাস্তা ও নালা নির্মাণের জন্য, তহবিল থেকে তিনি সম্প্রতি আরো সাত কোটি টাকা অনুমোদন পেয়েছেন। এদিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে জহুরা একরাম কওমি মাদরাসায় তহবিলের টাকায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে এমপির মা-বাবার নামে। মাদরাসার প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘পুকুর ভরাট করে সাইক্লোন শেল্টার করায় শেল্টারের ভেতরে গোসলখানা করতে আমি বেশ কয়েকবার অনুরোধ করি। লাভ হয়নি।’ তবে যদিও এমপি এ কে এম আউয়াল দাবি করেন, ‘মাদরাসার জায়গার পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত জায়গায় সাইক্লোন শেল্টার করা হয়েছে। পুকুর থাকার প্রশ্নই ওঠে না। শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই খালে অজু-গোসল করে আসছে।’ এলাকাবাসীর অভিযোগ, পিরোজপুরে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা আছে, যেখানে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ জরুরি; কিন্তু এমপি নিজ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করেছেন। ঝালকাঠি জেলা সদরের দুস্থ জনগণের জন্য ৩৯০টি স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও ২৯৫টি গভীর নলকূপ বিতরণের কথা থাকলেও বেশির ভাগই বসেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাড়ির উঠোনে। তাঁদের মধ্যে আছেন, ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিঠু, ভাণ্ডারিয়া সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরীফ মোহাম্মদ কাইয়ুম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোবারক হোসেন মল্লিক, বিত্তশালী জাহানারা বেগমসহ অন্যরা। জেলা পরিষদের নথিতে তাঁদের নাম রয়েছে, প্রতিবেদক ছাত্রলীগ নেতা মিঠুর বাড়িতে গিয়েও প্রকল্পের নলকূপ দেখতে পেয়েছেন। নলকূপ বসানোর নামে ‘বাণিজ্য করার’ অভিযোগ উঠেছে মেঘনা লাইফ ইনস্যুরেন্সের বরিশাল ও ঝালকাঠি এরিয়া ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। হীরা আক্তার নামের একজন বলেন, ‘নলকূপ বসানোর কথা বলে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেন আনোয়ার। পরে দেখি সে নলকূপ সরকারিভাবে দেওয়া। নলকূপ থেকে পানিও ওঠে না।’ তবে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘টাকা নেওয়া হয়েছে সংযোগের পাইপ কেনার জন্য। সে টাকা আমি নিইনি’। ঝালকাঠির ভৈরবপাশা ইউনিয়নের দাপঢ় গ্রামে গিয়ে প্রতিবেদক দেখেন, ময়লা-আবর্জনায় দুটি ল্যাট্রিন অব্যবহৃত পড়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম ও নূর আলী বলেন, কাছে পানি আছে এমন জায়গায় না বসানোয় এ অবস্থা হয়েছে। জলবায়ু তহবিলের টাকায় গাজীপুরের সাফারি পার্কের জন্য এক কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কেনা হয়েছে দুটি মিনিবাস। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মিনিবাসের সম্পর্ক না থাকলেও প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। যদিও মিনিবাস না কিনতে আপত্তি ছিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কারিগরি কমিটির একাধিক সদস্যের, তারা বলেছিলেন বন বিভাগের অর্থে এই বাস কিনতে। আরো অনেক জেলায় তহবিলের টাকায় চলছে ‘ঠিকাদার বাণিজ্য’। সিলেট শহরের জলাবদ্ধতা দূর করতে সুরমা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চর খনন করতে নেওয়া একটি প্রকল্পের কাজ পান ঠিকাদার মহিউদ্দিন আহমেদ। তাঁর কাছ থেকে কাজটি টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেন বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার হাসান মুরাদ রুমি। তিনি নদীর মাঝখান থেকে মাটি তুলে নদীর আরেক পাশেই রাখছেন। ফলে আসন্ন বর্ষায় সব মাটি আবার নদীতে মিশে ফের চর জাগতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলামসহ অন্যদের আশঙ্কা। তবে হাসান মুরাদ রুমি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আপনি যখন ভাত খান, দু-একটা ভাত কিন্তু বাইরেও পড়ে। এখানেও সে রকম অবস্থা। কিছু মাটি নদীতে পড়ে যাচ্ছে। তবে আসছে বর্ষার আগেই নদী খনন করে মাটি অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হবে।’ সিলেট সদর উপজেলার লামাকাজী, শেখপাড়া ও আকিলপুর স্থানে সুরমা নদী ভাঙনরোধে এ তহবিলের টাকায় ব্লক দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্লক এখনই ভেঙে পড়েছে। নদীর তলদেশে পাথর দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কিছু পাথর নদীর পাড়ে পড়ে আছে। অথচ বিল ঠিকই তুলে নেওয়া হয়েছে। নদীর তীরে ভাঙনকবলিত স্থানে থাকা ১০টি পরিবার অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দা খেসমালা, সুজন আহমেদ, মোজাম্মেল আলী বলেন, তাঁরা ঠিকাদারকে বলেছিলেন মাটি ও পাথর ভালোভাবে দেওয়ার জন্য। না দেওয়ায় অল্প কিছুদিনে সব ব্লক ভেঙে পড়ছে। জানা যায়, ব্লক ও পাথর দেওয়ার কাজটি পান ঠিকাদার তৈমুর আলম, তাঁর কাছ থেকে কাজটি বাগিয়ে নেন স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন। জলবায়ু তহবিলের টাকা দিয়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌরসভায় একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হয় মাত্র ছয় মাস আগে। দুই কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রথী ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু কাজটি নিয়ে নেন সেলিম ও লুবন নামের দুই ঠিকাদার। সেলিম ও লুবন লাভের ১০ শতাংশ টাকা মূল ঠািকাদারকে পরিশোধ করে নিজেরা কাজটি করছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ছয় মাস না যেতেই সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিমেন্ট উঠে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন আলী বলেন, ‘অনভিজ্ঞ ঠিকাদার দিয়ে কাজ করালে ও সিমেন্ট কম দিলে যা হয়।’ কমলগঞ্জ পৌর এলাকার মকবুল আলী সড়ক, গোপাল নগর সড়ক ও চণ্ডীপুর সড়কের কাজ চলছে জলবায়ু তহবিলের টাকায়, তাও যেনতেনভাবে। ঠিকাদার জাকির হোসেন এন্টারপ্রাইজ। পৌর মেয়র জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘অনিয়মের অভিযোগে দুইবার কাজ বন্ধ করেছি। পরে ঠিকাদারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে কাজ শুরু করিয়েছি।’ জলবায়ু তহবিলের টাকায় বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বদলপাড়া ও বলইকাঠি বাজার এবং তত্সংলগ্ন এলাকা রাঙামাটি নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় নেওয়া একটি প্রকল্পের আওতায় ব্লক তৈরির কাজে ব্যবহৃত পাথরের সাইজ ২৫ এমএমের পরিবর্তে গুঁড়া পাথর দেওয়া হয়েছে। এতে করে ব্লকের দৃঢ়তা, কার্যকারিতা দ্রুত হারানোর আশঙ্কা স্থানীয়দের। তাদের মতে, প্রকল্পটি টেকসই হবে না। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাথর দেওয়ার কথা থাকলেও, তা দেওয়া হয়নি। এতে আবার নদীভাঙন শুরু হবে। তহবিলের টাকায় ঝালকাঠি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ পায় প্রিন্স অ্যান্ড কম্পানি, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ এবং আরাফাত ট্রেডার্স। কিন্তু কাজ জোর করে নিয়ে মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদারের ঘনিষ্ঠরা বাস্তবায়ন করছে এবং তা যাচ্ছেতাইভাবে। অনেক স্থানে ড্রেনে স্ল্যাব দেওয়া হয়নি বলে ফের ভরে যাচ্ছে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, কাজের মান নিয়ে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। অভিযোগ প্রসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের (বিসিসিটি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব দীপক কান্তি পাল বলেন, ‘জলবায়ু তহবিলের টাকায় অনেক ভালো কাজ হয়। সেগুলোর তেমন প্রচার-প্রচারণা হয় না। তবে জনবল বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনাধীন।’ অপ্রয়োজনীয় স্থানে তহবিলের টাকা যাচ্ছে স্বীকার করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘তহবিলের টাকা নেওয়া উচিত গবেষণার কাজে, সোলার প্যানেল বসাতে, বৃক্ষরোপণ প্রকল্পে। কিন্তু এখন নেওয়া হচ্ছে রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণে। এসব কাজের জন্য তো এলজিইডি আছে। আমি চেষ্টা করছি এসব পরিবর্তনের।’ মন্ত্রী বলেন, ‘তহবিলের টাকায় মাঠপর্যায়ে অনিয়মের কথা আমিও শুনেছি। এটা আমাদের সামাজিক সমস্যা।’ অভিযুক্তরা পার পাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।’ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জলবায়ু তহবিল নিয়ে যেভাবে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে, তাতে উন্নত দেশগুলো আমাদের ওপর আস্থা হারাবে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ক্ষতিপূরণ দাবির স্থানটি দুর্বল হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে এবং ঝুঁকিতে থাকা মানুষের বদলে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। জার্মান ওয়াচের সব শেষ প্রতিবেদনের তথ্য মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ষষ্ঠ। ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার ২০১০ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) গঠন করে। জাতীয় বাজেট থেকে গত আট অর্থবছরে এই তহবিলে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 − seven =