কমলনগরে বৃদ্ধকে হত্যা এক বছরেও স্বজনরা পায়নি বিচার

0
867

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর কমলনগরের ফজুমিয়ার হাটের চর পাগলা গ্রামের ৮ নং চরকাদিরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মো: মমিন উল্লা(৭৫) নামের এক বৃদ্ধ এক বছর আগে অপমৃত্যু হয়। মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘোরাফেরা করলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। মামলা করায় বাদি মৃত মমিন উল্লার ছেলে ফয়েজ আহমেদকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। এ নিয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকার মানুষের কাছে জানা যায় মৃত মো; মমিন উল্লাহ তার সকল সম্পত্তি ছেলে মেয়েদের ভাগ করে দিয়ে ৬ কড়া জমি নিজের ব্যবহারের জন্য দখলে রাখেন। উক্ত জমিটি তার ছেলে নুর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন দখল করে রাখেন। গত ১৮/০৫/২০১৭ ইং রোজ বৃহস্পতিবার দৃপুরে মুত মমিন উল্লাহ সে উক্ত ৬ কড়া জমি হইতে আনারস, লেবু ও নারিকেল সংগ্রহ করে যাওয়ার সময় তার ছেলে নুর মোহাম্মদের স্ত্রী শাহীনুর আক্তার সোহাগি ফলগুলো জোর করে কেড়ে নেন এবং তাকে এখানে আসায় হত্যার হুমকি দেন।

মৃত মো; মমিন উল্লাহ ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে পাশ্ববর্তী ফজুমিয়ার হাট বাজারে এসে লোকজন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মাওলানার কাছে বলেন । চেয়ারম্যান তাকে সান্তনা দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলে। মৃত মো; মমিন উল্লাহ রাত আনুমানিক ৯ টা বাড়ি দিকে যান। পরের দিন ১৯ মে শুক্রবার সকাল ৬টা তুরাল্লা বাড়ির বাবুলের বাপ মৃত মমিন উল্লাহ লাশ, মামলার আসামি নুর মোহাম্মদের বাড়ির ১০০ ফুট পূর্বে করিমের বাড়ির পাশে হালিমের প্রজেক্ট সংলগ্ন বাশ গ্ছের সাথে বাধা অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে পোষ্টমটমের ব্যবস্থা করেন। মৃত মো; মমিন উল্লাহর ছেলে ফয়েজ আহমেদ (৫৫)পিতৃহত্যার মামলা করতে থানায় গেলে পুলিশ অজ্ঞাত কারণে কোন মামলা গ্রহণ করেনি।পরে সে লক্ষ্মীপুর চীপজুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেটের আদালতে নুর মোহাম্মদকে প্রধান করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারনে কোন আসামিকে গ্রেফতার করছে না। এ বিষয়ে এলাকার আল মুঈন মাদ্রাসার খতিব মাও . মনির ও মুয়ার্জিন মো. মোস্তফা বলেন ১৮ ই মে মৃত মো; মমিন উল্লাহ আমাদেরকে তার ছেলের বউ এর হত্যার হমকির কথা জানান। আমরা তাকে সান্তনা দিয়ে ফেরত পাঠাই। কিন্ত নিজের সন্তান পিতাকে মেরে ফেলবে আমরা চিন্তাও করতে পারি নি। ফজুমিয়ার হাট ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ বলেন ১৮ ই মে মৃত মো; মমিন উল্লাহ আমাকে তার ছেলেরও তার বউ এর হত্যা ও রক্ত দিয়ে গোসল করার হমকির কথা জানান। পরের দিনে মমিন উল্লাহর লাশ দেখে আমি অবাক। এ বিষয়ে আমরা মামলার আসামি নুর মোহাম্মদের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার সোহাগি (৩০) এর সাথে কথা বলতে চাইলে সে সাংবাদিকদের কোন সঠিক তথ্য দেননি। মামলার প্রধান আসামি নুর মোহাম্মদ এর সাথে কথা বললে সে বলেন, তার পিতার স্বাভাবিক মুত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে তিনি তার দখলে থাকা পিতার নামের ৬ কড়া জমির ব্যপারে কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। তিনি তাদের পারিবারিক সকল ঝামেলা জন্য চাচা মফিজ ও আমার ভাই হারুন এবং তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে দায়ী করেন। কেন পিতার জানাজা পড়তে আসেননি এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান। ৮ নং চরকাদিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ সাহেবের সাথে বললে সে বলেন, ঘটনার আগের রাত মৃত মমিন উল্লাহ আমাকে তার ছেলে নুরমোহাম্মদ ও তার স্ত্রী শাহীনুর আক্তার সোহাগীর ব্যপারে হত্যা ও রক্ত দিয়ে গোসল করার হুমকির কথা বলেন। এজন্য সে ভয়ে বাড়ি যেতে চায়নি । তাকে আমি বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। পরেরদিন সকালে শুনি তার মৃত্যুর সংবাদ। ঘটনার স্থলে গিয়ে আমি মমিন উল্লাহ লাশ দেখি এবং লাশের যে অবস্থা আমি দেখেছি তাতে আত্ম হত্যা বলে মনে হয়নি। তার অন্য সন্তানেরা তার কাছে বিচারের জন্য গেলে সে ন্যায় বিচারের লক্ষে তাদেরকে থানায় প্রেরন করেন। তিনি এই ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 − 7 =