প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিন

0
530

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে বলেছেন, বিচারপ্রার্থী জনগণের অল্প সময়ে, অল্প ব্যয়ে ও সহজে ন্যায় বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিছক গতানুগতিক বা দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতেও বলেন তিনি।
বুধবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারি জজদের জন্য আয়োজিত ৩৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। চারমাস মেয়াদী এ প্রশিক্ষণে ৪৫ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছে।

বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের বিচারক হয়ে ওঠার পেছনে দেশের গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে। আর আপনাদের কর্মক্ষেত্রই হল বিচারপ্রার্থী ওইসব সাধারণ মানুষের শেষ ভরসাস্থল। তাই বিচারিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ বিচার বিভাগকে কোন্ দৃষ্টিতে দেখছেন কিংবা তাদের চোখে ন্যায়বিচারের ধারণাই বা কেমন সেটিকে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে। বলেন, আপনাদের বিন্দুমাত্র লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনো হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যে, পেশার গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করেই বর্তমান সরকার আপনাদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে।
তিনি বলেন, সমাজে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পেশাগতজীবনে অন্যের অনুসরণীয় হবেন- এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আপনাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যত কর্মজীবন যাতে কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সার্ভিস ডেলিভারির ক্ষেত্রে সততার ভিত্তিতে চারিত্রিক দৃঢ়তা বা স্বচ্ছতাই হবে বিচারকদের কর্মজীবনের মূলমন্ত্র।
মন্ত্রী বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কেবল আইনের শাসনই নয়, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র দূরীকরণেও জুডিসিয়ারি বিশেষ করে কোয়ালিটি জুডিসিয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই জনগণকে কোয়ালিটি জুডিসিয়ারি উপহার দেওয়ার লক্ষে বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে সবধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বলেন, বিচারকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ আগে দুই মাসের হলেও এবার তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ চারমাস করা হয়েছে এবং আগামীতে এটি ছয়মাসে উন্নীত করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দেশের আদালতসমূহের মামলাজট নিরসন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ মামলাজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।
দেশ মাতৃকা ও সাধারণ মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টি স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে একাত্তরে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে এ দেশটির জš§ হয়েছিল বলেই আমরা একেকজন আজ বিভিন্ন উচ্চতর পদে আসীন হতে পেরেছি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করা।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 3 =