সুনামগঞ্জের গিরিঙ্গিবাজ আব্দুল আলী মাষ্টারের মিথ্যা মামলার ফাঁেদ নিঃস্ব এলাকাবাসী

0
672

আহসানউল্লাহ হাসানঃ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর এলাকার গিরিঙ্গিবাজ আব্দুল আলী মাষ্টারের মিথ্যা মামলার ফাঁেদ পড়ে একাধিক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব গেছে। আব্দুল আলী সামান্য স্কুল মাষ্টার ও তার ছেলে আইনজীবি হওয়ার সুবাদে কতিপয় টাউটবাটপারকে সঙ্গী করে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন ঘটনার জের ধরে একপক্ষকে দিয়ে অন্যপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা করিয়ে মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। কৌশলে মিথ্যা মামলা দিয়ে চাদাঁবাজী, জমি দখল, মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার প্রদান সহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করাই আব্দুল আলী চক্রের প্রধান কাজ। মিথ্যা মামলায় হয়রানীর শিকার ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ভয়ে এলাকায় কেউ আব্দুল আলীর ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে জেলে যেতে হয়। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাল্লা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল আলী। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক হলেও এলাকার সাধারন মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী সহ মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ওস্তাদ হিসেবে খ্যাত। আব্দুল আলীকে মামলা সংক্রান্ত কাজে পেছন থেকে শেল্টার দেয় তার ছেলে এডভোকেট আলামিন। আলামিনের পরামর্শে তার বাবা আব্দুল আলী এলাকার একজনকে দিয়ে অন্যজনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ছেলের কাছে পাঠিয়ে দেয় এবং সে এলাকায় বসে মামলার বাদী ও বিবাদীর মধ্যে মিমাংশা করার চেষ্টা করে উভয় পক্ষের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আব্দুল আলীর কুপরামর্শে মামলা করে অনেকেই আজ পথের ফকির। ভুক্তভোগি মোহাম্মদ আলী জানান, আব্দুল আলী আমার বোন জামাই। সে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাদাঁবাজী দাবী করে এবং একটি মিথ্যা মামলার স্বাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দেয়। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় সে তার ছেলে উকিল আলামিনের কুপরামর্শে ঐ মামলায় আমাকে ৫নং আসামী করে। আব্দুল আলী সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগি খলিল মিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডে আওতাধীন একটি বেড়িবাধঁ নির্মান প্রকল্পের ঠিকাদার। সে ঐ কাজের জন্য সাব-ঠিকাদার রতন দাসের মাধ্যমে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকার মাটি ভরাটের কাজ করিয়ে ৫ লাখ টাকা তাদেরকে পেমেন্ট দেয় আর বাকী প্রায় ১১ লাখ না দিয়ে আত্মসাৎ করার পায়তারা শুরু করে। এই নিয়ে খালিল মিয়া দীর্ঘদিন আত্মনাৎ মামলায় জেল খেটে এখন জামিনে আছে। কিন্তু খলিল মিয়া আব্দুল আলীর শেল্টারে ১১ লাখ টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার লক্ষে পাওনাদারদের দমন জন্য একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। সে আমার দুলাভাই হয়ে আমার নামে তিনটা মামলা দিয়েছে। নরসিংধী জেলার রায়পুরা উপজেলার জিরাহী গ্রামের মৃত নৈমুদ্দিনের ছেলে ইসমাইল মিয়াকে দিয়ে আমার বড় ভাই হারিছ মিয়ার নামে একটি মিথ্যা করিয়েছে। অথচ ইসমাইল মিয়া আমার ভাইকে জীবনে কখনো দেখেও নাই বিধায় ঐ মামলায় ম্যাজিসট্রেট তাদের ৪ জনকে জমিন দিয়ে দেয়। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো প্রত্যেকটা মামলাতেই আব্দুল আলী, খলিল মিয়া, কুতুব আলী, হুমায়ন কবির ও জলিল মিয়া সিন্ডিকেট স্বাক্ষী থাকে। স্বাক্ষীদের মধ্যে আব্দুল আলী মাষ্টার আমার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেছে। টাকা দিলে সে আমাকে ঐ মামলা থেকে বাদ দিয়ে দিবে।
মিথ্যা মামলার আরেক আসামী তারা মিয়া বলেন, আমারা খলিলের কাজ করে ১১ লাখ টাকা এখনো পাওনা আছি। এই টাকাটা তারা আত্মসাৎ করার জন্য আব্দুল আলীর ছেলে উকিল আলামিনের পরামর্শে আমাদের নামে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। একটা মামলা আদালতে মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় খারিজ হয়েছে। আব্দুল আলীকে বাদী করিয়ে আমার নামে একটি মামলা করিয়েছে, অথচ আব্দুল আলীর সাথে আমার পূর্বের কোন ঝামেলা ছিলনা। আমি শুনেছি আব্দুল আলী খলিলের নিকট থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে আমার বিরোদ্ধে লেগেছে। বিভিন্ন অপরিচিত লোককে বাদী বানিয়ে আমাকে সহ আমার কাজের পার্টনারদের নামে বিভিন্ন জেলায় মামলা দিচ্ছে। যেখানে মামলার ঘটনা গুলো সম্পুন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। দেখা যায় মামলা গুলোর বাদী বিবাদী কেউ কাউকে চিনেনা এবং সব মামলার স্বাক্ষী গুলো আব্দুল আলী সহ তার সিন্ডিকেটের লোকজন।
এলাকাবাসী আরো জানায়, আব্দুল আলী মাষ্টার এলাকায় একজন কুখ্যাত মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। মানুষকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার প্রধান কাজ। স্কুলের উন্নয়নের আসা বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ ও নারী কেলেংকারী সহ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়ার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি এলাকাবাসীর দাবী আব্দুল আলীর মতো গিরিঙ্গিবাজ মহাপ্রতারককে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিলে সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।
বিশেষ ঘোষনাঃ- প্রিয় পাঠক, আব্দুল আলী মাষ্টার সিন্ডিকেটের দ্বারা আপনারা যদি কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। অপরাধ বিচিত্রা. মর্ডান ম্যানশন, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০। মোবাইল-০১৯১১৩৮৫৯০৭, ০১৭১৬২০৭৯৩২।সুনামগঞ্জের গিরিঙ্গিবাজ আব্দুল আলী মাষ্টারের মিথ্যা মামলার ফাঁেদ নিঃস্ব এলাকাবাসী

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − eight =