ভূমি অধিগ্রহণ মানেই মরণফাঁদ ঘুষ ছাড়া মিলছে না ক্ষতিপূরণের টাকা

0
1052

ভূমি অধিগ্রহণের শিকার হয়ে অসংখ্য লোক অবর্ণনীয় হয়রানির কবলে পড়ছেন। তাদের অভিযোগ ও অর্তনাদ প্রশাসনের কাছে কিছুতেই পৌঁছে না। যাদের ভূমি অধিগ্রহন করা হয়েছে তারা বাহারি সব জটিলতা, জালিয়াতি ও হয়রানির কারনে যুগ যুগ ঘুড়েও জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে ক্ষতিপুরণের টাকা বুঝে পাচ্ছেন না। বরং ভূমি অধিগ্রহণ শাখাটি তাদের জন্য এক আতঙ্কের নাম। ঘুষ, আপত্তিকর আচরন ও হুমকি ধমকির তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে শাখাটি থেকে বাড়ি ফেরত আসতে হয়। ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাকায় একই চিত্র বিরাজ করছে। নিরীহ ভূমি মালিকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে ৩০-৫০ শতাংশ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বিশাল এ ঘুষের টাকা না দিলে ক্ষতিপূরণের টাকা কবে পাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

এতবড় অপরাধের প্রতিবাদ করতে গেলে প্রতিবাদির ওপর নেমে আসে বিপদের পর বিপদ। গণমাধ্যমে প্রকাশ কিছুদিন আগে ঢাকার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমানের অসদাচরনের কারনে প্রবীণ রাজনীতিক আস ম শাহজাহানকে জীবন দিতে হয়েছে। বছরের পর বছর ঘুড়েও তিনি হাতিরঝিল প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত তাঁর ওয়ারিশান সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ পাচ্ছিলেন না। একটি জমির মালিকানা কয়েকবার পরিবর্তন হতে পারে। তবে সর্বশেষ দলিলগ্রহীতা, নামজারি ও দাখিলা প্রদানারীই হলেন জমির প্রকৃত মালিক। তাকে নোটিশ করলেই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সহজ হয়ে যায়। কিন্তু অধিীগ্রহণ অফিস থেকে বিভিন্ন রেকর্ডীয় মালিকদের কাছে নোটিশ পাঠিয়ে বিষয়টি জটিল করে তোলা হয়। নোটিশ পেয়ে প্রকৃত মালিক না হয়েও অনেকে টাকার লোভে একে অন্যের বিরুদ্ধে আপত্তি দায়ের করে। এসব আপত্তি নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় শুরু হয় ঘুষের অধ্যায়। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের অফিসের কর্মকর্তাগণ গণমাধ্যমের নিকট অভিযোগের সূরে বলেন যে, এতটাই খোলামেলা ও নোংরাভাবে ঘুষ আদায় হয় যা দেখতেও রুচির ওপর আঘাত লাগে। ভুমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে ভুয়া অভিযোগ দাঁড় করিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা বছরের পর বছর আটকিয়ে রাখা হয়। এসব ভুয়া অভিযোগ দাঁড় করানোর জন্য দালাল চক্রও সৃষ্টি করা হয়। প্রতিটি জেলা প্রশাসনের এল এ শাখা থেকে ঘুষ দুর্নীতি, জালিয়াতি ও হয়রানি নির্মূলের সব রকমের ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে উদ্ধার করতে হবে। একই সাথে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা বন্ধ হবে না এ মরণফাঁদ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × five =