জাপানের হাউজ অফ কাউন্সিলরের সাথে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক টেক্সটাইল খাতে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় জাপান

0
543

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জাপানের টেক্সটাইল সেক্টরে বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় জাপান। জাপান বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। জাপান বাংলাদেশকে অস্ত্র ও হ্যান্ডস গ্লোব ছাড়া সকল পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করেছে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার পরও জাপান বাংলাদেশকে চলমান বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে বাংলাদেশ জাপানে রপ্তানি করেছে ১,০১২.৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমাদনি করেছে ১,৮৩৩.৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। এখন জাপান বাংলাদেশের ৮ম বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে এ বাণিজ্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাঁড়াবে। উভয় দেশ এ জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

জাপানের বাজারে বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের বেশ চাহিদা রয়েছে। এখন প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরী পোশাক জাপানে রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন এ চাহিদা বাড়ছে। এ মহুর্তে বাংলাদেশে জাপানের ৩১২টি কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে, এখানে প্রায় ৪২ হাজার জনবল কাজ করছে। জাপানের বিনিয়োগ প্রায় ১,৪৬৭.২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনের যে কোন স্থানে জাপানী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহবান জানানো হয়েছে। জাপানের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী দল কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশ সফর করবে। বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে সফররত জাপানের House of Councillor এর সদস্য(এমপি) Mr. Hiroshi Yamada এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত এর সাথে মতবিনিময়ের সময় এ সব কথা বলেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনবার জাপান সফর করেছেন। জাপান বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীক ও অর্থনৈতিক অংশীদার। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে জাপান। স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে ১৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতের ৪০টি প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এ জন্য বাংলাদেশ জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞ। ২০১৪ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। অতিসম্প্রতি জাপান সফর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিনিযোগ পলিচি, সস্তা ও দক্ষ জনশক্তি এবং বিনিয়োগের পরিবেশ জাপানী বিনিয়োগকারীদের কাছে খুবই আকর্ষনীয় মনে হয়েছে। জাপানের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশ ষফর করে বিনিয়োগের খাতগুলো চিহ্যিত করবেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ^বাণিজ্য সংস্থার উদ্যোগে “ওয়াল্ড এক্সপো-২০২৫” আয়োজনের জন্য রাশিয়া, জাপান ও আজারবাইজান প্রার্থী হয়েছে। জাপান বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছে। এ বিষয়ে যথাসময়ে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। জাপানের পর্যবেক্ষণে বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ ভালো, কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। এখন জাপান সরকার জাপানী নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমনের উপর থেকে বিদ্যমান লেভেল-২ ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাপানের House of Councillor এর সদস্য(এমপি) Mr. Hiroshi Yamada বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হচ্ছে জেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবার পরও জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশ জাপানের বন্ধু রাষ্ট্র। জাপানের বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের সাথে জাপান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি করবে। ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি (Hiroyasu Izumi) এবং বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 + one =