পুলিশ বলে কথা!

0
545

স্বেচ্ছাসেবীকে এভাবেই ধাক্কা দিয়ে নিয়ম না মেনে রাস্তা পার হচ্ছেন পুলিশ সদস্য। পুলিশ কনস্টেবল ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী তার পথরোধ করে দাড়ালেন। তাকে অনেক অনুরোধ করেন ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এ সময় অনেকটা গরম দেখান ওই কনস্টেবল।

পারলে স্বেচ্ছাসেবীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পার হয়ে যান। অবশেষে ক্ষান্ত দেন স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদার। আর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হয়ে যান পোশাক পরিহিত পুলিশ। এমন কান্ড দেখে পথচারী ও বাসযাত্রীরা ছিঃ! ছিঃ! করছিলেন। একজন তো বলেই বসলেন, আগে পুলিশকে ঠিক হতে হবে। না হলে মানুষ তাদের কথা শুনবে কেন? এদের মতো কিছু লোকের কারণে পুলিশের দুনার্ম হচ্ছে। তখন দুপুর ঠিক ১২টা। বাংলামোটর মোড়ে তপ্ত রোদে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদারের কপালে। তার কাছে প্রশ্ন করা হয়, পুলিশের আচরণ কেমন ছিল, মলিন মুখে বললেন, ‘তিনি আমার কথা শুনতেই চাইলেন না। আমার কথা শুনলে হয়তো তার ভাবান্তর হতো।’ পুলিশ কথা না মানলেও অন্যান্য পথচারীরা কিন্তু ঠিকই বাধা পেয়ে ঘুরে গিয়ে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। তবে সুযোগ পেলেই লোকজনকে দৌড় দিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে, একই এলাকার রূপায়ন টাওয়ারের সামনে জেব্রা ক্রসিংয়ে এলোমেলোভাবে পার হওয়া লোকজনকে ঠেকাতে গলদঘমর্ পুলিশ ও কিশোর মজুমদারের সহকমীর্রা। সেখানে এক অভিনব শাস্তি দিতেও দেখা গেল নিয়ম না মেনে রাস্তা পার হওয়া হাসান নামে এক কনস্টেবলকে। ‘শাস্তি’ হিসেবে এ সময় স্বেচ্ছাসেবীরা তাকে ক্রসিং দিয়ে ঘুরে আবার রাস্তার ওপারে যাওয়ার কথা বলেন। এরপর নিয়ম মেনে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হন কনস্টেবল হাসান।
মিনিট বিশেক দাড়ালে পথচারীদের চলাচল দেখলে অবাক হতে হয়। ৮০ ভাগ লোকেই নিয়ম মানতে চান না। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা লাটিমের মতো বনবন করে ঘুরছেন! আবার বাসগুলোও নিধাির্রত স্টপেজে দাড়াতে চায় না। কারওয়ান বাজারমুখী রাস্তায় বাসগুলো সিগন্যাল ঘেঁষে পথরোধ করে দঁাড়াচ্ছে। অথচ ৫০ গজ দূরে নাভানা জোহরা টাওয়ার পার হয়ে শোভা পাচ্ছে বাস স্টপেজ শুরু লেখা সাইনবোডর্। সেখানে একটি বাসও দাড়াতে দেখা গেল না। স্বেচ্ছাসেবীদের বাশি গায়েই নিচ্ছে না। ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস তো ঠিক মোড়ের ওপর রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী তুলে তবেই চলে গেল। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আব্দুর রহমানের কাছে প্রশ্ন ছিল, কোনো বাসই তো স্টপেজে দঁাড়াচ্ছে না? এ সময় তিনি বলেন, ধরে ধরে ‘বাটাম’ দিতে হবে। না হলে কাজ হবে না। স্বেচ্ছাসেবী কিশোর মজুমদার বললেন, ‘আমার মনে হয়, সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এজন্য ক্যাম্পেইন বাড়ানো দরকার। রেডক্রিসেন্ট থেকে বাংলামোটর, রূপসীবাংলা মোড় ও শাহবাগে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকেই কথা মানছে, আর অল্পসংখ্যক লোক মানতে চাচ্ছে না।’

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − two =