কে হবে একাদ্বশ জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী ০৩ এ, দশমিনা- গলাচিপার অভিভাবক? কি বলছেন এ আসনের ভোটাররা?

0
1172

দশমিনা প্রতিনিধিঃ ১১৩,পটুয়াখালী-৩ দশমিনা-গলাচিপা সংসদীয় আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এ আসনে সংসদ সদস্য হিসাবে সামরিক শাসন ও ১৫ জানুয়ারীর বিএনপি’র বিতর্কিত নির্বাচন ছাড়া, সব কটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। বর্তমান সাংসদের একঘেয়েমীর কারনে আওয়ামী দুর্গে গ্রুপিং সৃষ্টি হওয়ার ফলে দলটি বেশ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পরেছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও প্রবীন নেতারা। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে আওয়মী লীগ কোন রকম ভুল সিদ্ধান্ত নিলে এবং বিএনপি যদি এলাকার ত্যাগী তরুন নেতাকে মনোনয়ন প্রদান করেন, তাহলে এ ফাঁককে কাজে লাগিয়ে আওয়মী দুর্গে আঘাত হানতে প্রস্তুত বিএনপি।

আর এরকমই হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই উপজেলার অনেক প্রবীন নেতা – কর্মী ও সমর্থরা। তা হলে আগামী নির্বাচনে কে হচ্ছেন এ দু’ উপজেলার কান্ডারী ? এ নিয়ে দু’উপজেলায় রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।অনেক আগে থেকেই দৌড় ঝাপ শুরু হয়ে গেছে টপ টু বটম পর্যন্ত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সভা-সমাবেশসহ দলগুলোর বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী এলাকায় সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগ। পাশা পাশি বিএনপিও রয়েছেন সুযোগের অপেক্ষায়। দেখাগেছে দশমিনা গলাচিপা উপজেলায় জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনায়ন প্রত্যাশীরা পোষ্টার,ব্যানার ও ফেষ্টুন টানিয়ে জনসাধারণকে জানান দিচ্ছেন। এবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন, এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র প্রতি মন্ত্রী আলহাজ্ব আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন। তবে বার্ধাক্যজনিত কারনে আগামী একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় টিকেট না পাওয়াটাই মনে করছেন দলের অনেক নেতা কর্মী। তাদের দাবী এখনই তরুন ও ত্যাগী নেতাদের সুযোগ না দিলে, ভবিষ্যতে দলের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই পরিবর্তনের আভাসও পাওয়া যাচ্ছে,অনেক পূর্ব থেকেই। সে ক্ষেত্রে দেখা গেছে,মাইনাচ টু ফরমুলার দরুন আ,খ,ম জাহাঙ্গীর দলের নমিনেশন থেকে ছিটকে পড়লে, দলের সংকটময় মুহুর্তে দলের হাল ধরেন তরুন উদীয়মান নেতা এ্যাড, ইকবাল মাহামুদ লিটন। তাই দলীয় প্রার্থীকে লিটনের নেতৃত্বে ও  প্রচেস্টায় দলের একেবারে নতুন মুখ প্রার্থী গোলাম মাওলা রনীকে প্রায় ৭০হাজার ভোটের ব্যাবধানে এমপি নির্বাচিত করারমত দুঃসাহস তিনি ই দেখিয়ে ছিলেন,তিনি হচ্ছে দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য,সাবেক ছাত্র ও যুব নেতা এ্যাড,ইকবাল মাহামুদ লিটন।এমনটাই দাবী করেন লিটন ভক্ত ও অনুসারীরা। আর সেই থেকেই হয়ে ওঠেন এলাকায় কর্মী বান্ধব নেতা হয়ে। তাই তিনি নিজেই মনোনয়ন চেয়ে প্রায় দু’ বছর ধরে দশমিনা-গলাচিপায় ব্যাপক গন সংযোগ করে ত্যাগী নেতা কর্মীদের চাঙ্গা করে রেখেছেন। এ্যাড, লিটন গলাচিপার উলানিয়া, বাজার, পানপট্টি, চরকাজল,গোলখালী, পাতাবুনিয়া, রনুয়া বাজার, কলাগাছিয়াসহ সংশ্লিস্ট এলাকা,দশমিনার রনগোপালদী,আউলিয়াপুর,পাতারচর চরঘুনী, চরবোরহান ,চরশাহজালাল,চরহাদী,আরজবেগী,যৌতা বাজার,আলীপুরা,পশ্চিম আলীপুরা,চাদপুরা বাজার,খলিসাখালী, গোপালদী,বেতাগী সানকিপুর,জমির মৃধা,বহরমপুর,আমতলা বাজার, নেহালগঞ্জ,মোল্লার হাট,বাঁশবাড়ীয়া,গছানী বাজার,হাজীর হাট, গোলাখালী,কাটাখালী,আরজবেগী বাজার,লক্ষীপুরসহ উপজেলার জনগুরুত্বপুর্ন স্থান সমুহে মটর সাইকেল ও প্রাইভেট কারের বহরে নিয়ে ওই সব এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করেনন এবং দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন। এসময় এ্যাড,লিটন এবং দলীয় নেতা- কর্মীরা বলেন,আমি আপনাদের কাছে আসছি নৌকার গণসংযোগ করার জন্য। ইনশাল্লাহ আপনাদের দোয়া ও আশির্বাদে আমি নৌকা প্রতিক পেলে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয় লাভ করবো।সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। মনোনয়ন প্রত্যাসীদের সারিতে আরো রয়েছেন, দশমিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন শওকাত, তবে এলকায় তার অবস্থানও রয়েছে নড়বরে।নাই তার কোন রকম সাংগঠনিক তৎপরতা বা কর্মকান্ড। এ তালিকায় আরো রয়েছেন ১০ ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মনোনয়ন চেয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের (ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটি) সদস্য মোঃ হিরন আহমেদ। যুবলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক কামরান প্রিন্স মহাব্বাত শহিদ,ঢাকা মহানগন দক্ষিণ আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. ফোরকান মিয়া, পটুয়াখালী জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) কাজী আলমগীর হোসেন, দশমিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ আজিজ, রয়েছেন গোলাম মাওলা রনিও। এদিকে একরকম হঠাৎ করেই সিইসি’র ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে এস এম শাহজাদা সাজু বেশ কিছু দিন ধরে আওয়ামীলী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাসী বলে দাবী করছেন।চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারনা। তবে সরেজমিনে তার দলীয় কোন পরিচয় পাওয়া যায় নাই। মনোয়ন পাওয়ার বিষয়ে তারা সকলেই নিজেদের শক্ত অবস্থানের কথা দাবি করছেন। এক্ষেত্রে সরেজমিন,দেখা গেছে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এ্যাডভোকেট লিটন সব থকে এগিয়ে রয়েছে বলেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ। কারন হিসেবে এলাকার ত্যাগী নেতা কর্মীরা মনে করেন, লিটন দুই উপজেলায় একজন কর্মী বান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিত। অপর দিকে এ আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপির সম্ভাব্য মনোনায়ন প্রত্যাশী তিন জনের নাম বেশ জোরে শোরে ই আলোচনায় আসছে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান আল মামুন, সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা। এই তিনজনই এলাকায় দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিজের দলীয় মনোনয়নের পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করছেন তারা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার দিক থেকে এই তিন জনই এগিয়ে রয়েছে। হাসান মামুন ছাত্র রাজনীতি থেকে অবসর নেয়র পর বিএপি’র রাজনীতিতে গত ৭ বছর যাবৎ তিনি সক্রিয় রয়েছেন। হাসান মামুন গলাচিপা ও দশমিনার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষিত যুবকের কর্মসংস্থানেও বেশ অবদান রাখায় এর প্রভাব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাখবে বলে দলের অনকে নেতা প্রকাশ আশা করছেন। তবে শাহজাহান খান তৃনমুলে ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত।তবে আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা দীর্ঘ বৃছর ধরে দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গবদ্ধ করে ধরে রাখার দরুন,দলীয় উপজেলা কমিটিও এখন তারই দখলে।এমর্মে দশমিনা উপজেলা  বিএনপির সভাপতি আঃ আলীম তালুকদার,সাধারন সম্পাদক প্রভাষক মোঃ আমিনুল হক,যুবদলের সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,সাধারন সম্পাদক খান শামীম, মোঃ মশিউর রহমান মাস্টার বলেন,দল  নীতি,আদর্শ ও দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত ত্যগী নেতা হিসেবে যদি আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফাকে মনোনয়ন প্রদান করেন,এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হয়,তবে আমাদের নেতা বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয় লাভ করবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 − 3 =