হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি!

10
1044

ইয়াকুব নবী ইমন:
নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে হাতি দিয়ে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাতি দিয়ে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ শহর, বন্দর, গ্রাম গঞ্জের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ। হয়রানি থেকে হাতির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা। অভিযোগে জানা গেছে, এক শ্রেনীর ধান্দাবাজা-প্রতারকচক্র পাহাড়ী কোন হাতির মালিককে ভাড়া করে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ন শহরে ঘুরে বেড়ায়। চালায় দেদারছে চাঁদাবাজি। এ সময় তারা ব্যবসায়ীদের অনেকটা জিম্মি করে ১০, ২০, ৫০, ১০০ টাকা থেকে শুরু করে মোটা অংকের আদায় করে। টাকা দিতে না চাইলে হাতির শুড় দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল নষ্ট করার চেষ্টা করে।

তাদের অত্যাচারে জেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্নচর, কবিরহাট, হাতিয়া, সেনবাগ, চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলা সদরসহ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীর সাধারণ ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। অনেক সময় তারা পথচারিদের পথরোধ করেও টাকা আদায় করে। শুধু তাই নয়, বড়-শড় একটি হাতি প্রধান সড়কের মাঝে দাঁড় করিয়ে রেখে যানবাহন থেকেও চাঁদাবাজি করা হয়। এতে অনেক সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে দূর্ভোগের শিকার হয় সাধারণ মানুষ । তাছাড়া এসব হাতি এলোপাথাড়ি ভাবে সাধারণ মানুষের কলাগাছসহ বিভিন্ন গাছ খেয়ে ফেলে। এতে কিছুই কারার থাকেনা গাছের মালিকদের। জেলা শহর মাইজদী হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী রহিম বক্স অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা ভাব বিরাজ করছে। অনেক সময় দোকানে সারা দিন বিক্রিই হয়না। সন্ধার সময় হাতি এসে হাজির। টাকা দিতেই হবে, না দিলে শুড় দিয়ে দোকানের মালামাল ক্ষতিসহ নানা ভাবে নাজেহাল হতে হয়। এ বিষয়ে জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে জানালেও কোন লাভ হয়না। একই কথা জানালেন চৌমুহনীর কমিরপুর রোর্ডে সমবায় মার্কেটের ইলেট্রনিক্স ব্যবসায়ী হাসমত উল্যাহ ও পূর্ব বাজারের রড়-সিমেন্ট ব্যবসায়ী ফোরকান আলী। নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ জানান, হাতি নিয়ে কেউ টাকার জন্য আসলে না দিলেই হলো। এ বিষয়ে অনেকে মৌখিক ভাবে আমাদের জানালেও লিখিত ভাবে কেউ জানাচ্ছেনা। ফলে আমরা ইচ্ছা থাকা শর্তেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। এ ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তম্ময় দাস বলেন, মাঝে মধ্যে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। কিন্তু আমাদের প্রশাসনিক লোকজন চাঁদাবাজির স্থলে যাওয়ার আগেই প্রতারকরা হাতি নিয়ে সটকে পড়ে। ফলে তাদের হাতে নাতে ধরা যায়না। তবে চাঁদাবাজি কালে হাতিসহ তাদের ধরতে পারলে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × 5 =