দুই পরিবারের দাবি একটাই

0
563

সিডরে নিখোঁজ হওয়ার ১১বছর পর ফিরে আসা ব্যক্তি শহিদুল মোল্লা না জুয়েল সরদার এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

 

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও ছবি দেখে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে বাগেরহাটের শরণখোলায় আসা একটি পরিবার দাবি করছে, এ হলো ৮-৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া তাদের জুয়েল। বর্তমানে দুই পরিবারের মধ্যে ‘তাকে’ নিয়ে টানাটানি চলছে। কে এই ব্যক্তি তা প্রমাণের জন্য বিষয়টি শেষমেষ আদালত পর্যন্ত গড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিখোঁজ হয় শরণখোলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের ফুলমিয়া মোল্লার ছেলে শহিদুল মোল্লা। কিন্ত সেই সিডরের ১১ বছর পর গত ১২ নভেম্বর অবিকল শহিদুলের মতো দেখতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে খুঁজে পায় তার পরিবার। তারা হারিয়ে যাওয়া শহিদুলের শারীরিক গঠন, চেহারা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা দাগসহ নানা দিক দিয়েই মিল খুঁজে পান ওই ব্যক্তির মধ্যে। মা, ভাই-বোন এমনকি সন্তানরাও নিশ্চিৎ হন যে ঐ ব্যক্তিই তাদের হারিয়ে যাওয়া স্বজন। কিন্ত পত্রিকায় ছবি দেখে হঠাৎ করে গতকাল মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার যশলদিয়া গ্রাম থেকে একটি পরিবার শরণখোলায় ছুটে এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হন। তখন কথিত শহিদুল উপজেলার তালতলী গ্রামে তার বোন মঞ্জু বেগমে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাত ৮টার দিকে তাদেরকে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তির মুখোমুখি করা হলে স্ত্রী হাসি বেগম, ছেলে শামীম সরদার, বাবা আমীন সরদার, ভাইপো সামাদ সরদার, চাচাতো ভাই স্বপন সরদার শহিদুল নামের ওই ব্যক্তিকে দেখেই এইতো তাদের হারিয়ে যাওয়া জুয়েল বলে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনও ওই বাড়িতে ছুটে আসেন। উভয় পক্ষই দাবি করেন তাদের হারানো স্বজন বলে। লৌহজং থেকে আসা হাসি বেগম বলেন, এই-ই হলো আমার হারিয়ে যাওয়া স্বামী জুয়েল। বাবা আমীন সরদার বলেন, এই আমার ছেলে তাতে কোনো ভুল নেই। ছেলে শামীমও তার বাবা বলে নিশ্চিৎ হন। তারা বলেন, জুয়েল ৮-৯ বছর আগে মাথা খারাপ অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। তাদের স্বজনকে ফিরে পেতে আদালতের আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন তারা। অপরদিকে কথিত শহিদুলের মা ময়মননেছা বিবি তার সন্তান বলে দাবি করছেন। আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামবাসীও বলছে এ সিডরে হারিয়ে যাওয়া শহিদুল। তারা তাদের ফিরে পাওয়া স্বজনকে আর হারাতে চান না। ওই রাতে লৌহজং থেকে আসা পরিবারটি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালে তাদেরকে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার সরকার বলেন, যেহেতু একই ব্যক্তিকে দুই পরিবারই তাদের বলে দাবি করছে, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। একমাত্র আদলতই এর সমাধান দিতে পারবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 4 =