মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে শাহ আলমের প্রতারনা

0
1149

স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানীর সচিবালয়ের সামনে মন্ত্রীদের স্বাক্ষর নকল করে বিভিন্ন জনগনের সুপারিশ পত্র বানিয়ে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক শাহ আলম। সচিবালয়ের সামনের ৯৪ টয়েনবি সার্কুলার রোড বাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয়ে অফিস নিয়ে প্রতি দিন দুরদরান্ত থেকে আসা মানুষদের আবেদন পত্রে মন্ত্রীর সুপারিশ এনে দেয়ার নাম করে এই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি।

 

জানা গেছে, শাহ আলমের প্রতারনার অফিস বাটা গ্রুপ। এই অফিসে বসেই চলছে তার প্রতারনা। দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন সচিবালয়ে আসে সেবা পাওয়ার জন্য। কেউ চাকুরীর জন্য, কেউ টেন্ডার কাজের জন্য আবার কেউবা তাদের কর্মক্ষেত্রের সুবিধা অসুবিধা নিরসনের জন্য। এদের বেশীর ভাগ লোকেরই তাদের আবেদন পত্রে কোন মন্ত্রী এমপির সুপারিশ গ্রহনে প্রয়োজন পড়ে। অনেক সময় সাধারন জনগনের মন্ত্রী এমপির সাথে সরাসরি সংযোগ থাকেনা। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগায় শাহ আলম। এক একটি সুপারিশ এনে দেয়ার জন্য মক্কেলের নিকট নুন্যতম ৩০ হাজার থেকে লাখ টাকার উপরে পর্যন্ত চুক্তি করে শাহ আলম। চুক্তি অনুসারে শাহ আল ঐ লোকের আবেদন পত্র নিয়ে নিজের বানানো স্টাম্প সিল ব্যবহার করে তাতে মন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে মক্কেলকে প্রদান করে। সুপারিশপত্রটি ভুয়া হওয়ায় মক্কেলের কোন কাজে লাগে না।
ভ’ক্তভ’গি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার ৫৪ নং বেতডোবা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিউলি আক্তার জানান, সে বিশেষ বিবেচনায় শূন্য পদে বদলী হওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের সচিব বরাবর করেন। কিন্তু তাতে একজন মন্ত্রীর সুপারিশ প্রয়োজন হওয়া দালালের মাধ্যমে শাহ আলমের সাথে পরিচয় ঘটে। শাহ আলম ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে মন্ত্রীর সুপারিশ এনে দিতে পারবে বলে রাজি হয় । চুক্তি অনুসারে টাকা ও দরখাস্ত নিয়ে নেয় এবং তিন দিন সময় বেঁধে দেয়। তিন দিন পরে শিউলি আসলে সাবেক অর্থ মন্ত্রণালল ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপির সুপারিশ সংবলিত সুপারিশ পত্র ফেরত দেয়। যা ছিলো পুরোপুরিই ভুয়া ও বানোয়াট। ঐ সুপারিশ শিউলির কোন কাজে আসে নাই।
একই ভাবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাষ্টে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরীর নিয়োগ পত্রে সুপারিশের জন্য দিনাজপুরের রহিম মোল্লার কাছ থেকে ৪০ হাজার হাতিয়ে নেয়। এখানেও সে প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে।
শরিয়তপুরের আরিফ শেখকে ২০১৮/২০১৯ অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন বিশেষ (টি আর) কর্মসুচীর আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের আবেদন প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে সুপারিশ বানিয়ে দিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। যা মন্ত্রীর অজানা।
পিরোজপুরের দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চান মিয়ার টিআর প্রকল্পের (চাল/ টাকা) বরাদ্দের আবদন পত্রেও প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে সুপারিশ পত্র বানিয়ে দিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় শাহ আলম। ভুয়া স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহারের কারনে ঐ সুপারিশ চেয়ারম্যান চান মিয়ার কোন কাজে লাগেনি।
সোনারগাও উপজেলার এক মহিলাকে কু-প্রস্তাব দিলে সে রাজি না হওয়া তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় প্রতারক শাহ আলম। এব ঘটনায় ঐ মহিলা সোনারগা থানায় জিডি করে। জিডি নং-১১৪৫/৩১/১২/২০১৮।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × five =