গরিব বলে কি আমার মেয়ের হত্যার বিচার পামু না? আমার দুধের শিশুরে মাইরা ফেলসে নাহিদ। আমার মাইয়াটা হাটতেও পারতো না, তারে মাইরা ফেলসে।
আমি এই হত্যার বিচার চাই – এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন শিশু আয়শার মা। পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে দুই বছরের শিশু আয়শা হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে শিশুটির পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার এই মানববন্ধনের ছবি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে ঝড়। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরণের বিদ্বেষপূর্ণ মতামত জানাচ্ছেন। ফেসবুকে ছবি শেয়ার করে মডেল প্রিয়তা বলেন, যদি পারতাম এই নাহিদ শুয়োরের বাচ্চার এক পায়ে পাড়া দিয়ে আরেক পা টান দিয়ে ছিড়ে ফেলতে। তাও মনে হয় কম হবে। একটা দেশে একটার পর একটা এমন ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আর লাফাতে থাকে ডিজিটাল উন্নয়ন দিয়ে, যেই টেকনোলজি দিয়ে একটা ক্রিমিনাল কে ধরতে পারে না?দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন ইনচার্য এনামুল মনি ফেসবুকে লিখেন, ফেসবুকে পেলাম। ঘটনাটি এড়িয়ে যাবার মতো নয়। সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাই। ইংরেজি জাতীয় দৈনিক দি বাংলাদেশ টুডের অনলাইন ইনচার্জ ডাঃ আলিম আল রাজী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাই ধর্ষকের। প্রসঙ্গত, দীননাথ সেন রোডের ৫৩/১/ছ নম্বর চারতলা বাড়ির পাশে টিনশেড বস্তিতে মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে থাকত শিশু আয়েশা। প্রতিদিন সকালে তার মা-বাবা কাজে যান। গেন্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনে গলিতে খেলে বেড়াত শিশুটি। অন্যান্য দিনের মতো ৫ জানুয়ারি বিকেলে খেলতে বের হয় সে। সন্ধ্যার দিকে চারতলা ভবনের সামনে আয়েশার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি আয়েশার বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ৭ জানুয়ারি দুপুরে গেন্ডারিয়া থানা ঘেরাও করে। পরে বিকেলে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গেন্ডারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ আসামি নাহিদকে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি নাহিদ জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আয়েশার মামা মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, আয়েশাকে ধর্ষণ করে হত্যা করেন নাহিদ। তিনি ভবনের তিনতলায় থাকেন। আয়েশা বিকালে যখন খেলছিল, তখন তাকে খিচুড়ি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান নাহিদ। সেখানেই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ফ্ল্যাটের খোলা বারান্দা থেকে আয়েশাকে নিচে ফেলে দেন নাহিদ। এ সময় আয়েশার চিৎকার আশপাশের লোকজনও শোনে। আয়েশাকে নিচে ফেলার শব্দ বাড়ির পাশের মাঠ থেকে কয়েকজন যুবক শুনতে পান। এলাকার লোকজন এসে আয়েশাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়।