গোবিন্দাসীর মদিনা বেকারী ও মাটিকাটা মুক্তা ফুড বেপারিজ এর ভেজাল পণ্য উৎপাদনের অভিযোগ

6
973

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ- টাঙ্গাইল ভূয়াপুরের গোবিন্দাসী মদিনা বেকারীতে ও মাটিকাটা মুক্তা ফুড বেপারিজ এ তৈরীকৃত ভেজাল পণ্যে বাজার সয়লাব হওয়ায় খবর পাওয়া গেছে।

 

জানা গেছে মাটিকাটা মুক্তা ফুড বেপারিজের মালিক স্বর্গীয় প্রবাস মাষ্টার মারা যাওয়ার পর অনীল ও সুনীল নামে দুই ভাই নিম্নমানের জুস, নিম্নমানের কয়েল, তেতুলের চাঁটনি ও নানাবিধ আঁচারসহ বিভিন্ন আইটেমের চিপস্ ও চানাচুর তৈরী করছে কাগজপত্র ছাড়াই। এগুলো বাজারে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নামে বাজারজাত করছে বলে জানাগেছে। এদের তৈরিকৃত পণ্য মাটিকাটা বাজারে ১৫ থেকে ১৭ টি গোডাউনে রেখে মেয়াদ উর্ত্তীণ তারিখ ছাড়াই বাজারজাত করছে। এদিকে মদিনা বেকারীতে নিম্নমানের পন্য তৈরির অভিযোগ উঠলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে তার ব্যবসা। নিম্নমানের ওই বেকারীর পণ্য খেয়ে মানুষ নানাবিধ রোগ ব্যাধিতে ভোগছে। এসকল বেকারী পণ্য খেয়ে মানুষ স্বাস্থ্য হীনতায় ভুগলেও কর্তৃপক্ষের নেই কোন নজরদারী ও তদারকি। ওই বেকারীর পন্য জেলার ১২ টি উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলা জামালপুর ও শেরপুর জেলাতেও এ সকল তৈরীকৃত বেকারী পণ্য বাজারজাত করছে বেকারী মালিক মোঃ আরিফুল ইসলাম বাবু। ছোট বড় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি বাজার দখল করে নিয়েছেন তিনি। এ সকল নিম্নমানের উৎপাদনকারী বেকারী পণ্য কিনে ক্রেতারা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে জন্য মদিনা বেকারীর বন্ধের দাবি জানিয়েছেন গোবিন্দাসী এলাকার অনেকেই।
জানা যায়, নিম্নমানের ছেকারিন ও বিষাক্ত রং কেমিক্যাল মিশ্রিত বেকারী পণ্যগুলো খেয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্র/ছাত্রীসহ নিম্ন আয়ের লোকজন নানা রোগ ব্যাধিতে ভুগছে। নিম্ন আয়ের লোকজন চায়ের দোকানে এসব বেকারী পণ্য খেয়ে নানা সমস্যায় ভুগলেও জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লোকজন কোন আইনগতঃ ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। সরকারী নির্ধারিত মান রক্ষা না করে বেকারী ফ্যাক্টরীতে দুর্গন্ধ ও পরিত্যক্ত পরিবেশে বিস্কুট, পাউরুটি, নিম্নমানের চিপস্, মিষ্টি জাতীয় বিস্কুট কেকসহ অন্যান্য খাবার তৈরীতে নিয়ম বিধি মানছেন না বেকারী মালিক বাবু। উপজেলা সেনেটারী ইনপেক্টরের তদারকি ও যথাযথ নয়। এদের নেই কোন বিএসটিআই ও বিডিএস সনদ। তাও এরা খাদ্য পণ্যগুলো প্রশাসনের সামনেই তৈরি করছে এবং ঐ সকল ভেজাল পণ্য বাজারজাত করছে নিবিঘ্নে। স্থানীয় এলাকার মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, মদিনা বেকারীর তৈরীকৃত নিম্নমানের খাবারে বাজার সয়লাভ হলেও স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকা ভোক্তা আমি বেশ কয়েকদিন আগে ঐ মদিনা বেকারী বিষাক্ত রং, কেমিক্যাল ও ছেকারিন মিশ্রিত মেয়াদ উর্ত্তীণ বিস্কুট ও চানাচুর খেয়ে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসায় আমার অনেক টাকা চলে গেছে। এ সকল লাইন্সেস বিহীন, বিএসটিআই, ভ্যাট ইনকাম ট্যাক্স ফাঁকি বাজি প্রতিষ্ঠান মালিকের বিরুদ্ধে আইনগতঃ ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া উচিত। অনুমোদন বিহীন অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বেকারী ফ্যাক্টরীর মধ্যে কাজ করছে অনেক শিশু শ্রমিক, যাদের নেই কোন সেনেটারী লাইন্সেস ও কর্মচারীদের ফিটনেস সার্টিফিকেট। খাবার তৈরিতে স্বাস্থ্যকর উপকরণের পরিবর্তে মিশানো হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষতিকারক রং কেমিক্যাল বিস্কুট, কেক, পাউরুটি তৈরীর ময়দা ও নিম্নমানের চিনি, গুর, লবণ ব্যবহার উপকরণ ডিমের খোসা, পোড়া তৈল মেঝেতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মেয়াদ উর্ত্তীণ বেকারী পণ্যেগুলো বাজার থেকে সংগ্রহ করেও ফ্যাক্টরীর ভেতরে স্তূপাকার করে রাখা আছে। মশা-মাছি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পরিবেশ দুর্গন্ধ হলেও ফ্যাক্টরীর মালিক বাবু ঐ খানেই বসেই মহিলা শ্রমিক ও শিশু শ্রমিকদের কাজেই তদারকি করছে। নানা আর্কষণীয় নামে ও বড় বড় বাজার দখল করা কোম্পানীর মোড়ক ব্যবহার করে তার নিম্নমানের বেকারী পণ্যগুলো বাজারজাত করতে দেখা গেছে। তার নিম্নমানের তৈরীকৃত বেকারী পন্য খেয়ে অনেকেই পেটে পিরায় ভুগচ্ছে। বিষাক্ত কেমিক্যাল ও রং খেয়ে মানুষের লিভার অকালে নষ্ট হচ্ছে এবং চোখের আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, মদিনা বেকারীতে কোন প্রকার কোন লাইসেন্স নেই। তারা নিম্নমানের কাচামাল ব্যবহার করে খাবার তৈরি করে থাকে। তাদের বেকারীর পরিবেশও ভাল না। ব্যাংকের নিচে
মূল গেইট বন্ধ করে মদিনা বেকারীর পন্য তৈরী করে থাকে। বাহিরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে এটা বেকারীর প্রতিষ্ঠান কিনা। নাম প্রকাশ না সত্ত্বে এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, নিম্নমানের উৎপাদিত পণ্য প্রতিষ্ঠান মদিনা বেকারীটির বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে বিশেজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ, রং ও কেমিক্যাল মিশ্রিত খাবার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে বেকারীর মালিক মোঃ আরিফুল ইসলাম বাবুর সাথে ফ্যাক্টরীর ভিতরে সাক্ষাতকারে তিনি জানান আমি স্থানীয় প্রশাসনসহ সবাইকেই ম্যানেজ করে চলি। আমার প্রতিষ্ঠানে কেউ অভিযান দিতে আসতে পারবে না। সেনেটারী ইন্সপেক্টরকে নিয়মিত মাসোয়ারা দেই। মুক্তা ফুডের মালিক অনীল বাবু জানান, আমাদেরকে দেখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে কথিত ২/১ জন মিডিয়ার পরিচয়ধারী ব্যাক্তির নাম বলেন। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছ। আমাকে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিলে আমি তোমাদের পাশে থাকলে কেহ তোমাদের কিছুূই করতে পারবে না। প্রশাসনিক অভিযান করে মুক্তা ফুড বেপারিজ ও মদিনা বেকারির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভোগিদের।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 1 =