রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতির দুষ্ট চক্র ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন: আইনমন্ত্রী

0
468

সাব-রেজিস্ট্রি ও জেলা রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে দুর্নীতির দুষ্ট চক্র ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ নির্দেশ দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সাব-রেজিস্ট্রিার ও জেলা রেজিস্ট্রিারদের এ নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় সব ধরণের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।

আজ রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নিবন্ধন অধিদপ্তরে স্বচ্ছতা ও জনবান্ধব পরিসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আপনারা নিজেরা মাঠ পর্যায়ে চাকরি করেন। আমি সেখানে চাকরি করিনা। তাই দুর্নীতির সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে অবশ্যই আপনাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রতিবন্ধকতা এলে আমি সহযোগিতা করবো।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কেন এই মানষিকতা তৈরি করতে পারবো না যে, আমরা ঘুষ খাবো না, আমরা সততার সাথে কাজ করবো এবং জনগণকে যথার্থ সেবা দিবো। বলেন, এটি কঠিন কাজ নয়। আপনারা আমাকে এ কাজ করে দেখান আমি আপনাদের আনুষঙ্গিক প্রটেকশন এবং প্রিভিলিজ দিবো।
বলেন, জনগণের দাবী দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। এদাবী কেন? ২৬ বছর জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া এই দেশ চালিয়েছেন। জনগণের অবস্থা হয়েছিল গরীব থেকে গরীবতর। তখন যারা সরকার চালিয়েছে তারা ছেড়া গেঞ্জি থেকে রাজ প্রাসাদ বানিয়েছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেট সব মানুষের কাছে পৌঁছিয়েছি। এই পৌঁছানোর কারণে আজকে মানুষের প্রয়োজন একটা সুস্থ সমাজ। সুস্থ সমাজ করতে গেলে যেটা হয় সেটা হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ। সেজন্যই সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মানুষের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, আপনাদের সম্মান যত বৃদ্ধি করা হবে মানুষের চাহিদা কিন্তু ততই বাড়বে। এই চাহিদা পূরণ করা এবং এই সম্মান বজায় রাখতে গেলে আপনাদের সকলকে দুর্নীতিমুক্ত হতেই হবে। এই জিনিষটা আপনাদের যদি মাইন্ড সেটে থাকে তাহলে অনেক সমস্যাই আমাদের সমাধান হবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করতে পারবো। বলেন, আমার যে কথা সেই কাজ।
তিনি সাব-রেজিস্ট্রারদের সৎ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত থাকলে কেউ আপনাদের হয়রানি করতে পারবে না। বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান। তিনি তাঁর বাবা-মা ও ভাইদের হত্যাকা-ের পর ২১ বছর বিচার পাননি। ১৪ বছর মামলা চালিয়ে সেই বিচার আদায় করেছেন। তিনি বলেন, আইনের শাসন না থাকলে কি হয় তা প্রধানমন্ত্রী রন্দ্রে রন্দ্রে উপলব্ধি করেছেন। তিনি পরিস্কারভাবে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আছেন ততদিন আইনের শাসনের বিরোধী কিছু হবে না।
তিনি বলেন, নিবন্ধন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রারদের গাড়ি প্রদানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, নতুন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অফিসগুলোর ক্যাটাগরি পুনর্বিন্যাশ করা হয়েছে। বদলির ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরে আনা হয়েছে। কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রায় একশভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নকল নবীশদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রয়োজনে আরো বৃদ্ধি করা হবে। তারা যাতে প্রতিমাসে পারিশ্রমিক পান সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। শুন্যপদে ১৫০জন সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসময় তিনি নিবন্ধন কর্মকর্তাদের যুক্তিসঙ্গত দাবী পূরণ করার আশ^াস দেন। কিন্তু অযৌক্তিক দাবী পূরণ করবেন না বলে জানান।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক খান মো. আব্দুল মান্নান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে লজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা বক্তৃতা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nine + seventeen =