ঘুষের অপসংস্কৃতি, দুর্নীতিকে বিদায় করতে চাই…. গণপূর্ত মন্ত্রী

0
503

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, শিক্ষক নিয়োগ, দপ্তরী নিয়োগ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ পিরোজপুরে আর কোন চাকুরীর নিয়োগে কোন ঘুষ দিতে হবে না।

 

চাকুরী হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে, মেধার ভিত্তিতে। পিরোজপুর থেকে ঘুষের অপসংস্কৃতি, দুর্নীতিকে বিদায় করতে চাই। আমাকে কেউ ঘুষ দিতে পারবে না। আমার বাসায় কোন মাছ, মাংস, কোন উপঢৌকন বা প্যাকেট বন্দী করে টাকা নিয়ে আসতে হবে না। আমি অসততাকে, দুর্নীতি এবং ঘুষের মধ্য দিয়ে আমার শরীরের রক্ত বাড়াতে চাই না। ঘুষের টাকায় আমার স্ত্রী-সন্তানের খাবার সংগ্রহ করতে চাই না। তিনি বলেন, আমার নামে যদি কেউ ঘুষ চায় যে এটা এমপিকে দিতে হবে-মন্ত্রীকে দিতে হবে। তাহলে ধরে নিবেন সে প্রতারক। তাকে বেঁধে রেখে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে তুলে দিবেন, সে যেই হোক না কেন। সে যদি আমার দলের লোক হয়, আমার ঘনিষ্ট লোক হয়, এমনকি সে আমার পরিবারের কোন সদস্যও যদি কোন অনৈতিকতা, দুর্নীতি আকৃষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে তাদেরকে কেউ প্রশ্রয় দিবেন। তাদের বিষয়ে আমাকে জানাবেন, আমি তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিবো। শুক্রবার বিকেলে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ভীমকাঠী-কাইলানী খাল পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন শেষে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আয়োজিত শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, শ্রীরামকাঠী-নাজিরপুর সড়ক নির্মানসহ নাজিরপুর উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে জনপ্রতিনিধিকে কমিশন দিয়ে অনেক ঠিকাদার নিম্ন মানের কাজ করে সরকারী টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি হুশিয়ারী জানিয়ে বলেন এখন থেকে আর ঐ জাতীয় ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। মন্ত্রী বলেন,একই রাস্তাকে আবার কয়েকবার প্রজেক্ট বানিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এভাবে প্রজেক্টের টাকা আত্মসাৎ করা জনপ্রতিনিধির কাজ না। বিগত দিনে পিরোজপুর, নাজিরপুর, স্বরূপকাঠী উপজেলার টিআর, কাবিখা, ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা, শিক্ষক নিয়োগ, দপ্তরী নিয়োগে ঘুষ গ্রহনসহ অনেক ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না। তাই সকলকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমার কেউ ঘুষ নিবো, কেউ দুর্নীতি করবো না। পিরোজপুর থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও ইভটিজিং এর মতো অপরাধ দূর করতে হবে। আর এজন্য দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই মিলেমিশে শান্তিতে থাকবো। মন্ত্রী বলেন, অবহেলিত নাজিরপুর উপজেলাসহ পিরোজপুর জেলাকে একটি আদর্শ জেলায় তৈরী করতে হবে। আর ইতিমধ্যে সে লক্ষে কাজ শুরু হয়ে গেছে। পিরোজপুর-১ আসনের তিনটি উপজেলায় গত দুই মাসের ব্যবধানে ২৫০টি উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পিরোজপুরে একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরী করা হবে। সে লক্ষে জায়গা নির্ধারনের কাজ চলছে। পিরোজপুর ও নাজিরপুর উপজেলায় বিসিক শিল্পনগরী নির্মাণ করা হবে। পিরোজপুরে সরকারী হাউজিং এস্টেট করা হবে। যার ৬০ ভাগ সুবিধা পাবে পিরোজপুর জেলার মানুষ। আর দেশের অন্যান্য জেলার মানুষ পাবে ৪০ ভাগ সুবিধা। তাছাড়া পিরোজপুর-১ আসনের (পিরোজপুর সদর-স্বরূপকাঠী-নাজিরপুর) তিনটি উপজেলার মধ্যকার যাতায়াতের জন্য বড় দুটির নদীর ওপরে সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেতু দুটি নির্মিত হলে নাজিরপুর থেকে সড়ক পথেই স্বরূপকাঠী উপজেলা সদরে যাতায়াত করা যাবে। জনসভায় পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, নাজিরপুর ইউএনও রোজি আক্তার, বিএডিসি’র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী এর আগে এদিন সকাল ১১ টায় নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫৬তম বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জাহিদ হোসেন বুলুর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পিরোজপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বনাথ বনিক, নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজী আকতার, পিরোজপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এসএম বেলায়েত হোসেন, মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম বেলায়েত হোসেন প্রমূখ। সকাল ৯ টায় নাজিরপুর থানায় একটি নতুন পিকআপ ভ্যান আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। এসময় পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে মন্ত্রী নাজিরপুর উপজেলার চৌঠাইমহল বাস ষ্ট্যান্ড থেকে গজালিয়া পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

6 + 17 =