নির্বাচনে ভোট না দেয়ায় সুবর্ণচরে আবারও গৃহবধূকে গণধর্ষণ

0
474

অবি ডেস্ক: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সদ্যসমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারও ভোটের দ্বন্দ্বে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও তার স্বামীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ ভাইস চেয়ারম্যানকে ভোট না দেয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সোমবার নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এর আগে রোববার রাত ১১টার দিকে উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নের উওর চর বাগ্যা গ্রামে স্থানীয় রুহুল আমিনের মৎস্য প্রকল্পের পাশে কলাবাগানে এ ঘটনা ঘটে।

 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা নির্যাতিতা গৃহবধূ (৩৫) জানান, রোববার উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়মী লীগের সমর্থক ভাইস চেয়ারম্যান তাজউদ্দিন বাবরের সমর্থনে গত ১০ দিন আগে এলাকায় গণসংযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, ভোটের আগের দিন রাতে আমাকে কেন্দ্রে না যেতে প্রতিপক্ষ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহার মোবাইলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোববার ভোট দিয়ে আমি ও আমার স্বামী কেন্দ্রের পাশে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

সন্ধ্যার পর প্রতিপক্ষ ভাইস চেয়ারম্যান বিজয়ী হলে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে খালাতো বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেই। রাতে শিশু কান্না করায় আমাকে ও আমার স্বামীকে বাড়ি যেতে মোবাইল করে। রাতে আমার স্বামী মোটরসাইকেলে রহুল আমিনের প্রকল্পের পাশে গেলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ বিজয়ী ভাইস চেয়ারম্যানের অনুগত সন্ত্রাসী বেচু, ফজলুর রহমান, আবুল বাশারসহ ১০-১২ জন মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে লাথি মেরে আমার স্বামীকে নিচে ফেলে দেয়। এ সময় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও পিটিয়ে আমার স্বামীকে আটক রাখে। এরপর তারা আমাকে টানাহেঁচড়া করে পাশের কলাবাগানে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে তাদের গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবি করছি।

এলাকাবাসী জানান, ভোটে বিজয়ী ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহারের অনুগত যুবলীগ কর্মী সিরাজ সরদারের ছেলে সন্ত্রাসী ফজলুর রহমান, আবদুল খালেকের ছেলে আবুল বাশার, জসিম উদ্দিনের ছেলে হোলাল উদ্দিন, ইউছুফের ছেলে আরমান, রায়হান ও আবুল কাসেমসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন এ ঘটনা ঘটায়। নির্যাতিতা ও তার স্বামীর চিৎকারে পাশের লোকজন আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশ এসে রাতেই ওই গৃহবধূ ও তার স্বামীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে চর জব্বর থানার ওসি শাহেদ উদ্দিন জানান, উপজেলা নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ভোট না দেয়ায় এমনটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় গণধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দেয়ায় একই ইউনিয়নের মধ্যম চর বাগ্যা গ্রামের সিএনজিচালকের স্ত্রীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন, তার অনুগত যুবলীগ কর্মী সোহেল, হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেছু, বাসু, আবুল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, ছালা উদ্দিনসহ ১৬ জন গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে গণধর্ষণ করে। ওই ঘটনায় নির্যাতিতার স্বামী মামলা করলে রুহুল আমিনসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় পলাতক অপর পাঁচজনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ডিবি পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন অভিযোগ দাখিল করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − seven =