গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়ে নর্দমায় পড়ে গেছেন একজন বৃদ্ধ। বাকি মানুষজন তাকিয়ে দেখলেও এগিয়ে আসছিলেন না কেউ। তবে এসব প্রত্যক্ষর্শীকে সরিয়ে একজন এগিয়ে লেন।
টেনে তুললেন বৃদ্ধকে। এরপর শুশ্রূষা করলেন। এগিয়ে আসা ব্যক্তির নাম সাঈদ শুভ। তিনি রাজশাহী জেলা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী নগরীর মহিষ বাথান গোরস্থান এলাকায়। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় সাঈদ নিজেই শেয়ার করেছেন। তবে নিজের কর্মকাণ্ডকে আলোচ্য করে নয়, তিনি মঙ্গলবার সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনার প[রেক্ষিতে মানুষের ‘কাণ্ডজ্ঞান’ সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যান্ডেলে লিখেছেন। এই বিচারক বলেন, অনেক দিন মানুষের প্রতি এত বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হইনি। মর্নিং ওয়াক শেষ করে বাসার সামনে এসেছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম একটা কিশোরের আঁকাবাঁকা সাইকেল চালানোর কারণে এক বৃদ্ধ চাচা তাঁর গতিমান সাইকেলসহ ড্রেনের মধ্যে পড়ে গেলেন। মাথা গিয়ে আঘাত করলো ড্রেনের ওয়ালে, বুক ও হাঁটুতেও সমানভাবে আঘাত পেয়েছেন। ড্রেনের মধ্যেই লুটিয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি দৌঁড়ে গিয়ে উনাকে ওঠানোর চেষ্টা করছি। ড্রেনটা বেশ গভীর। ওঠাতে হিমশিম খাচ্ছি। ড্রেনের পাশে বেশ কয়েকজন মানুষ জড়ো হয়েছেন। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনে হয় ‘রিয়েলিটি শো’ দেখছেন আর মজা পাচ্ছেন! শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে একা একাই ওঠালাম বৃদ্ধ চাচাকে। খুবই ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়েছি ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা ৮-১০ জন মানুষের ওপর। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, অনেক সময় না হয় ভয়াবহ বিপদ দেখেও মানুষের কিছু করার থাকে না একারণে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারে না। কিন্তু এখানে শুধু দু হাত বাড়িয়ে মানুষটাকে ওঠাবে। এটুকুও করতে প্রস্তুত নয় এই মানুষগুলো? আসলে হৃদয়হীন মানুষ এই সমাজে অনেক বেড়ে গিয়েছে। এই বিবেকহীন মানুষগুলোকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য অনেক জাস্টিফিকেশন খুঁজছি। কিন্তু একটা জাস্টিফিকেশনও খুঁজে পাচ্ছি না। তাদের ক্ষমা করে দিতে পারলে ভাল লাগতো।