চট্টগ্রামের জলদস্যু শুক্কুর রাখাল থেকে কোটিপতি হবার রহস্য

0
1137

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের জলদস্যু শুক্কুর খুলনার কুখ্যাত ডাকাত এরশাদ সিকদারের চেয়েও ভয়ংকর। অভিযুক্ত ব্যক্তির নানা তথ্য– আব্দুল শুক্কর (৪০) প্রকাশ শুক্কুর ডাকাত। পিতা-মৃত ওবাইদুল হাকিম সাং ৭নং পাইপের গোড়া, জুলধা -ইউনিয়ন,কর্ণফুলী থানা, সাবেক পটিয়া,চট্টগ্রাম।কয়েক বছর আগেও ছিলো অর্থের ভিখারী ও মেষ চরাতেন যুবক বয়সে। জুলধা হাশেম মেম্বারের মহিষ চরাতেন। এক সময় পরিচয় হয় চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের নামকরা জলদস্যু ডাকাত আবুল কালামের সাথে। হাত মিলিয়ে যোগ দেয় সাগর পথে জলদস্যুতায়। নদী পথে জাহাজের রশি কাটা দিয়ে শুক্কুরের ডাকাতি শুরু বলে জানা যায়।

২০০৪/২০০৫ সালের পুর্বে ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডাকাতি ও কর্ণফুলী নদীতে সে জলদস্যুতা চালিয়ে বনে যায় নামকরা ডাকাত। দিন দুপুরে মানুষকে জিম্মি,খুন ও ধর্ষণ ছিলো যার পেশা। তার নির্যাতনের সেল ও ছিলো ভিন্ন রকম পরিবেশে ডাঙ্গারচর এলাকায়।
যাকে এক নামে সকলে চিনে মাদারি শুক্কুর, ডাকাত শুক্কুর ও জলদস্যু ত্রাস শুক্কুর নামে। যার নামের পাশে নতুন বিশেষণ তেল চোর শুক্কুর।
১৯৯৬ সালে তার প্রথম বসতিবাড়ি ডাকাতির খবর পাওয়া যায়। বড়উঠোন ইউপির শাহমিরপুর গ্রামের পল্লী ডাক্তার রনধীর বড়ুয়ার বাড়ি ডাকাতি করে সে। লুট করে নিয়ে আসার সময় মেয়েকে ধর্ষণ করার ঘটনা ও ঘটিয়েছিলেন। সে সময় ১৬-১১-৯৬ সালে এ বিষয়ে মামলা হয় বন্দর থানায়। যার নং ২১৫৫/৯৬ ইং।
জলদস্যু যার একমাত্র পেশা ছিলো। মোড়ল পাল্টে তিনি আজ তেল ব্যবসায়ী সেঁজেছে। সামান্য ডিজেল ব্যবসা করার গ্রাম্য লাইসেন্স নিয়ে (সংযুক্ত লাইসেন্স) কৌশলে নদীতে থাকা জাহাজ হতে প্রতিদিন তৈল,সয়াবিন,গম,আটা,চাউল,ডিজেল চুরি করতে থাকে। এমনকি বিভিন্ন মাদক,বিয়ার সহ বিদেশি সব পণ্য খালাস ব্যবসা যার নিত্য দিওে কারবার। গড়ে ওঠে নিজের একটি ডাকাত বাহিনী দিয়ে বড় সিন্ডিকেট। দিনে দিনে বনে যায় অবৈধ কোটি কোটি টাকার মালিক। যার কোন সুনির্দিষ্ট বৈধ ব্যবসা নেই। তারপরেও দুদক এখনো যেতে পারেনি যার নাগালে।
জানা যায়, জুলধায় বিলাস বহুল দুই বাড়ি,শহরে ফ্ল্যাট,ব্রিকস ফিল্ড,লরি,ট্রাক,দোকান সহ ৩২ খানি সমমান ৬৪০ গন্ডা জমি যার তলিতে। সম্পদের আনুমানিক মুল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকারও বেশি। কর্ণফুলি জুলধা ইউনিয়নের পাইপের গোড়া বাজারে কানু মাঝির পুকুর ভরাট করে,তিন তলা মার্কেট তৈরি করে সে। ঐ পুকুরের উত্তর পাশে মাটির নিচে একটি চোরা তেলের ডিপো স্থাপন করে। পশ্চিম পাশে কানু মাঝির বাড়ির নিকটে আরেকটি দ্বিতল আলিশান বাড়ি। তার ও ২০০গজ উত্তরে ওবায়দুল হাকিমের পুরাতন বসত বাড়িতে আরো একটি দুতলা বিদেশী স্টাইলে বাড়ি।
যদিও ব্রিকট মিলটি কৌশল এড়িয়ে নিজের শালার নামে কাগজ তৈরি করে রেখেছে বলেও জানায় স্থানীয়রা। জুলধা এলাকার জলিল জানায়, ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড ও বেসরকারি ইউসিবিএল ব্যাংকে নিজের নামে রয়েছে ৪০ কোটি টাকার ব্যাংক ভিলেজ। এছাড়া ও আগ্রাবাদের কয়েকটি প্রাইভেট ব্যাংকে রয়েছে বহু টাকার হিসাব। যদিও তার গড়ে উঠা খুলনার কুখ্যাত ডাকাত এরশাদ সিকদারের চেয়েও ভয়ংকর। যার বিরুদ্ধে কেহ সহজে মুখ খোলেনা ভয়ে। প্রতিটি ঘাটে ঘাটে প্রশাসন তার পকেটে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও প্রশাসনের মাসিক চাদার পরিমান নাকি তার ১৬ লক্ষ টাকা। যার একটি অংশ যায় সিটি মেয়র,এমপি লতিফ,বন্দর খানা,ইপিজেড থানা,কর্ণফুলি থানা, স্থানীয় পুলিশ ফাড়ি,কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোন, ডিবির এক পুলিশ পরিদর্শক ও পটিয়া এবং চট্টগ্রামের কিছু গণমাধ্যমকর্মীর পকেটে।
কর্ণফুলি নদীর ৯নং ঘাট দিয়ে এখনো রাতে দিনে যিনি চোরাকারবারি ব্যবসা বলবৎ রেখেছে। সাথে মাদক সহ নানা জাহাজি পণ্য চুরি করে গড়ে তোলেছে এক অবৈধ সিন্ডিকেট। রয়েছে তার মানবপাচার সহ নারী ব্যবসার মতো নানা অভিযোগ ও। এক তথ্যে জানা যায়, প্রতি মাসে শহরের আগ্রাবাদের কয়েকটি হোটেলে ক্ষমতাসীন দলের পদে থাকা নেতাদের নিয়ে তার বিলাসি আড্ডা হয়। ফাঁকে মাসোয়ারা হিসাব ও মিটিয়ে নেয়।
জলদস্যু শুক্কুর নিজ মুখে বলে থাকেন প্রশাসন তার পকেটে নাকি। নিজের ছেলে মনির আহম্মেদ তার সব অপকর্মের রাজস্বাক্ষী। যার রয়েছে নিজস্ব আরেকটি বাহিনী। যেখানে রয়েছে তাহের ও কায়সার নামে দুর্ধর্ষ চোরাকারবারি মাদক ব্যবসায়ীরা।
২০১৪ সালেও কর্ণফুলি নদীর ১৪ নং ঘাট দিয়ে ডাকাত শুক্কুরের ছিলো ইয়াবা ব্যবসার জমজমাট শেয়ার ব্যবসা। যার ৫০% অংশ ছিলো জাফর আহমেদ নামে আরেক লোকের। যিনি কয়েক বছর আগে মারা যায়। পরে শুক্কুর নিজেই তার ছেলেকে দিয়ে ব্যবসা পাতে। বর্তমানে ১৮ নং ঘাটে তার নিজস্ব স্পীডবোট রয়েছে রাতে ইয়াবা ও তেল পাচারে সহায়তা যানবাহন হিসেবে।
এছাড়াও জুলধা পাইপের গোড়া বাজারে অসহায় গরিব মানুষের জমি দখল ও তার নিত্য দিনের ঘটনা। যার কোন রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও,যে দল ক্ষমতায় আসে তার নাম ভাঙ্গিয়ে গড়ে তোলে তার রাজত¦। এবং যে দল ক্ষমতায় থাকে তাদের পিছনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অবৈধ টাকা পয়সা খরচ করতেও নাকি দেখা যায়। মাস শেষে আবার হাত খরচের টাকা ও অনেকের পকেটে দিচ্ছেন।
ফলে বনে যায় কোটি কোটি টাকার মালিক। নিজ মুখে শুক্কুর বলে থাকেন এমপি মন্ত্রী,প্রশাসন কিনে পেলেছে। সে নাকি টাকা বানায়। যার এসব অপকর্মের মুল সদস্য ও ডান হাত বাম হাত হলেন মোঃ ইউনুছ,মোঃ ইলিয়াছ,আলি আহমেদ,সেলিম,জানে আলম,মনির আহমেদ,তাহের সহ প্রমুখ।
স্থানীয় লোকজন তার এসব অপকর্মে অতিষ্ট হয়ে,সরকারের নানা দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন লাভবান হচ্ছেনা দাবি। কেননা স্থানীয় প্রশাসন তার কেনা গোলাম । দেখেও তারা দেখছেনা। ডাকাত শুক্কুর নানা ভাবে লোকজন হুমকি দিলেও তার বিরুদ্ধে থানায় সহজে অভিযোগ ও জিডি নিতোনা বলে দাবি। পরে কয়েকজন টিভি সাংবাদিকের চাপে কয়েকটি জিডি নিতে বাধ্য হন থানা পুলিশ। যার নং ১৮/১২/২০১৬ সালে কর্ণফুলি থানার পিপিআর নং ১৬২৭, এবং ১৪/১২/২০১৬ইং পতেঙ্গা থানা ২১৯৩, এমন কি ৯/৩/২০১৭ সালে ৩৬০/১৭ইং।
যার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা হয় ১৬/১১/৯৬ সালে প্রথম। বন্দর থানায় যার ধারা ৩৯৫ দন্ড বিধি। যে মামলায় জেলে কাটে ৫ দিনের রিমান্ডে ও সব স্বীকার করেছিলো তিনি। যা বিরুদ্ধে নিজের আপন ভাই ইলিয়াছ ও মেরে ফেলার অভিযোগ করে কর্ণফুলি থানায়। যার পিপিআর নং ১৭৮১/তারিখ ২১/১২/১৬ইং তে।
চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যার বিরুদ্ধে সিআর ৪৪/১৭ ইং মামলায় রয়েছে চাদাঁবাজি মামলা হয়। যা বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে ডাকাত শুক্কুর হতে মুক্তি পেতে স্খানীয় নিরিহ শ্রমিকের সংগঠন “পতেঙ্গা তেলের ট্যাংকার কর্মচারী পারাপার সাম্পান শ্রমিক ইউনিয়ন-২৩৭৯- রেজি) ডাঙ্গারচর, জুলধা ইউনিয়নের শতাধিক জনগন স্থানীয় সাংসদ ভূপ্রতিমন্ত্রীকেও লিখিত আবেদন করেছিলো কিন্তু কোন সমাধা পায়নি বলে জানায় জনগণ।
উল্টো সাগর পথে ও দেশের বিখ্যাত সব তৈল কোম্পানি পদ্মা,মেঘনা,যমুনা অয়েল কোম্পানির সমস্ত ঘাটে তার সিন্ডিকেট দখল করে রেখেছে। যা কিছুদিন আগে যমুনা টেলিভিশনের ৩৬০ ডিগ্রি অনুষ্ঠানে দেখানো হয় যার ভিডিও ফুটেজও সামাজিক সাইটে ভাইরাল।
পটিয়া থানার মামলা ১/৯৬ ইং,কর্ণফুলী থানা ২১৫৫/৯৬,কর্ণফুলী থানা ১০/২০০২ ,স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১২২/আদেশ নং ১৫ ,এছাড়া হত্যা হুমকিতে ওর বিরুদ্ধে জিডি ও অভিযোগ নং ১৬২৭/১৬,২১৯৩/১৬,৩৬০/১৭,২২/৯৬,১৭৮১/১৬। কর্নফুলি থানার মামলা নং ১ তাং ৫/৪/২০০৯ ধারা ৩৯৪ দ বিঃসিআর মামলা ৪৪/১৭ইং পিবিআই তদন্ত করে, ধারা ৩৮৫/৩২৩/১৪৩/৫০৬/৩৪ ,বন্দর থানা মামলা নং ২২/৯৬ইং ধারা ৩৯৫।
এমন কি এলাকাবাসী অভিযোগে জানায়, এই ডাকাত শুক্কুর আজ জিরো হতে হিরো। অবৈধ চোরাকারি করে বিপুল সম্পত্তির মালিক ও বিলাসবহুল কয়েকটি বাড়ি সহ জমিজামার দখল বানিজ্য করে টাকার কুমির বনে যায়। তথ্যমতে আরো জানা যায়,কর্ণফুলি জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর ৯নং ঘাট শুক্কুরের চোরাকারবারের প্রধান আস্তানা। পদ্মা, মেঘনা, যমুনার তেলের পাইপ ছিদ্র করে প্রতিদিন রাতে শুক্কুর বিপুল পরিমাণ তেল ৯নং ঘাটে মজুদ করে।
মুলত পদ্মা, মেঘনা, যমুনার নাইট গার্ড ও কর্মচারীদের হাত করে এসব কাজ করেন তিনি। এমনকি দেশীয় তেলের লাইটারেজ জাহাজ এবং বিদেশি তেলের জাহাজ হতেও ট্রাক্টরের তৈরি টলি যোগে তার বাড়িতে মজুদ করে অবৈধ তেল। এমনকি তার নিজস্ব তৈরি কানু মাঝির পুকুর পাড়ের গোপন ডিপোতে। পরে ওখান হতে টলি যোগে পটিয়ার শান্তিরহাট এলাকার ছবুর সওদাগর এবং পটিয়ার শাহ আলম ও কর্ণফুলি এলাকার বিভিন্ন তেলের দোকানে পাচার করে বলে খবর রটে।
প্রতিদিন সন্ধ্যার পর হতে ৯নং ঘাটে চোরাই তেল প্রকাশ্যে লোড করে শুক্কুরের ২৫/৩০ জন লোক। পাহারায় থাকে আরো কিছু চিহ্নিত এলাকার সন্ত্রাসী ও মাদক পাচারকারী। বর্তমানে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল সংগ্রহ ও পাচার করা শুক্কুরের অন্যতম প্রধান ব্যবসা। অপরিশোধিত সয়াবিন তেলকে স্থানীয় ভাষায় পিলাই তেল হিসেবে চিনে। পিলাই তেল এতটা বিষাক্ত যে,কুকুর ও বিড়াল ও যদি তার গন্ধ শোকে বা খায় মারা যেতে পারে।
অথচ কর্ণফুলি,পটিয়া,শহরের বিভিন্ন মুদি দোকান ও খাবার দোকানে এসব অপরিশোধিত চোরাই তেল দিয়ে নাস্তা ও খাবার তৈরি করছে। আর মানুষদের খাওয়াচ্ছে, যা বিভিন্ন নতুন নতুন রোগ সৃষ্টির কারণ ও হতে পারে। জলদস্যু মাদারি শুক্কুরের আরেক ব্যবসা ছিল জুয়ার আসর। সন্ধ্যার পর জুলধা পাইপের গোড়ায় জড়ো হত। বাজারের উত্তর পাশে খালের পাড়ে টনারু খামার নামক জায়গায় বসত শুক্কুরের জুয়ার আসর। হাজার হাজার টাকা আয় করে আসর বসাতো শুক্কুর।
গতবছর রেবের গাড়ি আসলো এমন গুজবে জুয়ার আসর হতে দৌড়ে পালাতে গিয়ে পা ভাঙ্গে তাতে নুরুল ইসলামের।যিনি টাকা তুলতো জুয়ার আসর হতে। বড় আজব ভ্যানগাড়িতে করে এখনো জুয়ার আসরে যায় ঐ লোক।
অন্যদিকে ২০০৫ সালের দিকে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে স্থ্ানীয় এক রিক্সাচালক খুন হয়। এতে জড়িত ছিলেন শুক্কুর তার ভাতিজা হারুন,সেকান্দর, চাচাতো ভাই ইউসুফ। অথচ বড় আয়নাবাজি আর কারিগর সেই ডাকাত শুক্কুর টাকার বিনিময়ে চার্জশীটে শুক্কুরের নাম ঠিক রেখে পিতার নাম পরিবর্তন কওে বলে অভিযোগ রয়েছে। এবং নিজে বাঁচতে আরেক শুক্কুরকে জেলে ঢুকিয়ে দেয়। টাকার জোরে ঐ খুনের মামলা থেকে রেহায় নেয়। বড় আয়নাবাজি তার।
বর্তমানে মাদারি শুক্কুর ও ডাকাত শুক্কুর নামে তার বেশ পরিচিত। তার বিরুদ্ধে কর্ণফুলি থানায় ও বন্দর থানায় বহু ডাকাতি ও একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে। ১৯৯৬ সালের ধর্ষণ মামলায় ৫ বছরের সাজা ও হয়। ১৯৯৩ সালে চরলক্ষ্যায় আলিম উদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতি করতে গেলে অস্ত্র সহ ধরা পড়ে শুক্কুর। ঐ অস্ত্র মামলা ও ডাকাতি মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়। অথচ প্রকাশ্যে ঘুরে পুলিশের নাকের ডগায়। এলাকায় বলে বেড়ায়,হাইকোর্ট হতে জামিনে নিয়ে নাকি ফাইল গায়েব করেছে। বাহ্ চট্টগ্রামের ২য় এরশাদ সিকদার এর জন্ম কাহিনী।
২০০৮ সালের দিকে কর্নফুলীর ডায়মন্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর পাশে শুক্কুরের বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত সয়াবিন তেল উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। যা চোরাচালান আইনে মামলা হয় কর্নফুলী থানায়। যা আদালতে মামলা চলমান। ২০০৯ সালে শুক্কুর ডাকাত জুলধা ইউনিয়নের মাতব্বরঘাটে আবুল এন্ড সন্স নামের তেলের দোকানে ডাকাতি করে। আবুল বশর বাদী হয়ে কর্ণফুলি থানায় মামলা করে। বর্তমানে ঐ মামলা ও বিচারাধীন বলে জানা যায়। এ রকম ডজন মামলা হলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে ধরা ছোয়ার বাহিরে এ মোস্ট ওয়ান্টেট জলদস্যু শক্কুর।
এলাকার ৩৫ হাজার মানুষ জিম্মি তার হাতে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেহ মুখ খুল্লে বা লিখলে তাকে নানা মামলা হামলার ভয় দেখায় সে। যেন এক নব্য এরশাদ সিকদার। যে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে চট্টগ্রামের সম্পুর্ন চোরাকারবার ব্যবসা। মাদকের এক নয়া মাফিয়া ডন সে। যার রাজত্ব কায়েম চলছে কর্ণফুলি সহ চট্টগ্রাম শহরে। গড়ে তোলেছেন টাকার পাহাড়। ধরাকে সরা জ্ঞান করে। কিছু প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাত করে।
শুক্কুরের এ চোরাকারবারি মাফিয়া চক্রের অন্যতম সদস্য হলেন,মোঃ ইউনুস পিতা ইমাম হোসেন,মোঃ জানে আলম পিতা আব্দু নবী,ইলিয়াছ পিতা অজ্ঞাত, আব্দুল মন্নান পিতা বাইল্লা মিয়া,মোঃ মুছা পিতা নুর মোহাম্মদ,মোঃ হাসান পিতা অজ্ঞাত, মোঃ ইসমাঈল পিতা টুনু মিয়া। এরা সকলে জুলধা ইউনিয়ন ও কর্ণফুলি এলাকার বলে জানা যায়।
কক্সবাজার হতে মাদক পরিবহনের জন্য শুক্কুরের রয়েছে তিনটি কাঠের বোট বা ট্রলার। এসব ট্রলারে করে নিয়ে আসে বিদেশী কান্ট্রি বোতল,রাম,ভোটকা নামে মদের বোতল। এসব মাদক আবার পাচার করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরেক শুক্কুর,ইউনুছ,জানে আলম,ইলিয়াছ,মন্নান,মুছা হাসান,ইসমাইল সহ একটি চক্র।
আরেকটি গোপন সুত্রে জানা যায়,এসব কাজে জড়িত প্রশাসনে গোপটি মেরে বসে থাকা কিছু কর্মচারী ও সোর্স সদস্য। যাদের মধ্যে স্থলপথে থানা কর্ণফুলি-বন্দর,ইপিজেট,পটিয়া থানা পুলিশ, নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী সোর্স মোঃ জহুর, মোঃ ইউসুপ,মোঃ জাফর এর গোপন সহযোগিতায় বড় বড় কর্মকর্তার ম্যানেজ করে সাগর পথে চোরকারবার টিকিয়ে রেখেছে। সাগর পথে চোরাকারবারি করতে গিয়ে একাধিকবার দুর্ঘটনাবশত ডাকাত শুক্কুর শারিরিক আগাত প্রাপ্ত হলেও দমিয়ে যায়নি এ ব্যবসা।
তথ্যমতে, ২৮/০৭/২০০৫ সালে সংগঠনের নাম পানি পথে সন্দ্বীপ ভোলা ব্যবসায় সমিতি নাম একটি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ তৎকালিন পুলিশ কমিশনারকে লিখিত অভিযোগ দেয় ডাকাত শুক্কুরের বিরুদ্ধে। যেখানে বলা হয়েছে, পানি পথে জলদস্যু আব্দু শুক্কুর ডাকাত হতে ব্যবসায়িদের জানমাল রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহনের। এমনকি ২৪/০৭/২০০৫ ইং সালে পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে চোরাকারবারি ডাকাত শুক্কুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয় চট্টগ্রাম ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিয়ন। যেখানে উল্লেখ্য ছিলো,এই শুক্কুর একজন চিহ্নিত সমুদ্র বন্দরের চোরাই তেল ব্যবসায়ী,বহু মামলার পলাতক আসামি,ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। যার বিরুদ্ধে কর্নফুলি থানায় ১০/তারিখ ১৮-১১-২০০২ইং ধারা ৩০২/৩৪ স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল মামলা ১২২/তাং ২৬-৮-৮৬.অর্ডার নং ১৫।
সর্বশেষ তথ্য পাওয়া যায়, এই চোরাকারবারি শুক্কুর এ জগতে আসার পুর্বে যুবক বয়সে জুলধার হাশেম মেম্বারের মেষ চরাতেন। এক প্রকার রাখাল ছিলেন। পরে কালাম ডাকাতের সাথে পরিচয় হয়। পরে বিষ খেয়ে কালাম ডাকাত মারা গেলে। সে জলদস্যু জগতে কিং হয়ে যায় রাখাল থেকে। সংবাদকর্মীর হাতে একটি তালিকা আসে। শুক্কুর যে সমস্ত জাহাজ হতে তেল চুরি করে কর্মচারীদের হাত করে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: রাজা শাহ্র সিটি জাহাজ,শবনম টু,শবনম থ্রি,শবনম ফোর,সিটি ফোর,সিটি ৭,সিটি ৯,ফ্রেশ ৩১ (যা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বলে দাবি রফিক নামে এক মাঝির),পদ্মা ১৩,১৪,১৫,রবিন জাহাজ,যমুনা ১৩,১৪,১৫, পিওপলস ১,পিওপলস ২,যমুনা ১৭,নুরুল আলম এর মালিকানা ফ্রেশ জাহাজ ১৬,১৮,১৯ ইত্যাদি।
এই চোরাকারবার পরিচালনা কালে শুক্কুর যাদেরকে টাকা পয়সা দিয়ে থাকেন মাসিক মাসোহারা বা ঘুষ হিসেবে তার তালিকায় ওঠে এসেছে বন্দর এলাকার সাংসদ লতিফ ছিদ্দিক-৩ লাখ,যদিও প্রচলন রয়েছে এমপি লতিফকে ৭০ লক্ষ টাকার গাড়ি কিনে দেয় এই চোরাকারবারী শুক্কুর,আজম নাছির মেয়রকে ৩ লাখ,বন্দর থানা ১ লাখ,ইপিজেড থানা ১লাখ,কর্নফুলী থানা ১ লাখ,ডিবির এক পরিদর্শক ১লাখ,জুলধার রফিক চেয়ারম্যানকে একটি প্রাইভেট কার কিনে দেয় বলে প্রচলিত ও রয়েছে,দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কর্ণফুলি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদক কে মাসিক ৩০ হাজার, এছাড়াও বন্দর ও ইপিজেড এলাকার যুবলীগ নামধারী শিপন নামে একজন ২০ হাজার, ফরিদ ২০ হাজার,আওয়ামিন ২০ হাজার,আসলাম ২০ হাজার,বারেক ২০ হাজার,স্থানীয় চট্টগ্রামের পত্রিকার কয়েকজন গনমাধ্যমকর্মীকে মাসিক ১০/১৫ হাজার করে প্রতিমাসে মাসোহারা দেয় বলে তথ্য এসেছে।
আমাদের অনুুসন্ধানী প্রতিবেদনে একটি তথ্য পাওয়া যায়, জলদস্যু ডাকাত বার বার স্থানীয় সাংসদ ভুমিপ্রতিমন্ত্রী জাবেদের সংস্পর্শ পেতে চাইলেও মন্ত্রী এসব বিতর্কিতদের প্রশ্রয় দেয়নি। কেননা স্থানীয় সংসদ সদস্য কখনো দুর্নীতিবাজ, অবৈধ চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীদের সব সময় এড়িয়ে যেতেন।
ফলে কৌশলে শুক্কুর বন্দর এলাকার সংসদ সদস্যকে হাত করে। যদিও ২০১৪ সালে ভুমিপ্রতিমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেন কর্ণফুলী এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতারা। তারা সকলে ডাকাত শুক্কুরের পক্ষে সাপাই শুনিয়েছিল মন্ত্রীকে। এবং জুলধা এলাকার ৫শত জাহাজ শ্রমিকের কাজ সাবেক প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন ভাগিয়ে নিচ্ছে বলে। যা তথ্যগত ভুল বুঝিয়ে পুনরায় কর্ণফুলি নদীর রাজ রাজত্বচলে আসে শুক্কুরের হাতে। সে শ্রমিকের কাজের বিনিময়ে উল্টো মামলা দিতে শুরু করে।
পরবর্তীতে শুক্কুরের বিরুদ্ধে ভুমিপ্রতিমন্ত্রীর বরাবরেও লিখিত অভিযোগ করে মাঝি মাল্লা ও শ্রমিকেরা। অবৈধ আয় হতে শুক্কুর ৩২ লাখ টাকা খরচ করে বিলাসী ভাবে মেয়েও বিবাহ দেয় আগ্রাবাদ হলে। এমনকি জুলধা পাইপের ঘোড়া এলাকার ২টি বড় মুদির দোকানে ও ৬০ লক্ষ টাকা মাসিক হারে লাগিয়েছে বলে তথ্য দেন স্খানীয়রা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 4 =