শেখ ফরিদেরও মন ছুটে গেছে বাড়ির পথে

1
499

রাজধানীর কারওয়ানবাজার থেকে লেবু কিনে পার্শ্ববর্তী সার্ক ফোয়ারার আগে প্রজাপতি গুহা বা আন্ডারপাসের পাশের ফুটপাতে বসে বিক্রি করে সংসার চলে মো. শেখ ফরিদের।

আসন্ন ঈদুল উল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। শেখ ফরিদেরও মন ছুটে গেছে বাড়ির পথে। কিন্তু শনিবার (১ জুন) বেশকিছু লেবু কিনেছিলেন, ভেবেছিলেন ওই দিনই বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু তা না হওয়ায় আজ (রোববার) বিকেলে কখনও কখনও কেনার চেয়েও কম দাম চাচ্ছিলেন।

এক ক্রেতা তিন হালি লেবুর দাম জিজ্ঞাসা করলে ২১ টাকা চান শেখ ফরিদ। এ সময় ক্রেতা ১০ টাকা দেবেন জানালে তিনি বলেন ১৫ টাকা হলে নিতে পারবেন। কিন্তু সেই দামেও নেবেন না বলেই ক্রেতা চলে যান।

তখন ফরিদ নিজেই বলেন ওঠেন, ‘দেখলেন, দেখলেন, কাণ্ডটা! ১২টা লেবু ১৫ টাকায়ও নিতে চায় না!’

তিনি বলেন, লেবুগুলো বিক্রি করতে পারলে আজই বাড়ি চলে যাব। না করতে পারলে আগামীকাল যাব। তাই যে দামে কিনছিলাম, সেই দামেই বিক্রি করছি। কখনও কম দামেও বিক্রি করছি।

সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা যায়, ওই ক্রেতা চলে গেলেও যাত্রা পথেই অনেকেই স্বল্প দামে ফরিদের কাছ থেকে লেবু কিনে নিচ্ছেন। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিনি বারবার বলে চলছেন, ‘এক হালি পাঁচ টাকা’।

কথা বলে জানা গেল, শেখ ফরিদ শনিবার দুই জাতের লেবু কিনেছিলেন। একটা ছোট, একটা বড়। বড়গুলো তার কেনা পড়েছে প্রায় সাত টাকা হালি। আর ছোটগুলো কেনা পড়েছে প্রায় ৬ টাকা।

বড়গুলোর মধ্য থেকে তুলনামূলক ভালগুলো আলাদা করে ১০ টাকা হালি বিক্রি করছেন। অন্য বড়গুলো পাঁচ টাকা হালি বিক্রি করছেন। আর ছোট লেবুগুলোও পাঁচটাকা হালি ডেকে ডেকে বিক্রি করছেন শেখ ফরিদ।

ফরিদ জানান, তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সংসারে শেখ দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। বড় ছেলের বিএসসি পড়া শেষের পথে, ছোট ছেলের মাওলানা হতেও বেশি দিন বাকি নেই। অন্যদিকে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তার আশা পরিবারের সবাই গ্রামের বাড়িতে একসঙ্গে ঈদ করবেন।

বাড়িতে যাওয়ার টিকিট কেটেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাগো আগাম টিকিট লাগে না। লোকাল বাসে যামু। যহন রওনা দিমু, তহনই বাস।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × four =