বিয়ের মহা-ধুমধাম। কমিনিউটি সেন্টারের সামনে সামিয়ানা টাঙ্গানো । সকাল থেকে চলছে আমন্ত্রিত অতিথিদের অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন। দুপুরে বিয়ে। কনে সাজানো হয়েছে আগেই। বাদ্য বাজনা বাজিয়ে সময় মতোই এল বর। সঙ্গে আত্তীয়-স্বজনসহ ৭০০ জন বরপক্ষের বহর সহ উপস্হিতি বর পক্ষ। আপ্যায়নও হল যথাসময়ে। উভয় পক্ষের অনেক অতিথি খাওয়া দাওয়া শেষ করে এরপর শুরু হল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
কাজী প্রস্তুত,বিয়ের পর রেজিস্ট্রি খাতায় স্বাক্ষর করবেনা বর। ভরা আসরে যৌতুকের টাকাটা পরিশোধের দাবি তুলে বর পক্ষ। টিভি,ফ্রিজ আসবাব পত্র বাবদ যৌতুক হিসাবে নগদ তিন লক্ষ টাকা দাবী করেন বর পক্ষ।
এ কথা শুনে হঠাৎ যেন আকাশ ভেঙে পড়ল কনের আত্তীয়-স্বজন ও বাবা-মায়ের মাথায়। যৌতুকের টাকা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কনের পক্ষের লোকজনদেরকে অপমান লাঞ্ছিত করে বিয়ের আসর থেকে চলে গেলেন বর পক্ষ।এমন অভিযোগ টুকটুকে লাল শাড়ী পড়ে বসে থাকা কনের।
কক্সবাজার শহর থেকে একটু দুরে বাংলাবাজার আল নুর কমিনিউটি সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। কনে উম্মে কুলসুম উর্মির(২৯) ভাষ্যমতে, তার আগে বিয়ে হয়ে ছিলো। সেই ঘরে তার দুই সন্তান ও রয়েছে।
তার আগের স্বামী প্রবাসে থাকার কারণে তাদের দুইজনে মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উম্মে কুলসুম তাকে সেচ্ছায় তালাকনামা দিয়ে দুইজনে আলেদা ভাবে জীবন যাপন করে। ছয় মাস পুর্বে কক্সবাজার শহরে ঝিলংজা ইউনিয়ন হাজী পাড়া পাওয়ার হাউস এলাকার মৃত নবাব মিয়ার ছেলে বাদল মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে মাধ্যমে উম্মে কুলসুমের পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্রে উম্মে কুলসুমও বাদল মিয়ার গভীর প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুই জনে মধ্যে। কুলসুম আগের বিবাহিত ও তালাক প্রাপ্ত বলে বাদল মিয়াকে সরাসরি জানিয়েও দেয় এবং বাদল মিয়ার স্ত্রী দুই বছরের পুর্বে দুই সন্তান রেখে অন্যজনের হাত ধরে পালিয়ে যায়। উভয় পক্ষের পরিবারের সহিত আলাপ আলোচনাক্রমে ২৮ জুন শুক্রবার দুই জনের বিবাহ দিন ধার্য করা হয়। উম্মে কুলসুম চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন খামার পাড়া এলাকার সোনা আলী সওদাগরের মেয়ে বলে জানান।
এই বিষয়ে বর পক্ষের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে বরের বড় ভাই ইউপি মেম্বার কাজল মিয়া জানান,নিকাহ নামা সম্পাদনের জন্য কাজী সাহেব উম্মে কুলসুমের ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখতে চাইলে জাতীয় পরিচয় পত্রে তার আগের স্বামীর নাম উল্ল্যেখ থাকায় বিয়ের আসরে উপস্হিত কাজী ও লোকজনের মনে সন্দেহ হয় আগে স্বামীর তালাক নামা নিয়ে। তাই বিয়ে পড়াতে রাজি হয়নি কাজী। তাই বিয়ের আসর থেকে বাধ্য হয়ে চলে আসতে হয়েছে সবাইকে।
ঘটনার বিষয় স্থানিয়ভাবে আপোষ মিমাংসার চেষ্টায় কয়েক বার দফায় দফায় বৈঠকের পরও আপোষ মিমাংসা না হওয়ায় কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান কনে পক্ষ।
এই বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি খন্দকার ফরিদউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন
অভিযোগ পেয়েছি,এই ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।