খালেদা জিয়ার জন্য সহানুভুতি আদায়ের চেষ্টা করছেন : তথ্যমন্ত্রী

0
442

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়া না নেয়ার সিদ্ধান্ত আদালতের, সরকারের নয়। তার স্বজনরা দেখা করে এসে দু’সপ্তাহ ধরে কোন চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি বলে যে অভিযোগ তুলেছেন তা সঠিক নয়।

তিনি বলেন, গতকালও রিজভী আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছেনা বলে বলেছেন। আসলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও খালেদা জিয়ার বোনসহ আত্মীয় স্বজনরা দেখা করে এসে যা বলেছেন তাদের বক্তব্যর মধ্যে পুরোপুরি মিল কোন ব্যতিক্রম নাই। এসব বলে তারা খালেদা জিয়ার জন্য সহানুভুতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। এটি করতে গিয়ে বিএনপি নেতারা বরং বেগম জিয়াকে অসম্মানিত করছেন।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুরপাড়ে নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে তাকেতো প্রথমত জামিন পেতে হবে। জামিন পাওয়ার পর আবার আদালতের অনুমতি লাগবে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারবে কিনা। সেটা তো আদালতের ব্যাপার। তিনি জামিন পাবেন কি পাবেননা সেটা সরকারের বিষয় নয় আদালতের ব্যাপার। আদালত যদি তাকে জামিন দেন এবং বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেন তাহলেই বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার প্রসঙ্গটি আসে। এটা সম্পুর্ণ আদালতের এখতিয়ার।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃত পক্ষে আমি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি তারা জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া নিয়মিত ডিউটি ডাক্তারের চেকআপের মধ্যে রেখেছেন। এছাড়াও সিনিয়র ডাক্তাররা তাকে এক-দু’দিন পরপর দেখতে যান এবং তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়ার আর্থাইটিসের সমস্যা দীর্ঘদিনের পূরনো সমস্যা। এগুলো নতুন সমস্যা নয়। এসমস্যা নিয়েই তিনি দু’বার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির মতো একটি বড় দলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করছেন। বিরোধী দলের নেতার দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। মানুষের বয়স বাড়লে সব মানুষের আর্থইটিসের মতো নানা সমস্যা হয়। তাঁ নতুন করে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। কালকে আত্মীয়-স্বজনরা দেখা করে এসে যে কথা গুলো বলেছেন সেগুলো নতুন কোন সমস্যা নয় পুরনো সমস্যা। তারা যেসব কথা বলেছেন তা সঠিক নয়। তাকে নিয়মিত চেকআপে রাখা হয়েছে সিনিয়র ডাক্তাররা দুয়েকদিন পরপর দেখতে যাচ্ছেন।

দেশের মেডিকেল শিক্ষার সর্ব্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দেশের প্রতিথযশা ডাক্তাররা সংযুক্ত উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখানে মানসম্মত চিকিৎসা হয়। আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদকের যখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন সেখানেই চিকিৎসা নিয়েছেন। সিঙ্গাপুর ও ভারতের দেবী শেঠিসহ বিখ্যাত ডাক্তারররা এসেছিলেন, তারা বলেছিলেন ভারত ও সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেলে তাকে যে চিকিৎসা দেয়া হতো বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে সেই চিকিৎসায় দেয়া হয়েছে। যেকারণে তিনি মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসেন। এখানেই ভালো চিকিৎসা হয়।

বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধান মন্ত্রী ছিলেন তাঁর সুচিকিৎসার জন্য সরকার অত্যন্ত আন্তরিক জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আরো অনেক হাসপাতাল ছিল, তিনি যাতে ভালো চিকিৎসা পান সেজন্যই দেশের সেরা হাসপাতাল বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে রাখা হয়েছে তাঁকে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে যদি খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় না হয় তাহলে তাকে যখন কারাগারে ফেরত নেয়ার কথা আসে তখন রিজভী আহমেদরা বিরোধিতা করেন কেন এমন প্রশ্ন রেখে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার স্বজনরা জামিন প্রাপ্তিতে সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কী সরকার সহায়তা করবে? তারা একবার বলে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। আবার কেউ বলছেন, তার জামিন আবেদনের সময় যাতে বিরোধীতা করা না হয়। তাদের পুরো বক্তব্য স্ববিরোধীতা। সরকারের তো দুর্নীতির সাথে আপোষ করার সুযোগ নেই।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 + 10 =