ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

0
439

সাভারে ল্যাব জোন হাসপাতাল (প্রাঃ) লিমিটেডে ভুল চিকিৎসায় আনোয়ার হোসেন (৫৩) নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। এমনকি হাসপাতাল কতৃপক্ষ রোগীর চিকিৎসা প্রদান ও পরীক্ষা-নীরিক্ষার কোন প্রকার কাগজপত্র রহস্যজনক ভাবে এখন পর্যন্ত তাদের দেয়নি বলেও অভিযোগ তাদের।

নিহত মুদি দোকানী আনোয়ারে হোসেন ঢাকার ধামরাই উপজেলার ছোট চন্দ্রাইল এলাকার বাসিন্দা।

ফাতেমা আক্তার বলেন, ক্যালসিয়ামজনিত সমস্যার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বাবা আনোয়ার হোসেন তার শরীরের হাঁড়ের জয়েন্টে ব্যথায় ভুগছিলেন। গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাদের এলাকার ফার্মেসী ব্যবসায়ি আব্দুল হালিম তার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের ল্যাবজোন হাসপাতালে কৌশলে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান ও মালিক ওয়াকিলুর রহমান তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর পিত্ত থলিতে পাথর হয়েছে জানিয়ে জরুরী ভিত্তিতে অপারেশন না করলে তার বাবা মারা যাবে বলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

তিনি আরো বলেন, এঘটনার পরদিন ২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় তার বাবাকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করিয়ে দীর্ঘক্ষণ পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বের করে তার অবস্থা মুমূর্ষু বলে জানানো হয়। এক পর্যায়ে তাকে আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এসময় তার বাবার শারিরীক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তাদের সাথে অসদাচরণ করেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ। পরে জোরপূর্বক তার বাবাকে ল্যাবজোন থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন তারা। কিন্তু সেখানে নেয়ার পূর্বেই তার বাবার মৃত্যু হয় বলেও জানান তারা।

এঘটনায় কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই হাসপাতাল কতৃপক্ষ দ্রুত তার বাবার মরদেহ ধামরাইয়ের ছোট চন্দ্রাইল এলাকায় তাদের বাড়িতে পৌছে দিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন।

নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম অভিযোগ করেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হলেও চিকিৎসা প্রদানের কাগজপত্র ও ডেথ সার্টিফিকেট দিচ্ছে না হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এ নিয়ে অনেকবার তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না।

এব্যাপারে ল্যাব জোন হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ওয়াকিলুর রহমান জানান, এতদিন পর তারা রোগী মৃত্যুর অভিযোগ কেন করছেন? ওই সময় কেন বিষয়টি হাসপাতাল কতৃপক্ষকে তারা জানালেন না? আর চিকিৎসা প্রদানের কাগজপত্র ওই দিনই রোগীর পরিবার নিয়ে গেছে বলে দাবী করেন তিনি।

এছাড়া রোগী এনাম মেডিকেলে মারা গেছেন দাবী করে ডেথ সার্টিফিকেট তারাই প্রদান করবেন বলেও জানান তিনি।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তীতে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন সাহাবুদ্দিন মানিক জানান, এবিষয়টি তিনি জানেন না। তবে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 + 14 =