ছিনতাই মামলায় পুলিশের এএসআই জেলে

0
1978

নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নড়াগাতী থানার খাসিয়াল মধ্যপাড়ার বাসিন্দা মো. ইলিয়াস ৬ জনের বিরুদ্ধে এ ছিনতাইয়ের মামলা করেন। প্রায় পনের লাখ টাকা ছিনতাইয়ে একটি মামলায় পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) দুইজনের দুই বছর করে জেল দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া তাদের পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ডেরও আদেশ দেওয়া হয়।

ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার আদালতের বিজ্ঞ বিচারক দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এই আদেশ দেন। দন্ডিত আসামিরা হলেন-উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের এএসআই আলমগীর হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) এবং মাছুম বিল্লাহ। আলমগীর যশোরের ঝিকরগাছা থানাধীন কীর্তিপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। আর মাসুম বিল্লাহর বাড়ি ঢাকার দোহার থানাধীন উত্তর শিমংলিয়া গ্রামে। রায় ও দন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিজ্ঞ স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান।

তিনি বলেন, রায়ে আসামিদের কারাদন্ডের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে গত ৩ জুলাই ও ১৯ আগস্ট মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ওই দুই তারিখ রায় পেছানো হয়। নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার খাসিয়াল মধ্যপাড়ার বাসিন্দা মো. ইলিয়াস গত ৫ এপ্রিল ৬ জনের বিরুদ্ধে এ ছিনতাইয়ের মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, বাদী লতিফ ইম্পেরিয়াল মার্কেটস্থ এইচএস মানি এক্সচেঞ্জের মালিক। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে তিনি রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন।

হঠাৎ ঢাকা মেট্টো-গ-১৯-০৯৭০ নম্বরের সাদা একটি প্রাইভেটকার তার সামনে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে ডিবি পরিচয়ে দিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। এক পর্যায়ে কালো কাপড় দিয়ে তার চোখ বাঁধে। এরপর তারা তার কাছে থাকা মানি এক্সচেঞ্জের ১৮ হাজার ৮শ ইউএস ডলার যার বর্তমান বাংলাদেশের বাজার ম‚ল্য ১৫ লাখ চার হাজার টাকা তা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নড়াগাতী থানার খাসিয়াল মধ্যপাড়ার বাসিন্দা ইলিয়াসের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উপস্থিত জনতা গাড়ি আটকে মাসুম বিল্লাহকে আটক করে এবং অপর চারজন পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশ মাসুম বিল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, পালিয়ে যাওয়া আসামি এএসআই আলমগীর হোসেন, জনৈক হাবিব ডলার, রাশেদ ও সুমন বলে জানায়। পুলিশ মাসুম বিল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে এএসআই আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেন। মামলায় মাসুম বিল্লাহ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. ন‚রে আলম সিদ্দিক আনোয়ার হোসেন এবং মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরের ১৯ জুন ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে বিজ্ঞ আদালত চার্জশিটভুক্ত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

3 × 5 =