আনোয়ার হোসেন আনু,কুয়াকাটা॥ ঘাট ইজারাদারের খামখেয়ালিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এ লঞ্চঘাটটিতে ভিড়ছেনা অভ্যন্তরীন রুটে চলাচলকারী কোন লঞ্চ কিংবা যাত্রীবাহী ট্রলার। প্রভাবশালী ইজারাদারের প্রকাশ্য চাপে লঞ্চ ভিড়াতে হচ্ছে ইজারাদারের স্ব-মিল ঘাটে। মাত্র কয়েকমাস পূর্বেই লঞ্চ যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুনভাবে নির্মান করা হয়েছে বেইলি ব্রিজ। সংযোজন করা হয়েছে নতুন একটি পল্টুনের। রয়েছে নির্দিষ্ট লঞ্চ টার্মিনাল। যাত্রীদের উঠা-নামার জন্য রয়েছে পল্টুন, বেইলি ব্রীজ। তারপরও নির্ধারিত লঞ্চ ঘাটে ভিড়ানো হচ্ছে না লঞ্চ কিংবা যাত্রীবাহী ট্রলার। এতে প্রায়শ:ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ও কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও প্রতিকার পায়নি সাধারন যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাপাড়া পৌর শহরের বাজার স্লুইস এলাকায় নুরুল হক মুন্সির স্ব-মিল এবং ইজারাদারের রাইচ মিলের পাশেই ভিড়ছে কলাপাড়া-মৌডুবি রুটে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি লঞ্চ। এখানেই টেবিল-চেয়ার পেতে ইজারাদারের লোকজন যাত্রীসহ পন্য পরিবহনের টোল আদায় করছে। ঘাটের পাশেই নদীর পাড় জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কাটা গোল গাছ। রয়েছে বড় বড় গাছের স্তুপ। এরই মধ্য দিয়ে চরম ভোগান্তিসহ ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে ওঠা নামা করছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশু যাত্রীরা। ঝুঁকি নিয়েই পন্য পরিবহন করছে শ্রমিকরা।
কলাপাড়া-মৌডুবী রুটে চলাচলকারী এমএল রূপসী তুষার-২ লঞ্চের কেরানী আ. জব্বার সাংবাদিকদের বলেন, যাত্রীসহ পন্য পরিবহন এবং লঞ্চ ভিড়ানো চরম ঝুঁকিপূর্ন জেনেও ইজাদারের চাপে এখানে লঞ্চ ভিড়াতে হচ্ছে। একই অভিযোগ এমএল রাহাত লঞ্চের কর্মচারীদের। লঞ্চ ভিড়াতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ করেন তারা।
মৌডুবীর লঞ্চযাত্রী রাশেদ বলেন, ঝুঁকি নিয়ে দুরু-দুরু বুকে লঞ্চে উঠলাম। নামার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সাহস পাচ্ছিনা। একই কথা বললেন লঞ্চের বেশ কয়েকজন যাত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, যাত্রীদের এই ভোগান্তি নিরসনে ইজাদারের খামখেয়ালীর লাগাম টেনে ধরার ক্ষমতা কি কারো নেই!!
ঘাট ইজারাদার তানভীর মুন্সী বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি চাইলেও কর্তৃপক্ষ ঘাটে লঞ্চ ভিড়াচ্ছেনা। পটুয়াখালী অভ্যান্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জহিরুল ইসলাম বলেন, সরজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে ইজাদারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পটুয়াখালী অভ্যান্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষসহ যাত্রীদের সুবিধার্থে। কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে কলাপাড়ার ঐতিহ্যবাহী লঞ্চঘাটটি নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। অথচ সেখানে দোতলা লঞ্চ ছাড়া অভ্যান্তরীন রুটের কোন লঞ্চ ভিড়ছেন এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।