প্রতিটি থানা হবে সাধারণ মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের স্থান

0
720

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে অপরাধ দমন, অপরাধীদের গ্রেফতার, মামলা গ্রহণ এবং বিচারে সহায়তা সব কাজ সামলাতে হয় পুলিশকেই। আবার সড়কে শৃঙ্খলা, ভিআইপি নিরাপত্তা বা প্রটোকলের দায়িত্বও এ বাহিনীর কাঁধেই।শুধু কী তাই? গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও সমানতালেই করতে হয় তাদের। এতোকিছুর পরেও পুলিশ সম্পর্কে এখনও নেতিবাচক ধারণা পুরোপুরি বদলাচ্ছে না।

মূলত গুটিকয়েক পুলিশ সদস্যের নিয়মবহির্ভূত কান্ডকীর্তি সাধারণ মানুষের মাঝে অনেক সময় উল্টো অসন্তোষ তৈরি করে। জনআস্থার চেয়ে কেন অনাস্থার মাত্রা রয়ে যাচ্ছে এমন ‘রহস্যভেদ’ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।

নিয়োগ, পদোন্নতি আর বদলীতে অতীতে চলে আসা রাজনৈতিক প্রভাবের টুটি চেপে ধরা হচ্ছে। সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পেশাদারিত্বকেই।

আইনের শাসন নিশ্চিত ও উন্নয়ন টেকসই করতে সততা, দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব ও অসীম সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পুলিশের ভূমিকাকে আরও উজ্জ্বল করার মধ্যে দিয়ে ‘জনবান্ধব’ পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

অপরাধ নির্মূলসহ সমসাময়িক অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এসব চ্যালেঞ্জ শক্তহাতে মোকাবেলা করতেও কঠোর নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশ বাহিনীর বিভাগীয় ও পেশাগত স্পন্দন অনুভব করেই জনবল, বেতন-ভাতাসহ সব রকমের সুযোগ সুবিধা তিনি বাড়িয়েছেন।

ফলে পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যেতে হবে পুলিশকে, এমন মর্মবাণী গেঁথে দিয়েছেন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের হৃদয়-মস্তিষ্কে।

‘পুলিশ বান্ধব’ প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা আর সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে একাত্ন হয়ে, তাদের প্রতি অধিক সংবেদনশীলতা, সহমর্মিতা এবং জনসেবার মূল্যবোধের অধিকারী হয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গেই নিজ বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করার ‘কঠোর বার্তা’ দিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।

পুলিশ প্রধান নিজ বাহিনীর সদস্যদের সব সময়ই বলে যাচ্ছেন, মানুষ বিপদে পড়লেই থানায় যায়। ফলে থানায় কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে যদি তাদের হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তবে এজন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে নিজের সুর চড়া করেছেন।

নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্বকে কেবলমাত্র ‘রুটিন ওয়ার্ক’ হিসেবে না ভেবে জনসাধারণের সমস্যাকে একান্ত আন্তরিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অনুশাসনও দিয়েছেন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত বাহিনীটির এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা।

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে কোয়ার্টারলি কনফারেন্সে অপরাধ পর্যালোচনা সভায় মাঠ পর্যায়ের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের থানায় আসা সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাল আচরণ করতে যেমন বলেছেন তেমনি পুলিশের কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করারও ‘গাইড লাইন’ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘পুলিশ সম্পর্কে জনগণের মাঝে ইতিবাচক ধারণা তৈরিতে সকলকে সচেষ্ট থাকতে।’

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম মেয়াদেই পুলিশ বাহিনীকে কল্যাণ-গণমুখী ও জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। নেওয়া হয় সাধারণ মানুষকে সহজেই আইনগত সহায়তা ও পুলিশি সেবা নিশ্চিতের পরিকল্পনা। ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দফতর এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

চলতি বছরের পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী এ বাহিনীকে আরও জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ দেন। পুলিশ বাহিনীতে বিরাজমান নানা সমস্যা সমাধানে ব্রত নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে গর্বিত পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করতে প্রতিটি সদস্যকে পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, ‘প্রতিটি থানা সুন্দর ও দর্শনীয় স্থান হওয়া উচিত। যেগুলো হবে সাধারণ মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের স্থান।’ সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট অনুমোদিত কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে অবশ্যই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।

২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পুলিশের আইজি পদে ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীকে নিয়োগ দেওয়ার সময়েই প্রধানমন্ত্রী তাকে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

পুলিশ সদর দপ্তরে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনেও আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।

এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে শুরুতেই তিনি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘পরিচর্যা’র উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আস্থাহীনতার সংস্কৃতিকে বিদায় করে সেবার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিটি থানাকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার কঠোর বার্তা দিয়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন অভিজ্ঞায় ঋদ্ধ পুলিশের এ প্রধান কর্মকর্তা।

বছর পেরুতেই নিজ বাহিনীর কর্মকর্তাদের আচরণ ও সেবার মনোভাবের গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষমতারও পরিচয় দিয়েছেন পুলিশ প্রধান। এক সময় সাধারণ মানুষ পুলিশের নাম শুনলেই যেখানে আঁতকে উঠতো এখন অনেকটাই তা কেটে গেছে। পুলিশ সম্পর্কে জনমনে তৈরি হচ্ছে ইতিবাচক ধারণা।

৩৩ বছরের গৌরবোজ্জ্বল কর্মজীবনে আইজিপি হওয়ার আগে ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা, পেশাদারি ও সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান হিসেবে প্রায় ৯ বছর দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের ওপর লেখা ‘কারাগারের রোজনামচা’র জন্য বিভিন্ন তথ্য ও নথি সংগ্রহে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেন।

এসবির রেকর্ড রুমে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে যেসব ক্লাসিফায়েড তথ্য রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে বিরল নজির স্থাপন করেন পুলিশে বদলে যাওয়ার মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তা।

পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা কালের আলোকে বলেন, নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনায় থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের নাম উঠে আসছে। মাঠ পর্যায়ে গুটিকয়েক সদস্যের নিয়ন্ত্রণহীন কর্মকান্ডে বিব্রত হতে হয় গোটা বাহিনীকেই।

বারবার কঠোর বার্তা দেওয়ার পরও কেন কিছু সদস্য অনৈতিক কাজে জড়াচ্ছে, বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধেই কঠোর অ্যাকশনে যাচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ প্রধান একাধিকবার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গুটি কয়েক সদস্যের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ‘দায়’ পুরো পুলিশ বাহিনী নেবে না। ব্যক্তির অপরাধের দায় ‘বহন’ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই।

দেশের বিভিন্ন জেলার একাধিক পুলিশ সুপার (এসপি) কালের আলোকে বলেন, ‘পুলিশের নিয়োগে পুরোপুরি স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ যুগোপযোগী করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন পুলিশের বর্তমান আইজি ড.জাবেদ পাটোয়ারী।

থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) আচরণে গুণগত পরিবর্তন আনতে সেবার দিকেও সর্বোচ্চ মনোযোগী হতে বলেছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেই পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। এতে করে ইতোমধ্যেই অনেক ওসিদের মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।’

রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের বিভিন্ন থানায় একাধিক সেবা প্রত্যাশী কালের আলোকে বলেন, ‘আগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে টাকা গুণতে হতো। এখন থানায় কেউ সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও ডিউটি অফিসার বিনয় ব্যবহারের মাধ্যমে বিনা খরচায় গ্রহণ করছেন।’

পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও সিআইডি প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন কালের আলোকে বলেন, ‘একজন কর্মপ্রবল-প্রেরণাদীপ্ত আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ অবয়ব ও বৈশিষ্ট্য দ্যুতিদীপ্ত মানুষ।

আত্মপ্রচারবিমুখ ও নীরব-নিবিষ্ট কর্মপ্রবাহের মাধ্যমেই নিজ বাহিনীর সদস্যদের উজ্জীবিত করছেন প্রতিনিয়ত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পুলিশ বাহিনীকে গণমুখী করতে স্বকীয় যোগ্যতায় নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।’

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান কালের আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পুলিশের পেশাদারিত্বের মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে পুলিশ সদর দপ্তরের চলমান প্রশিক্ষণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

‘পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সরকার দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে। যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে’, এমন মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, আমি আশাবাদী, পুলিশ এখন যেভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, তেমনি ভবিষ্যতেও করবে।

সূত্র মতে, চলতি বছরের কনস্টেবল নিয়োগে পরীক্ষায় শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী অন্যান্যদেরও ‘পুলিশ মডেল’ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী প্রতিবাদি নুসরাত জাহান রাফী হত্যা মামলা, ৩০ বছর পর রাজধানীর সিদ্বেশরীতে সাগিরা মোর্শেদ হত্যার রহস্য উদঘাটন করে জনমনে প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ইতোমধ্যে পুলিশ প্রধানের মাধ্যমে পিবিআইকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একের পর এক চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশের আইজি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর ‘গাইড লাইনে’ ইউনিট প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে একের পর এক চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনে সাফল্য দেখিয়েছে এ বিশেষ ইউনিট।

৫০টি থানা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশও (ডিএমপি) সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে ইদানিং চমক তৈরি করেছে। থানাকেই সেবার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের থানায় যারা কাজ করছেন তাদের আচরণে যদি কাঙ্খিত পরিবর্তন না হয় তাহলে আমাদের সিনিয়র অফিসাররা থানায় গিয়ে বসা শুরু করবে।

আমি নিজেও থানায় গিয়ে ওসি-গিরি করব। আমরা আমাদের ডিসিদের থানায় বসিয়ে দেব এবং অন্য যে অফিসাররা আছেন তারা সপ্তাহে একদিন থানায় উপস্থিত থাকবেন।’ তাঁর কথার সঙ্গে কাজের মেলবন্ধনও ঘটছে।

এখন থানাতে নিয়মিত হয়েছেন ডিএমপির ৮টি ক্রাইম বিভাগের ডিসি, এডিসি ও এসিরা। এতে করে থানায় সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কালের আলোকে জানিয়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলা বা জিডি করতে গিয়ে থানায় কেউ হয়রানির শিকার হচ্ছে কি-না তাও তাৎক্ষণিকভাবে মনিটর করা হচ্ছে। ডিএমপি সদর দপ্তরের একটি টিম বিষয়টি তদারকি করছে। থানাকে হয়রানিমুক্ত ও জনবান্ধব করতে ডিএমপির এ উদ্যোগও আলোচিত হচ্ছে।

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে কোয়ার্টারলি কনফারেন্সে অপরাধ পর্যালোচনা সভায় দেশের সকল রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটনের কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) উপস্থিতিতে আইজিপি ড.জাবেদ পাটোয়ারী চাঞ্চল্যকর মামলাসমূহ নিবিড় তদারকির জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলা মনিটর করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

মাদকের রাশ টেনে ধরতে ‘অল আউট’ অ্যাকশনের পাশাপাশি কৌশলী তৎপরতাও শুরু করেছে পুলিশ। মাদক কারবারিদের সব ধরনের ‘চাতুর্য’ মাথায় নিয়ে নতুন আঙ্গিকে অব্যাহত রয়েছে কার্যকর অভিযান। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা কারবারিদের গ্রেফতারের বিষয়টিও সবিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর পথে শক্ত অবস্থানের বিষয়টি আবারো স্পষ্ট করে এদিন পুলিশ সদর দপ্তরে অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আইজিপি বলেছেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছি।

মাদকের সাথে কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তিনি যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।’

জঙ্গিবাদ দমনে গোটা বিশ্বেই রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বারবার পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গুরুত্বের সঙ্গেই তাদের জীবন বিসর্জন দেওয়ার কথাও বলেছেন।

জঙ্গিবাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি গোয়েন্দ নজরদারি বৃদ্ধি করতেও পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ প্রধান ড.জাবেদ। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটসহ অন্যান্য ইউনিটকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। জঙ্গিদের কার্যক্রম এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 1 =