সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন বদলি

0
847

যোগদানের ২০ দিনের মাথায় সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোলকে বদলি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাকে বদলি করা হয়।জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন ডা. শামছুউদ্দিনকে সুনামগঞ্জের নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে সদ্য বদলিকৃত ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোলকে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোল তার বদলির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চলতি মাসের প্রথম দিকে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগ পান ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোল। সুনামগঞ্জে যোগ দিয়েই স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের ঘোষণা দেন। স্বাস্থ্য খাতে নানা উন্নয়নেরও উদ্যোগ নেন তিনি। তার হঠাৎ করে বদলিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সুনামগঞ্জে।

২১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তউহীদ আহমদ কল্লোল। প্রথম কর্মস্থল হিসেবে সিলেটে যোগ দেন তিনি। সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন হওয়ার আগে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ছিলেন তিনি। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন তউহীদ আহমদ কল্লোল।

এর আগে সুনামগঞ্জে সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদানের পর ডা. তউহীদ আহমেদ কল্লোল বলেন, সুনামগঞ্জে আসার আগেই সুনামগঞ্জ হাসপাতালের একটি দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্বে ছিলাম আমি। কাজেই সুনামগঞ্জ হাসপাতাল সম্পর্কে আগে থেকে আমার কিছু ধারণা রয়েছে। ওই ধারণার আলোকে সুনামগঞ্জ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবাকে নতুন করে সাজানোর কিছু পরিকল্পনা রয়েছে আমার।

স্বাস্থ্যসেবাকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার পরিকল্পনাগুলো স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি; তিনভাগে ভাগ করে নিয়েছি। প্রথমে স্বল্প আকারের সমস্যাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধান করা হবে। এরপর মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা এবং পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে একটি নিয়ম-শৃঙ্খলা তৈরি করে দেয়া হবে আমার মূল লক্ষ্য। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা কম। আমরা প্রতিনিয়ত চিকিৎসক বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিচ্ছি, আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।

সিভিল সার্জন তউহীদ আহমদ কল্লোল বলেন, আমার প্রথম কাজ হবে সবাইকে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা। সবাই নিয়ম মতো অফিসে আসছেন কিনা তা খতিয়ে দেখব আমি। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাদের পোশাক বাধ্যতামূলক করা হবে। হাসপাতালের যেসব কর্মকর্তা ব্যক্তিগত পোশাক পরে আসবেন তাকে দালাল হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কারণ সবার পোশাক নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কে চিকিৎসক, কে নার্স, কে কর্মকর্তা এবং কে কর্মচারী পোশাকেই নির্ধারণ হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের অবশ্যই নেমপ্লেট ব্যবহার করতে হবে।

হাসপাতালের দুর্নীতি রোধে নিজের অবস্থান, পারিবারিক নীতি-নৈতিকতার দায়বদ্ধতার কথা জানিয়ে সিভিল সার্জন তউহীদ আহমদ কল্লোল বলেন, আমি এখানে সৎভাবে কাজ করতে এসেছি। আপনারা আমার এবং পরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর নেন, আমাকে সরকার যে বেতন দেয় তা দিয়েই সংসার চালাই। আমি হারাম এক টাকাও খাব না, কেউ খাওয়াতে পারবে না। দুর্নীতি করব না। আমার বাবা উপসচিব ছিলেন। তবুও তিনি টিউশনি করেছেন। কষ্ট করে আমাকে পড়িয়েছেন, মানুষের মতো মানুষ করেছেন। আমি যদি দুর্নীতি করি তাহলে কলঙ্কের দাগটা আমার বাবা ও পরিবারে লাগবে। আমার বাবা এবং পরিবারে কলঙ্কের দাগ লাগতে দেব না আমি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 2 =