বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে নষ্ট করে লাভ নেই, শক্ত লোক দিন। যিনি সব ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারবেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, ঢাবি উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি ক্রিসেলের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাফফর আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বামজোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ। ইব্রাহীম খালেদ বলেন, পৃথিবীর সব দেশে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে সব জায়গায় খুবই কাঠঠোকরা লোককে গভর্নর করা হয়। ওরা তো কারও সঙ্গে চললে অসুবিধা। সে জন্যই আমি বলব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের টার্ম শেষ হয়ে আসছে, এরপর একটা কাঠঠোকরা লোক দেন। তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতের ফারমার্স এবং রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে পদচ্যুত না করে পদত্যাগের সুযোগ দেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। তাকে অপসারণ করা হলো না কেন? বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান এক দিন আগে পদত্যাগ করেছেন, তাকে পদচ্যুত করা হলো না কেন? এই ব্যাংকার বলেন, আমি যখন বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিলাম, তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান ছিলেন মামুন। তিনিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের পুরো বোর্ডকে বরখাস্ত করেছিলাম। প্রশ্নের সম্মুখীন যে হইনি তা নয়, আমরা বোর্ডকে বুঝিয়েছি। আমরা তো আওয়ামী লীগ করার জন্য দায়িত্ব নিইনি।
আবার ইলেকটেড হয়ে এলে সমস্যা নেই। বলেছি ঘোর আপত্তি আছে। তাহলে আমরাও থাকব না, আপনারাও থাকবেন না। তিনি বলেন, দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের মালিকানা পাবলিকের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এটি করা গেলে ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ হবে। ব্যাংকগুলোকে ব্যবসার জায়গা হিসেবে না ভেবে জনগণের আমানতের সুরক্ষাও দেওয়া অতি জরুরি। বাংলাদেশে ধনী বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ১৯ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। ধনীর হার বাড়লে গরিবের হারও বাড়ে। অর্থনীতি আয় বৈষম্য এত বেশি যা এশিয়ার অনেক দেশ এর ধারেকাছেও নেই।