এস.আই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রতারক চক্রের ৩৫ লক্ষ টাকার ভূয়া নিয়োগপত্র

0
431

মোজাহারুল ইসলাম ও আবু সুফিয়ানঃ চাকরি যখন সোনার হরিণ বাঘ মামাও তখন ক্ষুধার্ত। অপর দিকে প্রস্তুত সরকার দলীয় মুখোশধারী শিয়াল ভাগ্নে রুপি দালাল চক্ররা। পৃথিবীর সকল দেশ প্রেমিক জানে ও মানে স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন এবং নিজ দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে অন্যরা যখন জীবনকেও বাজি ধরে তখন আমাদের দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর কিছু দায়িত্বহীন অফিসার যে কিসের খেলায় মেতেছে তা তাদের বোধগম্যে তো নেই বরং দালাল চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে দেশে দুর্নীতির  রাজত্ব কায়েমের দৃষ্টান্ত তৈরী করছে এবং সহজ সরল শিক্ষিত অভিশপ্ত বেকার যুবকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যেমনটি করা হয়েছে নীলফামারী জেলাধীন কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রামের মোঃ সুলতান হোসেন ও তাঁর মেয়ে জামাই, ভাগিনা, ভাতিজা সহ আরো অনেককে।২০১৭ ইং সালে ঢাকার বনানী থানার এস আই মোঃ মনিরুজ্জামান সিকদারের (বিপি নং-৬১৮১০৭৭৪৫৩ টিএসআই ট্র্যাফিক উত্তর বিভাগ, ডিএমপি,ঢাকা) নেতৃত্বে সরকার দলীয় মুখোশধারী শ্রী কান্ত কুমার মন্ডল, পিতাঃ শ্রীবাস চন্দ্র, মাতাঃ জোৎ¯œা রানী, সাং- নিত্তানান্দপুর, রায়জাদাপুর অংশ,বাগুটিয়া, ঝিনাইদহ।

মোঃ শফিকুর রহমান, পিতা-মাতা ঃ অজ্ঞাত, বর্তমান সাং – ভূঁইয়া হাউজিং , জাউচড়, ০১ নং সড়ক, রোড নং – ০৪, বাড়ী নং – ৭০৮, হাজারীবাগ,ঢাকা।  মোঃ আব্দুর রহিম, পিতাঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মাতা ঃ আকলিমা খাতুন, সাং- ফাযেলপুর, ডাকঃ শৈলকুপা, শৈলকুপা, ঝিনাইদহ। কোন এক এনজিওর বিশেষ কাজে মোঃ সুলতান হোসেন ঢাকায় কল্যানপুরে কোন এক আবাসিক হোটেলে রাত্রি যাপন করিলে প্রতারক চক্রের শ্রীকান্তের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের উভয়ের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উটে এবং নিয়মিত ভাবে শ্রীকান্তের পক্ষ থেকে পরিকল্পিত ভাবে  যোগাযোগ রক্ষা করে সু-সম্পর্ক তৈরী করে। ফলশ্রæতিতে দেখা গেছে শ্রীকান্ত সহ মোট ০৪ জনের এই টিম বিশাল সিন্ডিগেট প্রতারক চক্রের প্রতিনিধিত্ব করছে।

যার নেতৃত্বে এসআই মোঃ মনিরুজ্জামান। অন্যারা কেউ নিজেকে আর্মির কর্ণেল, কেউ নিজেকে গোটা আর্মি ডিপার্টমেন্টের সু-ডিলার এবং কেউ নিজেকে সরকার দলীয় লিডার ও আর্মি বড় অফিসারের আত্মীয় বলে পরিচয় দেয়। খুব দূত এদের বিরুদ্বে আইনী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে দেশের বহু শিক্ষিত  বেকার  যুবক  ও সাধারণ মানুষকে পথে বসিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে বিশিষ্ঠ জনেরা মনে করে।

অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানে জানা যায় এস.আই মোঃ মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে শ্রীকান্ত কুমার মন্ডল, শফিকুর রহমান ও মোঃ আব্দুর রহিম পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মোঃ সুলতান হোসেনের মাধ্যমে প্রায় পয়ত্রিশ লক্ষ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে তাঁরা মোঃ সুলতান হোসেনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এভাবে যে, তাকে মাধ্যম বানিয়ে তাঁর মেয়ে জামাই, ভাগিনা, ভাতিজা ও নিকট আত্মীয়-স্বজনদের সহ মোট ০৮ জনের  সাথে প্রতারণা করা হয়েছে।অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য মতে প্রতারক চক্রের লোভনীয় অফার গুলো নি¤œরুপঃ

মাত্র চার লক্ষ ছেচল্লিশ হাজার টাকায় মোঃ মনিরুজ্জামান লিমনকে সেনাবাহিনীর হেড অফিসে “অফিস করনিক” পদ পাইয়ে দেওয়া, মাত্র চার লক্ষ আঁশি হাজার টাকায় মোঃ রুবেল হোসেনকে সেনাবাহিনীর হেড অফিসে“ অফিস করনিক” পদ পাইয়ে দেওয়া,মাত্র পাঁচ লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকায় মোঃ সিরাজুল ইসলাম কে সেনাবাহিনীর হেড অফিসে“ মেসওয়েটার ” পদ পাইয়ে দেওয়া,  মাত্র পাঁচ লক্ষ পচাত্তর হাজার টাকায় মোঃ ইমরান হোসেনকে পুলিশ হেড কোয়ার্টাররে “অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ” পদ পাইয়ে দেওয়া, মাত্র চার লক্ষ আশি হাজার টাকায় মোঃ নাসির উদ্দিনকে পুলিশ হেড কোয়ার্টাররে “অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ”

পদ পাইয়ে দেওয়া, মাত্র পাঁচ লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকায় মোঃ জাহিদ হোসেন কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন  অফিসে“ অফিস সহায়ক” পদ পাইয়ে দেওয়া সহ এভাবে মোট আট জনের কাছ থেকে মোঃ সুলতান হোসেন কে মাধ্যম বানিয়ে এসএই মনিরুজ্জামান নেতৃত্বাধীন পুলিশি প্রতারক চক্র সর্বোমোট চৌত্রিশ লক্ষ একানব্বই হাজার  (৩৪,৯১,০০০) টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এসব লেনদেনের ফোনালাপের অডিও রেকর্ড সহ যাবতীয় প্রমাণাদি এখন মোঃ সুলাতান হোসেনের হাতে আছে বলে অপরাধ বিচিত্রাকে জানায়।

এসমস্ত টাকা প্রতারক চক্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়েছে। যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, কুরিয়ার সার্ভিস ও হাতে নগদ। প্রতারক চক্র একেক সময়ে একেক জনকে ভূয়া নিয়োগপত্র ডাকযোগে দিয়েছে এবং নিয়োগপত্রে উল্লেখিত চাকরিতে যোগদানের সময়ের ঠিক পূর্ব মূহুত্বে নিয়োগের সাময়িক স্থগিতাদেশ পত্রও ডাকযোগে পাটিয়েছে। সন্দেহ হলে মোঃ সুলতান হোসেন যার যে অফিসে চাকরিতে যোগদানের কথা তাকে নিয়ে স্ব-স্ব অফিসে যোগাযোগ করিলে প্রতি বিভাগের কর্তৃপক্ষ ঐ সমস্ত নিয়োগপত্রকে ভুয়া ও জালিয়তি বলে উল্লেখ করেন।

মোঃ সুলতান হোসেন যখন নিশ্চিত হলেন যে, তারা প্রাতারিত হয়েছেন তখন তাঁর মাধ্যমে দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে এস.আই মনিরুজ্জামান মিথ্যা মামলায় ঢুকিয়ে জেল হাজতের ভয় দেখায়। আবার কখনো মোঃ সুলতান হোসেনের গ্রামের বাড়ী থেকে পুলিশ দিয়ে এনে ক্রস ফয়ারের হুমকি দেয় এবং বলে সুলতান তুই জানিস মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা পুলিশ। প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ, ফোন রিসিভ না করা আবার কখনো ফোন রিসিভ হলেও হুমকি দেয় যে,ঢাকায় পেলে হত্যা,গুম ইত্যাদি করা হবে।

অতঃপর উপায় অন্ত না পেয়ে মোঃ সুলতান হোসেন অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন আমি নিজে বাদি হয়ে বিজ্ঞ চীফ মেট্র্যাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী পল্টন) আদালত,ঢাকায় প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং ১৬৩১/২০২০ সি আর, ধারা- ৪০৬/৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬/৩৪ দন্ডবিধি বিজ্ঞ আদালত রামপুরা-ন্যাড়াবিয়া শাখায় পিবিআই কে তদন্তের দায়িত্ব দিলে আমি আমার পক্ষ থেকে এস.আই মনিরুজ্জামানের সাথে কথোপোকথনের অডিও রেকর্ড সহ যাবতীয় প্রামাণাদি সহ জমা করি এবং আশা করেছিলাম দ্রæত তদন্তের কাজ শেষ হবে। কিন্তু প্রতারক চক্রের আসামীরা পিবিআইতে স্বাক্ষাতকার দেওয়ার পর থেকেই রহস্যজনক ভাবে তদন্তের গতি হারিয়েছে। এছাড়া বর্তমানে কোভিড-১৯ এর অজুহাত তো দৃশ্যমান (চলবে)।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + 13 =