বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বন্দর থানার আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামী এবার জামিনে বেরিয়ে এসে ধর্ষিতাকে মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, চট্টগ্রাম জেলার সিইপিজেড রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের গার্মেন্টস্ শ্রমিক আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম) ১৯ -কে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সিইপিজেড এলাকার কলসী দিঘীর মোড়ে ফল ব্যবসায়ী মোঃ হাসান দীর্ঘদিন যাবৎ আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম)-কে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসছিল।
এক পর্যায়ে সুচতুর ফল ব্যবসায়ী ধর্ষক হাসান তার লালসা মিটে গেলে ভুক্তভোগী আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম)-কে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে সিইপিজড এর গার্মেন্টস্ শ্রমিক আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম) বাদী হয়ে নগরীর বন্দর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ে করলে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তারা ফল ব্যবসায়ী ধর্ষক হাসানকে (৩৮) কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ সময় সুচতুর ধর্ষক হাসান পুনরায় গার্মেন্টস্ শ্রমিক আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম) ধর্ষিতাকে জেল থেকে বেরিয়ে এসে সামাজিকতার মাধ্যমে বিয়ে করে ঘর সংসারের আশ্বাস দিয়ে বর্তমানে ধর্ষক হাসান বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সে ও তার দলবল নিয়ে ধর্ষিতা গার্মেন্টস্ শ্রমিক আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম) কে পুনরায় মামলাটি আদালত থেকে তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগী ধর্ষিতা সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন।
এই সময় উক্ত ধর্ষিতা গার্মেন্টস্ শ্রমিক আনঞ্জুমান (ছদ্মনাম) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বিয়ের প্রলোভনে পড়ে নিজের জীবন বিপন্ন করতে চলেছি বর্তমানে বিচার না পেয়ে আইনের ধারে ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছি। অথচ ধর্ষক প্রকাশ্যে ঘুরে ফিরলেও প্রশাসন তাকে দেখেও না ধরছেন বলে ধর্ষিতা অভিযোগ করেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত ফল ব্যবসায়ী হাসান সিইপিজেড এলাকার কলসী দিঘীর মোড়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ফল ব্যবসার আড়ালে বিভিন্ন গার্মেন্টস্ নারী শ্রমিকের সাথে সু-সম্পর্কের মাধ্যমে তাদেরকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইতিমধ্যে কমপক্ষে ১ ডজন যুবতী নারীর সম্ভ্রম ও জীবন নষ্ট করেছে বলে ধর্ষিতা কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে উক্ত অভিযোগ করেন।
সিইপজেড গার্মেন্টস্ কর্মী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগ করেন, উক্ত ধর্ষক হাসান আমাকে ও আমার বান্ধবীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে জোর পূর্বক অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের সম্ভ্রমহানী ও বিভিন্ন জায়গায় দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করাতো। এমন সে আমাদের প্রতি মাসের বেতনও জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে আতœসাৎ করতো। সে মূলত ব্যবসায়ী দেখালেও সে প্রকৃত পক্ষে দেশ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাতো এবং বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যেত। সে নারী দেহ ব্যবসার পাশাপাশি অসহায় ভুক্তভোগী মেয়েদের দিয়ে মাদক ব্যবসায়ও করাতো।
কেউ মুখ খুললে তাকে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিওর হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে এবং অসহায় ব্যবসায়ীদের নিকট নারী দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করার মতো গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা এসব অপরাধীদের দৌরতেœ্য আজ জনজীবন অস্থিবির ও অতিষ্ঠ প্রায়। তাই অনতিবিলম্বে এ ধর্ষক হাসানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাকে বর্তমান ধর্ষণ আইনে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান না করিলে দেশে এসব ধর্ষণের আয়োজন কখনো থাকবে না। নগরীতে ধর্ষণ মামলার আসামী জামিনে বেরিয়ে এসে বাদীকে মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি! ধর্ষিতা ধর্ষকের ভয়ে পলাতক রয়েছে।
সম্প্রতি কয়েক দিন ধরে ধর্ষিতা বাড়ী ঘরে ফিরছে না। সন্দেহের তীর ধর্ষক হাসানের দিকে। ধর্ষিতার মামা জানান, ধর্ষক হাসান জেল থেকে বেরিয়ে তার ভাগ্নীকে নানান ভাবে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসলে ধর্ষিতা অন্যত্রে পালিয়ে যান, কিন্তু কয়েক দিন ধরে আর সে ঘরে আসেনি। পরিবারের দাবী ধর্ষক হাসান তাকে অপহরণ ও গুম করেছে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার পরিবার ধর্ষককে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থার আবেদন জানিয়েছেন।