কুয়াকাটার খাজুরা আশ্রায়ন প্রকল্প বসবাসের অনুপোযোগী

0
382

আনোয়ার হোসেন আনু উপকূলীয় প্রতিনিধি: খাজুরা আশ্রয় প্রকল্প। ১৯৯৯ সালে নির্মিত হয়। ৬০টি পরিবারের ৩’শতাধিক মানুষ বসবাস করছে। বর্তমানে তারা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পরেছেন। তাদের নানামুখি সমস্যা সমাধানে শুধুমাত্র আশ্বাস ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মাস যায়, ঘুরে আসে বছর। দুঃখ-কষ্ট লাঘব হয় না। নির্মাণের পর থেকে অদ্য পর্যন্ত চলাচলের জন্য একটি রাস্তা পায়নি তারা। অথচ নির্বাচনের সময় প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির শেষ থাকে না। নির্বাচন শেষ হলে সেই প্রতিশ্রুতি কেউ রাখে না এমন সব অভিযোগ আশ্রয়নবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের ফাঁসিপাড়ায় ‘খাজুরা আশ্রয়ন প্রকল্প’ ১৯৯৯ সালে নির্মিত হবার পর থেকে অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে আছে। ১০টি ব্যারাকে ৬০টি কক্ষ। ৩৬টি টয়লেটের ৩০টি নষ্ট গত ৪ বছর ধরে। মোটামুটি ভাল থাকা ৬টি টয়লেটে সকালে দোতলা লঞ্চের মতো ভীর পরে। মান সম্মান নিয়ে প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে পাচ্ছেন না মা-বোনরা। এখানে বসবাসকারীদের জন্য ৬টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও ৪টি নষ্ট অনেক আগে থেকেই। ২টি ভাল থাকলেও মাঝে মধ্যে বালু ও লবনাক্ত পানি ওঠে। খাবার পানি আনতে হয় অনেক দূর থেকে।

গোসল করতে হয় পাশের খালের ময়লাযুক্ত পানিতে। টয়লেট ও পানির সমস্যা তাদের ভোগাচ্ছে বছরের পর বছর। এখানে বসবাসকারীদের আলীপুর বন্দরে যেতে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা হয় খাজুরা আয়রণ সেতুটি। আশ্রয়বাসীরা চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল করছে। এদিকে চলাচলের জন্য রাস্তা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ব্যারাকের এক মাথা থেকে আরেক মাথা পর্যন্ত থাকে হাঁটু সমান কাদা-পানি। একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিরা শুধু মাত্র দিনের পর দিন আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তা আর হচ্ছে না। আশ্রয়ন প্রকল্পের উঠান আর ঘরের মেঝে সমান সমান। বর্ষা মৌসুমে জোয়ার ও বৃষ্টির পানি ঘরে প্রবেশ করে। ভুক্তভোগীদের দাবী দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দফতরে ধর্ণা দিলেও এগিয়ে আসেনি কেউ। ফলে আজও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাসকারীদের।

ফাঁসিপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, ‘বর্তমানে টয়লেট ও নলকূপের সমস্যা আমাদের ভোগাচ্ছে। জরুরীভিত্তিতে এগুলো সংস্কার করা দরকার’। সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুধীর চন্দ্র দাস বলেন, ‘আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে ঘরগুলো উচু করে মাঠি ভরাট না দিলে ঘরে থাকা যাবে না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন কাজী বলেন, ‘আশ্রয়ন প্রকল্প বাসী বিভিন্ন সমস্যায় আছে। এ সমস্যা দুর করার জন্য আমি চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আশ্রয়নবাসীর টয়লেট ও নলকূপের সমস্যা সমাধানের জন্য চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আমি চেষ্টা করছি একটি মডেল আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ার।’ এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘নলকূপের সমস্যা অচিরেই দূর হবে। টয়লেট ও ঘর সংস্কারের বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করবো।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − 4 =