সিদ্ধিররগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড আটি হাউজিং এলাকায় ২ শতাধিক বাড়ীতে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে গ্যাস সংযোগকারী বাহিনী। অভিযোগ উঠেছে হাউজিং এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব গ্যাস সংযোগ প্রতিদিন গভীর রাতে প্রতিটি বাড়ীতে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বাড়ী থেকে গ্যাস সংযোগ বাবদ ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে নিচ্ছে সিন্ডিকেট বাহিনী। তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী বলেন, হাউজিংয়ে প্রায় ২ থেকে ৩ শত বহুতল ভবন রয়েছে।
বাসা-বাড়ীর গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় এলাকার ১০ জনের একটি দল বাসা-বাড়ীতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে নিচ্ছে। প্রায় ২ শত বাড়ীতে এ অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। হাউজিংয়ের প্রতিটি বাড়ীতে অভিযান চালালেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে। এসব বাহিনীর সাথে রয়েছে তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। আর এসব অবৈধ সংযোগের ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। পত্র-পত্রিকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তিতাস কর্তৃপক্ষ নাম দেখানো অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে আসার আগে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন মাধ্যমে জানিয়ে দিলে তারা গ্যাস সংযোগ সুকৌশলে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। পরে আবার সংযোগ দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে এসে হাউজিংয়ে বাড়ী করেছি। এলাকার কিছু স্থানীয় লোক মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে ২ শতাধিক বাড়ীতে এসব অবৈধ সংযোগ দিয়েছে। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী এরা কারা এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, হাউজিং এলাকার প্রতিটি বাড়ী মালিককে ধরলেই তারা ভালো করে বলতে পারবেন।
গত কয়েকদিন আগে হাউজিং কমিটির সেক্রেটারী জাবেদ অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগের খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে সিন্ডিকেট বাহিনী পালিয়ে যায়। পরে উক্ত বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামরুল ফারুককে জানালে তিনি পুলিশ ফোর্স পাঠান ও নারায়ণগঞ্জ তিতাসের ডিজিএম মমিনুল হককে বিয়ষটি অবগত করলে তিনি তিতাসের কর্মকর্তাদের পাঠান। পরে গ্যাসের পাইপ ও বিভিন্ন মালামাল জব্দ করেন।
তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মোঃ আল-মামুন বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ সংযোগকারীদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
নারায়ণগঞ্জ তিতাসের উপমহাব্যবস্থাপক মমিনুল হক বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিতাসের কোনো কর্মকর্তা যদি এসব অবৈধ কাজে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যারা এসব সংযোগ নিচ্ছে এবং দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত মামলা করা হবে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ আসেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং উক্ত বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষকে সকল আইনগত সহযোগীতা প্রদান করা হবে।