উপকূলীয় প্রতিনিধি পটুয়াখালী: নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ৫দিন। আগামী ২৮ডিসেম্বর কুয়াকাটা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। যতই সময় ঘনিয়ে আসছে ততই ছড়িয়ে পড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। শেষ মুহুর্তে প্রচার প্রচারণাও তুঙ্গে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে নির্বাচনী আলাপ আলোচনা। চলছে উঠান বৈঠক,শো-ডাউন,লিফলেট বিতরণসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা। ভোটারদের ভাগে আনতে দিয়ে যাচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৪জন। কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান জনপ্রিয় মেয়র আঃ বারেক মোল্লা, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন পৌর বিএনপির আহবায়ক আঃ আজিজ মুসুল্লী, জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হাওলাদার এবং হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মোঃ নুরুল ইসলাম মুসুল্লী। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮ জন নারী এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন প্রতিদন্ধিতা করছেন। ভোটার রয়েছে ৮হাজার ১’শ ২২জন। এ নির্বাচনে কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীরা সবাই সমান তালে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছেন নিজেদের বিজয় সু-নিশ্চিত করতে।
সূর্যোদয় সূর্যাস্তের সাগর কন্যা কুয়াকাটা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয় সূর্যাস্তের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায়। এখানে দেশী বিদেশী হাজার হাজার পর্যটকরা আসে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়াকাটাকে আর্ন্তজাতিক মানের পর্যটন নগরী গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য কুয়াকাটাকে ঢেলে সাজাতে ২০১০ সালে কুয়াকাটাকে পৌরসভায় রুপান্তরিত করে।
পৌরসভা গঠন হওয়ার পর ৬ বছর পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব পালন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এর পর ২০১৬ইং সালের প্রথম দিকে নতুন এই পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঃ বারেক মোল্লা বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়। মেয়র নির্বাচিত হবার পর গত ৫বছরে নতুন এই পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে।
মেয়র নির্বাচিত হবার পর আঃ বারেক মোল্লা কুয়াকাটা পৌরসভাকে ঢেলে সাজাতে পর্যায়ে ক্রমে এক’শ বিশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে উন্নয়ন কর্ম চালিয়ে আসছেন। কুয়াকাটা পৌর এলাকার নব্বই ভাগ সড়ক পাকা করণ,পানি নিস্কাশনের জন্য কালভার্ট,পয়ঃনিস্কানের জন্য ড্রেন,কুয়াকাটা পৌর এলাকার মুল সড়ক গুলো আলোকিত করণ,বীচ এলাকা আলোকিত করতে হ্যালোজিন লাইট স্থাপণ,নতুন পৌরভবন,নতুন পানির লাইন স্থাপণ,একটি নান্দনিক ব্রীজসহ একাধিক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৯০ভাগ সড়কের কাজ প্রায় সম্পন্নের দ্বারপ্রান্তে। আগামী ৬মাসের মধ্যে বাকী এসব কাজ সম্পন্ন হবে বলে পৌরসভা সুত্রে জানান। এছাড়া পৌর এলাকার মানুষের সূপেয় পানির অভাব মিটাতে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় গভীর নলকূপ স্থাপণ করেছেন। কুয়াকাটা পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়েছেন নানা উদ্যোগ।
গত পাঁচ বছরের শাসন আমলে মাদক,চাঁদাবাজি,ভূমি দস্যুতা,দখলবাজি,ক্যাডার রাজনীতিকে তিনি আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়নি। ছিল না রাজনৈতিক সহিংসতা। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদে বিনিয়োগ করেছেন। দলমত নির্বিশেষে সকলের আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করেছেন। গরীবের বন্ধু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে আঃ বারেক মোল্লা। তাই এবারও ভোটারা বিপুল ভোটে তাকে মেয়র নির্বাচিত করবেন বলে তিনি মনে করেন।
এসব উন্নয়ন কর্মযজ্ঞকে সামনে এনে দ্বিতীয় বারের মত মেয়র হবার লক্ষ্যে দলীয় প্রতীক নিয়ে এবারও লড়ছেন তিনি। দ্বিতীয় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত কুয়াকাটাকে পর্যটন বান্ধব আধুনিক পৌরসভায় বাস্তবায়ন,গৃহহীনদের বাস স্থানের ব্যবস্থা, পৌর এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন,বেকারত্ব দূরীকরণ এবং সমুদ্রের জেলেদের বিশেষ ভাতার ব্যবস্থাসহ নানা প্রুতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে,ভোটারদের পক্ষে আনতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে টাকার কালো টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা বেচার। পৌর নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের সাময়িক আয়ের উৎস্য তৈরী হয়েছে প্রার্থীরা। কুয়াকাটা পৌর এলাকার বেশির ভাগ বাড়িতেই রয়েছে পুরুষ ও মহিলা কর্মী সমর্থক। কেউ কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী, কেউ মেয়র প্রার্থীর কর্মী সমর্থক। সাধারণ ভোটার নেই কোন ঘরেই। টাকার বিনিময়ে সকলেই কর্মী। এমন পরিস্থিতিতে ভোটারদের মন জয় করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।