কভিড-১৯ মহামারী থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা সংগ্রহের ক্রয় পদ্ধতি,প্রাপ্তি এবং অগ্রাধিকার অনুযায়ী বিতরণ প্রক্রিয়ায় যে কোনাে ধরনের বিতর্ক ও বিভ্রান্তি দূর করতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। মহামারী যেন কোনােভাবেই কারও পকেটপূর্তির উৎসবে পরিণত না হয়। মঙ্গলবার (১২-ই জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানাে এক বিবৃতিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কভিড-১৯ মহামারী থেকে সুরক্ষা পেতে কার্যকর টিকার সংখ্যা এখন পর্যন্ত খুবই কম। উৎপাদন ও সরবরাহে সীমাবদ্ধতা থাকায় এর প্রাপ্তি নিয়ে বিশ্বজুড়ে এক ধরনের প্রতিযােগিতা চলছে। এমন বাস্তবতায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে সরকারের দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যােগ্য। টিকা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেভাবে বাণিজ্যিক চুক্তিটিকে দুই দেশের জি-টু-জি বলার চেষ্টা চালানাে হয় তা অনভিপ্রেত। অন্যদিকে ভারত টিকার অনুমােদনের পরদিনই যেভাবে দ্রুত গতিতে কভিশিল্ডের অনুমােদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে
সেক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসনের বিদ্যমান আইন কতটা মানা হয়েছে এবং কোন কোন নথির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এটি যেকোনাে পর্যায়ের সরকারি কেনাকাটার স্বচ্ছতার পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, দেশে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের ট্রায়াল চালানাের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। আবার দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়েটেকের টিকার ট্রায়াল চালানাের জন্য অনুমােদন মিলেছে। এর মাঝে সংরক্ষণ জটিলতা থাকার পরও কোভ্যাক্স উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফাইজারের টিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করােনার টিকা প্রথম ডােজ প্রয়ােগের এক মাস পর দ্বিতীয় ডােজ দেওয়ার কথা প্রাথমিকভাবে জানা গেলেও এখন স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে দ্বিতীয় ডােজ প্রয়ােগ করা হবে আট সপ্তাহের ব্যবধানে। এ সিদ্ধান্ত কেন কীভাবে পরিবর্তন করা হলো, এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী বা বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নেওয়া হয়েছে কি না তা পরিষ্কার করা হয়নি। টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, টিকা প্রাপ্তির অগ্রাধিকার নির্ণয় প্রক্রিয়া কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, সে সম্পর্কেও জনমনে পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়নি। এই টিকাদান কর্মসূচি সফল না হলে যেমন মহামারীর হাত থেকে দ্রুত স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ফেরা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। সেইসঙ্গে
বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনায় নেওয়া
৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয়ের উদ্দেশ্যই ভেস্তে যাবে।