মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের ‘মা’ আমরা বাংলাদেশেরই ডিমলা-বাইশপুকুরবাসী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে আমদের বাঁচান

0
1029

রংপুর প্রতিনিধিঃ ওদের অনেক আছে, ওরা তবু আমাদের সব কিছু কেরে নিতে চায়।ওরা সাহেব নয়, ওরা দস্যু-ডাকাত। কাঁদো  কাঁদো কন্ঠে কথাগুলো অপরাধ বিচিত্রাকে বলছিলেন নীলফামারী জেলাধীন ডিমলা উপজেলার বাইশপুকুর মৌজায় সাবেক জমিদার প্রজাকুল ও জমিদারের দানকৃত তিনফসলি জমি ও ভিটেমাটিতে বসবাসরত এক বৃদ্ধ মহিলা। বাইশপুকুরে ঐসব  তিনফসলি জমি ও ভিটামাটিতে  বসবাসরত আফতার হোছেন (৬১) অঃবিঃ-কে বলেন আমার একখানা কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন? অঃবিঃ বলেন, মোঃআফতার হোছেন বলেন-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের ‘মা’ আমরা বাংলাদেশেরই ডিমলা-বাইশপুকুরবাসী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে আমদের বাঁচান! মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা যদি আপনার কাছে আশ্রয় পায় তাহলে আমরা আপনার দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও সাবেক জমিদারের দান দানকৃত  ভিটেমাটি ও  তিনফসলি জমিতে কেন থাকতে পারব না? কেন এখানকার ভূমিদস্যুরা তিস্তার পাসে অনেক বড় এলাকা জুরে একফসলি ও অনাবাদি জমি/চর থাকা  সত্ত্বেও আমাদের মত গরীব অসহায় শত শত পরিবারের  ভিটামাটি ও চাষাবাদের তিনফসলি জমিগুলোকে  অবৈধ্যভাবে বিদেশি কোম্পানির কাছে বিক্রয় করে আমাদের খুব দ্রুত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নিয়মিত ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

আপনি আমাদের ‘মা’ আপনি বলেন আমরা কথায় যাব? কি খাব? আপনি তো অনেক বার বলেছেন তিনফসলি জমিতে কোন শিল্পকারখানা নয়। তাহলে তিস্তার পাশে একফসলি ও অনাবাদি জমিতে না হয়ে আমাদের  ভিটেমাটি ও জীবিকার একমাত্র উৎস  তিনফসলি জমিতে কেন?  অঃবিঃ অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমিদস্যুরা বেশ কয়েক বছর ধরে ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করে চলছে।

শুধু তাই নয় ডিমলা  উপজেলার ভূমি সংশ্লিষ্ট অফিস গুলোকে হাত করে ভুয়া ওয়ারিশ বানিয়ে ২০, ৮০ ও ৯০৩ খতিয়ানের অনেক জমির দলিল, রেকর্ড সহ আরো বিভিন্ন কাগজপ্ত্র তৈরি করে ফেলে  এবং বাইশপুকুরের জমিগুলোকে  ভূমিদস্যুরা একফসলি বলে অপপ্রচার করছে।

যেখানে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের কোন বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে অঃবিঃ কে ডিমলা  উপজেলা কৃষি-অফিসার মোঃ সেকেন্ডার আলী বলে এগুলো আসলে দেড় ফসলি জমি,  প্রধানমন্ত্রী এখানে শিল্প কারখানা করার অনুমোদন দিয়েছেন।  অঃবিঃ আপনি কি নিশ্চিত  প্রধানমন্ত্রী  অনুমোদন দিয়েছেন? কৃষি-অফিসার বলেন, ইয়েস!

আসলে দেড় ফসলি জমি বলতে কি বুঝায় এ বিষয়ে তিনি কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। অঃবিঃ ডিমলা উপজেলার সাব-রেজিস্টার শ্রী জীবন রায়ের কাছে খালিসা চাপানির চেয়ারম্যান আতাউর সরকার ও আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাওয়া দালাল শুকারু  সাবেক জমিদারের এসব  জমি কিভাবে দলিল ও  রেকর্ড করছে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষনিক কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে  ডিমলা উপজেলা ভূমি  অফিসার (এসিল্যান্ড) কার্যালয়ে গিয়ে উনাকে পাওয়া জায়নি। অঃবিঃ  ডিমলা উপজেলা নির্বাহী  অফিসার জয়শ্রী রানী রায়ের সাক্ষাৎ করলে তিনি  ব্যাস্ততার মাঝেও সংক্ষিপ্ত ভাবে বলেন, তিনি বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে দেখবেন।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুল চৌধুরী মহোদ্বয়  অঃবিঃ কে বলেন  ডিমলা -বাইশপুকুরে তিনফসলি জমিতে  যদি  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিল্প কারখানা করার অনুমোদন দিয়ে থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নেই। তিনি আরো বলেন কোন এলাকায়  শিল্প কারখানা হওয়া তো সেই এলাকারই উন্নয়ন। তবে জেলা  প্রশাসক  মহোদ্বয় বলেন নবাব বা জমিদারের জমি হচ্ছে সরকারি জমি। এগুলো কেহই ক্রয়-বিক্রয় কতে পারবে না।

এক কথার প্রেক্ষিতে  জেলা  প্রশাসক  মহোদ্বয়  অঃবিঃ কে আরো বলেন, সেখানে যদি অনাবাদি বা এক ফসলি জমি থাকে তাহলে তিনফসলি জমিতে  শিল্প কারখানা কেন! বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সাথেই দেখবেন বলে  অঃবিঃ কে জানান। উল্লেখ্য যে  ভূমিদস্যুতার নজির বিহীন ঘটনাটি  অপরাধ বিচিত্রায় ধারাবাহিক ভাবে প্রচার হয়ে আসছে। ১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষে নবাবি বা জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পৃ্র্বে সাবেক জলপাইগুড়ি জেলাধীন নবাব মোশারফ হোসেন খান বাহাদুর সাহেব  ডিমলা –

বাইশপুকুর মৌজায় মনুহারা চরে ৯ শত একার জমির মধ্যে তিস্তা গর্ভের জমি বাদেও অবশিষ্ট প্রায় ৩ শত একর জমি (খতিয়ান নং ২০, ৮০ ও ৯০৩) প্রজাকুলকে  ভিটেমাটি এবং ফসলি জমি হিসেবে দান করেন যা  বাইশপুকুরবাসীর শত শত পরিবার প্রায় ৭০/৮০ বছর ধরে বংশ পরস্পরায় নিজেদের দখলে রেখে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে এবং বর্তমানে ঐ তিনফসলি জমিগুলোই তাদের জীবিকার একমাত্র উৎস।

  বাইশপুকুরবাসী  অঃবিঃ কে জানায়,  ভিটামাটি ও চাষাবাদের তিনফসলি জমিগুলো বাদেও এই এলাকার বাইরে অনেক অনাবাদি  ও একফসলি জমি আছে। কিন্তু আতাউর চেয়ারম্যান, সেলিম সরকার লেবু, দালাল রবিউল শুকারু,দালাল হাসানুর সহ সমস্ত দালাল চক্র জেদ করে অবৈ্ধ্ ভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে বাংলা সান সোলার এনার্জি লিঃ এর কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।

আমরা এখন কোথায় যাব? কি করব? অপরদিকে  অপরাধ বিচিত্রায় ধারাবাহিক ভাবে  বাইশপুকুরের খবর প্রচার হওয়ায় দালাল চক্রের হুমকি ধমকির পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে  অপরাধ বিচিত্রাকে সত্য প্রকাশে বন্ধ রাখার অপপ্রচার অব্যাহত। প্রকৃত পক্ষে “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপষহীন  অপরাধ বিচিত্রা”(চলবে)।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − sixteen =