ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে সাধারণ ও মেয়াদি হিসাব খোলা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কিছুদিন আগে হঠাৎ করে প্রধান ডাকঘরগুলোতে সাধারণ ও মেয়াদি হিসাব খোলা বন্ধ করে দেওয়াতে গ্রাহকদের মধ্যে হতাশা ও আতংক সৃষ্টি হয়। পরে এই হিসাব খোলা ও বিনিয়োগের নতুন নিয়ম চালু করা হয়। তবে অনলাইনে নতুন করে হিসাব খোলা ও বিনিয়োগের অনেক জটিল নিয়ম করার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিয়মের জটিলতায় ঘুরপাক খাচ্ছেন। আগে সাধারণ ও মেয়াদি হিসাবে এক নামে ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করার সূযোগ ছিল। হঠাৎ করে বিনিয়োগের এই সিমা নামিয়ে বর্তমানে এক নামে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার সুযোগ রাখা হয়। একারণে অনেক গ্রাহকের জিজ্ঞাসা পূর্বে যারা ১০ লাখের বেশি বিনিয়োগ করেছেন তারা এখন কী করবেন। নতুন নিয়মে টিন নম্বর ছাড়া ১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যাবে। এর বেশি বিনিয়োগ করতে হলে টিন নম্বর দিতে হবে, ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে জমা দিতে হবে ও প্রতিবার জমার সময় গ্রাহকের ব্যাংক স্টেটম্যান্ট জমা দিতে হবে যা অনেক জটিল ও সময় সাপেক্ষ। গ্রাহকরা বলছেন তারা চেকের মাধ্যমে টাকা জমা করতে হলে একাউন্টে যদি চেকে উল্লিখিত টাকা না থাকে তবে যথারিতি চেক ফেরত আসবে ও গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা হবে না।
সকল গ্রাহক তার ব্যাংক হিসাবে কত টাকা আছে তা নিশ্চিত হয়েই ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে চেক জমা দিয়ে থাকেন যেমন সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে চেকের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হলে গ্রাহক তার ব্যাংক হিসাবে কত টাকা আছে তা নিশ্চিত হয়ে চেক জমা করে।
কাজেই মেয়াদি ও সাধারণ হিসাবে টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবার ব্যাংক স্টেটম্যান্ট জমা দেওয় এক ধরনের হয়রানি বলে গ্রাহকগণ মনে করেন। আগে সাধারন ও মেয়াদি হিসাব খোলার সময় ছোট দুইটি ফরম পূরণ করে নতুন একটি হিসাব খুলতে মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগতো। বর্তমানে এই হিসাব খুলতে নতুন ছাপানো ফরম পূরণ করতে হমিসিম খাচ্ছেন বিনিয়োগকারী।
ফরম পূরণ করার সময় গ্রাহকের বিশাল তথ্য দিতে হচ্ছে যা সময় সাপেক্ষ। ফরম পূরণ করে নুতন হিসাব খোলার জন্য টাকা জমা দিতে গ্রাহককে কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে এক থেকে দুই ঘন্টা ব্যয় করতে হচ্ছে। অধিকন্ত কাউন্টারের ভেতরে বসা কর্মচারী লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকদের সাথে ভাল আচরন করেন না।
লাইনে দাঁড়ানো কোন গ্রাহক কাউন্টারের ভেতরে বসা কর্মচারীকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে ধমকি মারছে। অসংখ্য গ্রাহক হতাশা প্রকাশ করে বলছেন সাধারণ ও মেয়াদি হিসাব খোলার ও টাকা জমা দেওয়ার যে নতুন নিয়ম করা হয়েছে তা অনেক জটিল, সময় সাপেক্ষ ও হয়রানির নামান্তর।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে হিসাব খোলা ও বিনিয়োগে নিরাৎসাহ করার জন্য এমন সব নিয়ম করা হয়েছে বলে গ্রাহকরা মনে করছেন। তারা বলছেন পূর্বে যেখানে এক নামে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যেত সেখানে বর্তমানে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করার সিমা নির্ধারণ করার মানে হচ্ছে এখানে যাতে কেউ বিনিয়োগ না করে।