জলবায়ু বিপর্যয়: ব্যর্থ বিশ্বনেতাদের ‘খাঁচায় বন্দি’ করা উচিত

0
379

জলবায়ু বিপর্যয় রোধে ব্যর্থতার দায়ে বিশ্বনেতাদের ‘খাঁচায় বন্দি’করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘এমিশন নাও বাংলাদেশ’।

বুধবার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতীকী প্রতিবাদী কর্মসূচিতে সংগঠনটির নেতারা এ মন্তব্য করেন।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে প্রকৃতি চরম অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক দেশগুলো। এই বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশের এক কোটি ৯০ লাখেরও বেশি শিশু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব শিশুর এক-চতুর্থাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম।

আইপিসির এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে আশংকা প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে এই শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। দেশের ১৯টি জেলার প্রায় ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে গৃহহীন হবে প্রায় দুই কোটি মানুষ। এসবের ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদন, সুপেয় পানির সংকট দেখা দিবে, বাড়বে নিত্য নতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অসুখ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে ঘরহারা মানুষের সংখ্যা। ফলাফল হিসেবে ইতোমধ্যে শহরাঞ্চলে বস্তিবাসীর সংখ্যাও বেড়েছে। বেড়েছে বজ্রপাতের পরিমাণও।

শিল্পোন্নত দেশগুলোর স্বদিচ্ছা না থাকায় জলবায়ু বিপর্যয় ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের লাগাম কিছুতেই টেনে ধরা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেন নিঃসরণের হার না কমে বরং বাড়ছে। ২০১৮ সালে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের হার ২ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ৭০০ কোটি টনের রেকর্ড ছুঁয়েছে। আবার শিল্পবিপ্লব-পরবর্তী যুগে উন্নত দেশগুলোর মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের কারণে গ্রিনহাউজ গ্যাস বায়ুমণ্ডলে আটকা পড়ে বৈশ্বিক উষ্ণতার মাত্রাকে ভয়াবহ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

বক্তারা আরও বলেন, শিল্পোন্নত দুনিয়ার বিশেষ করে জি-২০ দেশগুলোর লাগামহীন কার্বন নিঃসরণ এবং মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এই অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবিলায় এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কপ-২৬ অনুষ্ঠিত হলেও শুধুমাত্র আলোচনা ছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ বা কোনো প্রকার সফলতা দেখা যাচ্ছে না।

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি জলবায়ু বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্বনেতারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। পৃথিবীব্যাপী প্রাণ-প্রকৃতির অস্তিত্ব যখন বিনাশের পথে, এখনও তারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। যার কারণে বাংলাদেশের মতো সমুদ্র উপকূলের দেশসমূহের জন্য এ বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 + thirteen =