নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা

0
394

 আসছে ১৬ জানুয়ারি। অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে বিরাজ করছে এখন উৎসবের আমেজ। সেই সাথে রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনাও। শহর থেকে পাড়া-মহল্লার সবখানে এখন নানা গুঞ্জন, এবারের নির্বাচনে কে হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের নগরপিতা বা নগর মাতা। এ নিয়ে চলছে শহর জুড়ে নানা কৌতুহল। তবে এর শেষ টা দেখতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১৬ জানুয়ারি  পর্যন্ত। আর নির্বাচনকে সাধারন জনগনের কাছে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন। এ নির্বাচন  যেন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসন। এ নির্বাচন  কতটুকু ফেয়ার এলেকশন হয় সেজন্য সারা দেশের মানুষ উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে নারায়ণগঞ্জ এর নির্বাচনের দিকে।এ নির্বাচনেই রয়েছে রাজনীতির নানা  হিসেব-নিকেশ। আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পাবে নির্বাচন কমিশন কতটুকু আন্তরিকতার সাথে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পেরেছে।

 তাই এ নির্বাচনকে সফলভাবে সম্পন্ন করা এখন একরকম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচন কমিশনের উপর। তাই ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে কঠোর  বার্তাও পাঠানো হচ্ছে প্রশাসনের সর্বস্তরে। যেন প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তাগণ গুরুত্বের সাথে তারা তাদের দায়িত্ব পালন  করেন। কোন ক্ষমতাধর ব্যক্তি যেন এ নির্বাচনে কোন রকম প্রভাব বিস্তার বা কেন্দ্র দখল করতে না পারে, সেইসাথে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোন প্রার্থীকে বা প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর হুমকি না দিতে পারে সেজন্য চলছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান। বলা চলে, স্থানীয় প্রশাসন একরকম কঠোর অবস্থানের মধ্য থেকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে নির্বাচনী এলাকা গুলোকে। এছাড়াও, নারায়ণগঞ্জের কোন কোন কেন্দ্রগুলো একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ হোক সেটা কম বা বেশি সেগুলো নিরাপদ করতে কাজ করছে প্রশাসনের একাধিক টিম। যেন ১৬ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন সাধারণ ভোটারগণ নির্বিঘ্নে এবং স্বাচ্ছন্দে তাদের  ভোটদান সম্পন্ন করতে পারেন। এ নির্বাচন যেন কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেজন্য প্রশাসনের  পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এদিকে ভোটগ্রহণের দিন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আলোচিত ৯ নং ওয়ার্ডে নারী সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা আর গণসংযোগে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। 

 ভোটের আগ মুহূর্ত ও ভোটের দিন কোথাও কোনরকম বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা হতে পারে কিনা এ বিষয়ে সরেজমিনে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে গতকাল  জালকুড়ি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ড ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানার চেষ্টা করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, এবার যে ক’জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের অধিকাংশই হেভিওয়েট প্রার্থী এবং তারা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর।তাই এ নির্বাচনে যে কেউ ভোটের ফলাফল নিজের দিকে বাগিয়ে নিতে কেন্দ্র দখলের মতো যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। এ নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রভাব বিস্তারের মত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বোধ করছেন  এলাকাবাসী।  আরো জানা যায়, এ নিয়ে চলছে চুপিচুপি নানা আয়োজন। উদ্দেশ্য যেকোনো মূল্যে কাউন্সিলর হতে চাই। এমতাবস্থায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় জনগণ। আরেকজন আলোরতরী প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান কাউন্সিলর ইসরাফিল প্রধান করাত প্রতীক নিয়ে আবারো কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি টানা দু’বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন।

 সেই থেকে তিনি জালকুড়ি এলাকায় একটি বিশাল সাম্রাজ্য আর ব্যক্তিগত বাহিনী তৈরি করেছেন। তৃতীয়বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার উচ্চ আকাঙ্ক্ষায় একরকম মরিয়া আর বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ মাসুদুর রহমান ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে তিনিও কাউন্সিলর হওয়ার নেশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন। জানা যায়, তিনি বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন এর ব্যানারে গড়ে তুলেছেন এলাকায় নিজের আধিপত্য। এছাড়াও তার বাবা ছিলেন সাবেক গোদনাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। পূর্ব থেকেই জালকুড়ি এলাকায় তাদের আধিপত্য। তাই এ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে মূল লড়াইটা হবে এ দুজনের মধ্যে ।তাই আগামী ১৬ জানুয়ারি তে হতে পারে এ এলাকায় বড় ধরনের সহিংসতা আর  রক্তপাতের মত ঘটনাও ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় এখন এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গোপন সূত্র থেকে এমন আভাস পেয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের নিশ্চয়তা চেয়ে জরুরীভাবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × three =