শাহানাজ পাটোয়ারী : গাজীপুরে বাংলাদেশ সরকারের প্রাচীনতম ও অন্যতম সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গাজীপুর সদর ও সদর দ্বিতীয় যুগ্ম সাব রেজিষ্ট্রি অফিস এবং জেলা রেকর্ড রুম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার নতুন ভবনে স্থানান্তর না করার দাবি উঠেছে সর্ব মহলে। জানা যায়- উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো গাজীপুর জেলা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয়ের ভেতরে সরকারী বেসরকারী ব্যাংক ও প্রশাসনের অতি নিকটে এবং মূল শহরের প্রাণকেন্দ্রে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই জনসেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু অতি সম্প্রতি মূল শহর ও বর্তমান অফিস থেকে ৩/৪ কিলো দূরে মারিয়ালি নামক গ্রামের জনমানবহীন মাদক কেনা-বেচার অভয়ারণ্য নির্জন ধান ক্ষেতে তরিঘরি করে তৈরি করা নতুন ভবনে স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে। এ খবরটি জনগণের নিকট চাউর হলে এবং স্থানান্তরিত হবার চিঠি সচেতন মহলের দৃষ্টি গোচর হলে স্থানীয় জনতার মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অফিস কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বললে নতুন ভবনে ওই অফিসগুলো স্থানান্তর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ মতামত পাওয়া যায়। অনেকে বলেন- সাব রেজিষ্ট্রি অফিসগুলোতে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়। আর সে জন্য প্রয়োজন হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
যা মারিয়ালী নামক স্থানে কখনো ছিলনা এবং বর্তমানেও নেই। আর ভবিষ্যতে হবে কিনা, তা নিয়ে সচেতন মহল সন্দিহান। শুধু তাই নয়, মারিয়ালীতে নেই কোন সরকারি বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠান। এমনকি বড় কোন মার্কেট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যে কারণে সেখানে অনবরতই নিরাপত্তার অভাব বিরাজিত। অনেকে মনে করেন, বর্তমান সময়ে সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধভাবে দেশী-বিদেশী অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ খুন-খারাপি করে থাকে। সেখানে জমি-জমা বিক্রির টাকা লেনদেন করার পর মারিয়ালি থেকে নিরাপদে বাড়ি ফেরা প্রায় অসম্ভব হবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
মারিয়ালীতে নির্মাণকরা সাব রেজিষ্টি ও রেকর্ড রুমের ভবিষ্যত নিয়ে ঠিক ওই কারনেই আজকে চিন্তার ভাজ পড়ছে সকলের কপালে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট অফিসের অনেকেই জানিয়েছেন, মারিয়ালিতে উক্ত অফিস গুলো স্থানান্তরিত হলে, সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে অফিসে আগত সেবা গ্রহিতাগণ, দলিল লেখক, ভেন্ডার, অফিসের নকল নবীশ ও অফিস স্টাফদের অসুবিধা প্রকট হবে। কেননা, স্থানটিতে যাতায়াত সমস্যাসহ রয়েছে ব্যাংক সংকট, নিরাপত্তার অভাব।
এ ছাড়া মহিলা নকল নবীশদের বিড়ম্বনাও কম হবেনা। রয়েছে তাদের সম্ভ্রম হারানোর সম্ভাবনা।এ ছাড়া রেকর্ড পত্র সংরক্ষণের অনিরাপত্তাও কম নয়। রাতের আধারে দূর্গম ওই স্থানে নথিপত্র গায়েব হবার আশঙ্কাও বিদ্যমান। ফলে সার্বিক দিক বিবেচনা করে গাজীপুর সদর ও ২য় যুগ্ম সাব রেজিষ্ট্রি অফিস এবং জেলা রেকর্ড রুম ওই নব নির্মিত ভবনে মারিয়ালিতে স্থানান্তর না করার দাবি জানিয়েছেন সর্ব মহল।
তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তারা আরো দাবি করে বলেন, গুটি কয়েক চক্রান্তকারীর ফাঁদে পা না দিয়ে গাজীপুর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থা, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক এবং অন্যান্য সরকারি অফিসের পাশে ও যাতায়াতের সুবিধা সম্বলিত নিরাপদ স্থানে কমপ্লেক্স নির্মাণ করে অফিসগুলো স্থানান্তর করলে সরকারের রাজস্বসহ সেবা গ্রহিতা ও দাতাগনের অর্থ নিরাপদ থাকবে। বাড়বে সেবার মান।