মোজাম্মেল সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে দিনদিন চোরাকারবারীদের উৎপাত বেড়েই চলেছে। এই সীমান্তে ৩টি শুল্কস্টেশন থাকার পরও চোরাকারবারীরা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে নিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে সরকারে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা, পাথর, মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, গরু, ঘোড়া, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, মোটর সাইকেল, চাল ও অস্ত্র পাচাঁর করছে। এই চোরাচালানকে কেন্দ্র করে জনিক মিয়া নামের এক যুবককে টিপিয়ে হত্যা করে সীমান্তে ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ মদ জব্দ করেছে বিজিবি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, পুরান লাউড়, শাহ-আরেফিনের মোকাম, মনাইপাড় এলাকা দিয়ে আমিনুল ইসলাম, জর্জ মিয়া, রফিক মিয়া, এরশাদ মিয়া, চাঁনপুর সীমান্তের রাজাই, নয়াছড়া, বারেকটিলা এলাকা দিয়ে আবু বক্কর, আলমগীর, সাহিবুর রহমান, বুটকুন মিয়া, রফিকুল ইসলাম, টেকেরঘাট সীমান্তের রজনীলাইন, বরুঙ্গাছড়া, বড়ছড়া, ভাঙারঘাট, খনিপ্রকল্প এলাকা দিয়ে ইসাক মিয়া, কামাল মিয়া, রতন মহলদার, মানিক মহলদার, বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ইয়াবা কালাম মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি,
রঙ্গাছড়া ও সুন্দরবন এলাকা দিয়ে লেংড়া জামাল, মস্তো মিয়া ও চারাগাঁও সীমান্তের এলসি পয়েন্ট, কলাগাঁও, বাঁশতলা তেতুলগাছ ও লালঘাট এলাকা দিয়ে খোকন মিয়া, রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, বাবুল মিয়া, হারুন মিয়া, কদ্দুস মিয়াগং নিজেদেরকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কয়লা, পাথর, মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, গরু, ঘোড়া, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, মোটর সাইকেল, চাল ও অস্ত্র পাচাঁর করছে এবং এসব অবৈধ মালামাল থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে করছে উত্তোলন করছে মোটা অংকের চাঁদা।
প্রতিদিনের মতো গত সোমবার ১৪ মার্চ ভোরে টেকেরঘাট সীমান্তের ভাঙ্গারঘাট এলাকা দিয়ে চোরাই ভারতে গেলে জনিক মিয়া ২৫ নামের বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ফেলে রেখে যায় ভারতীয় যুবকরা। এঘটনা জানতে পেরে স্থানীয়রা সকাল ১০ টায় আহত যুবককে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করে। মৃত জনিক মিয়া উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বড়ছড়া শুল্কস্টেশন এলাকার জিলু মিয়ার ছেলে।
সকাল ১০টা থেকে পৃথক অভিযান চালিয়ে লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩ এর ১০ এস পিলার সংলগ্ন শাহ আরেফিন এলাকা থেকে ৯২ বোতল ও চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা এলাকা থেকে ৪২ বোতল ভারতীয় মদ পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করেছে বিজিবি। যার মূল্য প্রায় ২লক্ষ টাকা।
কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করতে পারেনি। তাই সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য বিজিবির পাশাপাশি র্যাব ও পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ জরুরী প্রয়োজন বলে দাবী করেছেন সচেতন এলাকাবাসী। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- সীমান্তে এক যুবককে হত্যার ঘটনাটি জানতে পেরেছি। কিন্তু এব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করেনি।