বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন। সরকারের একাধিক মন্ত্রী বলেছেন, দুর্নীতিবাজ যেই হোক কোন ছাড় দেওয়া হবে না। কিছু দুর্নীতিবাজ যে দুর্নীতি করে ধরা পড়ছে না তা নয়। তবে দেশে অনেক বড় বড় দুর্নীতিবাজ বিশালাকারের দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে। বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু আজও ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন বলে অনেকেই হতাশ। এরকম অনেক বাচ্চুই অপরাধ করে অধরা রয়ে গেছেন। আজ দেশের যেদিকে তাকাই সেদিকেই দুর্নীতি পসরা বসিয়েছে। বোর্ড সভার সদস্যদের সাথে যোগসাজসে ঋনের নামে ব্যাকের টাকা লুট, সরকারী অফিসগুলোতে ঘুষ না দিলে হয়রানি, রাজনীতির নামে দূর্বিত্তায়ন, চাঁদাবাজি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি দেশের প্রতিটি রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। টাকা পাচার যেন কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। কানাডার বেগমপাড়ায় বড় কর্তা ব্যক্তিদের সেকেন্ড হোম নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক সংবাদই প্রচারিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এসব সেকেন্ড হোমের অভাব নেই। দেশের মানুষকে জিম্মি করে অন্যায়ভাবে অর্জিত এসব টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে দেদারসে।
এসব পাচারের সাথে সরকারের আমলা, রাজনীতিবিদ ও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী জড়িত বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। সম্প্রতি বার্লিন ভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দুর্নীতির একটি সুচক প্রকাশ করে। উক্ত সুচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ তম। টিআই এর বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড: ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির চিত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর পরিবর্তন হয়নি।
চার বছর ধরে এই স্কোরে রয়েছে বাংলাদেশ। দুর্নীতির পেছনে যেসব উপাদান কাজ করছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতা, মত প্রকাশ ও জবাবদিহিতার অভাব। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির দুষ্ট চক্রের গ্রাস থেকে বের হতে পারিনি।
করোনাকালে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সবচেয় বড় দুর্নীতি হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। সাবেক তত্বাধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড: এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে দুর্নীতির সংক্রমন বেশ ব্যাপক। এ অবস্থার উন্নত হচ্ছে না। এ অবস্থার উন্নত না হলে দেশে অতি দ্রুত চরম বিশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তার সংকট দেখা দিবে।