অপরাধ বিচিত্রা : বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব (বয়স ৭০) দুই বছর যাবত ক্যান্সারে ভুগছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাতে না পারায় তার কানের টিউমারটি এখন ভয়াবহ আকার ধারন করে ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিন মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় অপেক্ষা করার পর গত ১৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার তার বাম কানের চারিদিকে ৪ ঘন্টা সময় ধরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর কয়েকটি অংশের নমুনা পুনারায় বায়োপসি করার পর কর্নের ভিতরের অংশে ক্যান্সার পাওয়া গেছে এবং তা ভিতরের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। তার ড্রেসিং, ঔষধ, ইনজেকশন ও বিভিন্ন থেরাপির জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তবে চিকিৎসকগণ বলেছেন, ঠিকমতো ঔষধপথ্য খাওয়াতে এবং সঠিকভাবে থেরাপি দিতে পারলে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও কর্মঠ হয়ে উঠবেন।
আব্দুর রব একজন নিবেদিত ও আত্মোৎসর্গকৃত আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মী। দেশটিকে স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন আব্দুর রব। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং ক্যাম্পের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও তালিকাভুক্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বিভিন্ন যুদ্ধ ও অপারেশনে অংশগ্রহণ করে অকুতভয় বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আদর্শ, নির্লোভ ও নিবেদিত ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হলে কি হবে! তিনি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইকারীদের অনৈতিক প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় তিনি এখনও বাংলাদেশের সরকারি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেননি। ফলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়া তো দূরের কথা তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি স্বীকৃতিটুকুও এখন পর্যন্ত পাননি। রণাঙ্গনে তার সহযোগী ও সাথীরা তার অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা আজ সরকারি নিবন্ধিত মুক্তিযোদ্ধা। তারা আব্দুর রবকে ওস্তাদ বলে সম্বোধন ও শ্রদ্ধা করেন। তাদের ওস্তাদের সনদ নেই এই দূ:খে তার সহযোগী সঙ্গীরাও দূ:খীত ও মর্মাহত।
আব্দুর রব আওয়ামী লীগের একজন মাঠ পর্যায়ের নিবেদিত কর্মী হিসেবে তাকে এক নামে সকলেই চিনেন এবং জানেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সকল নেতা এবং সমাজকল্যাণ বিভাগে কয়েকবার আবেদন, নিবেদন ও ধর্ণা দিলেও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আর্থিক সাহায্য বা সাহযোগিতা পাননি।
সৎ, আদর্শ, নীতিবান ও পরোপকারী আব্দুর রব ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে বিজয়ী হলেও সামান্য শ্রমিক হিসেবে জীবনসংসার এবং জীবনযুদ্ধে পরাজিত আব্দুর রব তার চিকিৎসা চলাতে গিয়ে সর্বস্বহারা হয়ে তার সামান্য টিনের ঘরটিও বন্ধক রেখেছেন। নিজের জীবনকে বাজি রেখে যেই মুক্তিযেদ্ধা লাল-সবুজের পতাকার এই দেশটি ছিনিয়ে এনে আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন তিনি আজ তিলে-তিলে ও ধুকে-ধুকে এই ধরণী হতে ঝড়ে পড়বেন-এটাকে কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত সরকারি বা রাজনৈতিক কোনো দল, মহল, গোষ্ঠী বা বিত্তবান কারো কাছ থেকে কোনো সাহায্য, সহযোগিতা বা শান্তনার আশ্বাসটুকুও তিনি পাননি।
যদি কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সৎ, ত্যাগী ও দেশপ্রেমিক এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সাহায্যের জন্য তার ০১৯১৮-০৮৭২৩৭ নাম্বার মোবাইল ফোনে ‘নগদ’ এর মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য করতে অথবা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তিন তলায় ৩০৩ নং নাক কান ও গলা ওয়ার্ডের ১৪ নং বেডে দেখা করার জন্য সনির্বদ্ধ অনুরোধ করা যাচ্ছে। ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকনা বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মরুভূমি সাগর অতল।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে তিনি আবারো জীবনসংগ্রামে আত্মনিয়োগ করে তার ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীকে সৎ উপার্জনের মাধ্যমে একমুঠো ডালভাত তুলে দিতে পারবেন-যদি আমরা সকলেই আমাদের সামান্য সাহায্য, সহযোগিতা ও আশীর্বাদের হাত বাড়িয়ে দেই। কেউ যদি আব্দুর রবকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে না পারেন তাহলে তিনি এই দূ:খের সংবাদটি পাঠ করার পর লাইক এবং শেয়ার করলে হয়তো আব্দুর রবকে সাহায়্যের জন্য কোনো দাতা এগিয়ে আসতে পারেন।