হিতেন্দ কুমার চৌধুরী নামের এক শিক্ষক এইচ এস সি পাশ না করেও নীল ক্ষেত থেকে সার্টিফিকেট কিনে চিটাগাং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাষ্টার্স পাশ করে। ১৯৭৯ সালে সে ব্রাহ্মন বাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে ইন্টার মিডিয়ট পরীক্ষায় ফেল করে এই কান্ডটা ঘটিয়েছে। এরপর রায়পুর রুস্তম আলী কলেজ নামে ( লক্ষ্মীপুর জেলা) উইফ আউট নিয়োগ পরীক্ষায় ঘুষ দিয়ে এই চাকরি টা নেয়। সে সময়ের অধ্যক্ষ ছিলেন মোহাম্মদ উল্ল্যা। উনি এখন বেঁচে নেই। কলেজ ৯৭ সালে এম পি ও ভুক্ত হয়। কিন্তু যখনই মিনিষ্ট্রি অডিট আসে অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে অডিটের নামে বিপুল অংকের টাকা গ্রহণ করে অডিট করতে আসা অফিসার কে হাজার বিশেক টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলে। গত সাতাশ বছর সে এই চাকুরী টা করে যাচ্ছে। প্রতিটা ভর্তি শিক্ষক নিয়োগ আর ফর্ম ফিলাপের সময় শিক্ষক কর্মচারী দের কাছ থেকে প্রিন্সিপাল সাইফুদ্দিন এর সহযোগিতায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবেই সে রায়পুরে নির্মাণ করে পাঁচতলা অট্টালিকা।
গত ফর্ম ফিলাপের সময় আমি ফর্ম ফিলাপের সময় সে হয় আহব্বায়ক। আমি ছিলাম সদস্য। সে একটা ছেলে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ফর্ম ফিলাপ করতে এলে আরও টাকা দাবি করে এবং একটা পর্যায়ে ছেলেটাকে তার পায়ের জুতা দিয়ে প্রচন্ডরকম মারধর করে। বাঁধা দিলে সে আমার মাথায় জুতা ছুড়ে মারে। এতে করে প্রচন্ডরকম আঘাতে আমি ব্রেইন স্ট্রোক এ আক্রান্ত হই এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমার ইংরেজি বিভাগের সহর্কমী ত্রিদ্বীপ চন্দ্র পাটওয়ারী আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় টিচার্স রুমে নিয়ে যায় হাত ধরে জড়িয়ে ধরে।
দুই ঘন্টা পর আমার জ্ঞান ফিরে এলে আমি উপাধ্যক্ষ সাহেব কে কোন ঘটনা না বলে ফরম ফিল আপে আর কাজ করতে পারবো না বলে ছুটি নিয়ে সিএনজি করে সোজা লক্ষ্মীপুরস্থ আমার বাসায় চলে আসি। আমার স্ত্রী তখন ঢাকায় তার বোনের বাসায় অবস্থান করছিল। আমি বাসায় ফেরার পর মিনিট ১৫ পর আবারও স্ট্রোক এ আক্রান্ত হই এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
সতের ঘন্টা পর আমার জ্ঞান ফিরে এলে আমি ভোরে বড় ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় রওয়ানা হই। সিটি স্ক্যান, এম আর আই, এম আর ভি করাই এবং বুকের এক্স রে করাই। তাছাড়া অনেক রকম রক্তের পরীক্ষায় করাই। প্রায় ১৫ দিন আমি ঢাকার ম্যাডিনোভার ডাক্তার আনোয়ার উল্লা স্যারের তত্বাবধানে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি হই। এই পর্যন্ত আমার ত্রিশ লক্ষ টাকা খরচ হয়।
ফর্ম ফিলাপের কাজ করায় তারা আমায় মাত্র দুই হাজার টাকা প্রদান করে। আমার প্রমোশন প্রাপ্তির সময় অধ্যক্ষ আমার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা ঘুষ নেয় আমারই সহকর্মী জসিম উদ্দিন এর মারফত এ। সাংবাদিক দের আমি কিছুই অবহিত না করালেও কোথথেকে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক রা কলেজে এলে সবাই আমায় ফাসানোর জন্য অস্বীকার করে। এরপর গতকাল আমাদের কলেজে শিক্ষক দের নানা বিষয় নিয়ে মিটিং চলায় হঠাৎ করে সাংবাদিক রা আসে। যা আমি সত্যিই অবগত ছিলাম না।
মিটিং এ দেখি আলোচনা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে আমি নাকি এই দরখাস্ত তৈরি করেছি। কিন্তু আদৌও আমি তা করিনি। মিটিং শেষ এ হঠাৎ সাংবাদিক রা এলে আমি সাংবাদিকদের সব সত্য তুলে ধরি। মিটিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে হিতেন্দ্র কুমার চৌধুরী ও তার ছেলে মিথুন আমাকে গুন্ডা লেলিয়ে দিয়ে পাটওয়ারী রাস্তার মাথা নামের একটা যায়গায় সিএনজি থেকে নামিয়ে মারধর করে ও আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়।
আমি লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল এ ব্যান্ডেজ করে বাড়ি ফিরে আসি। গতরাত থেকে আমাকে প্রানে মারার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে নানা নাম্বার থেকে। এই হচ্ছে আমার অবস্থা। ১৯৮৪ সালে চিটাগাং কমার্স কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অনার্স ও মাষ্টার্স পাশ করি কৃতিত্বের সংগে। অথচ আজ আমি সবার শত্রু তে পরিনত হয়েছি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে।