ইটভাটাগুলোর তান্ডব চলছেই

0
878

দেশের বিভিন্ন স্থানে ইভাটাগুলোর তান্ডব যেন থামছে না। এর নাগাল ধরার মত কোন কর্তৃপক্ষ বা অভিভাবক যেন বরাবরই অনুপস্থিত। ইটভাটা আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বনভূমি, কৃষিজমি ও জলাভূমি ইত্যাদির অতি নিকটে গড়ে ওঠছে একের পর এক ভাটা। ভাটার মালিকরা প্রভাবশালী। ওদের রাজনৈতিক পরিচয় হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী। এক কথায়ই সরকারী প্রশাসন চুপ। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন সকলেই যেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকছে। ফলে ভাটার মালিকরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। কৃষিজমি দখল করে, জলাশয় ভরাট করে প্রতিদিনই নির্মিত হচ্ছে এসব ভাটা। কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের মাটি ভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করে। তবে অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী ভাটার মালিকরা কৃষকদেরকে টপসয়েল বিক্রি করতে চাপ দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করে। ইট প্রস্তুত, ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ৬ ধারা মতে ইট পোড়ানোর কাছে জ¦ালানি কাঠ ব্যবহার করা যাবে না।

অথচ দেশের অধিকাংশ ভাটায় অন্যায়ভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খনিজ কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি ইটভাটার সামনে দু-এক ট্রাক খনিজ কয়লা স্তুপ করে রাখা হয় যাতে কাঠ পোড়ানোর বিষয়টি বোঝা না যায়। জ্বালানি কাঠ একটু দূরে স্টক রুমে রাখা হয়।

ইট পোড়ানোর সময় এসব জ্বালানি কাঠ ভাটায় চলে আাসে। লোকালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে ইটভাটা চলমান থাকার কারণে নিকটস্ত লোকজন শ্বসজনিত সমস্যায় ভুগছে। নিকটস্ত কষিজমির ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আর বন তো উজার হচ্ছেই। অনেক গাছে ফলন কমে যাচ্ছে ও আগামরা রোগ দেখা দিচ্ছে।

এই ব্যাপারে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে এসব ইটভাটা বছরের পর বছর চলমান রয়েছে। একাধিক ইটভাটা মালিক গণমাধ্যমকে বলেন প্রতি মৌসুমের আগেই বিভিন্ন মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তারা ম্যানেজ করে ভাটার কার্যক্রম চালাতে থাকেন। ফলে অভিযানের আগেই তাদের কাছে তথ্য চলে আসে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 − three =