অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আবেদন জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অর্গানাইজেশন

0
764

গত বুধবার, ২২শে মার্চ ২০২৩ খ্রি. সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সিনিয়র সাংবাদিক মো. মামুন ইবনে হাতেমী’র পৈত্রিকভবন, পত্রিকা-অফিস ও দোকানঘর ভেঙ্গে লুটপাটকারী এবং স্ত্রী-সন্তান পরিবারকে নির্যাতন ও অপহরণকারী লুৎফর রহমান গং ও তার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর শেল্টারদাতা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোতোষ বিশ্বাস, ওসি প্রলয় কুমার সাহা, মুগদা থানার ইন্সপেক্টর(অপারেশন্স) আশিশ কুমার দেব, এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মন ও গোলাম মোস্তফা’র বিচারের দাবিতে ‘ফেডারেশন অব বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অর্গানাইজেশন (এফবিজেও)’র আহবানে এই  মানববন্ধন পালন করা হয়। এতে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, অনলাইন ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। সকল সাংবাদিকদের একটিই দাবি ছিল, সরকার অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা নিবেন।

এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন অত্র ফেডারেশনের চেয়াম্যান এস. এম মোরশেদ। তিনি বলেন, অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া দেশের সকল নির্যাতিত সাংবাদিকের ওপর নিরপেক্ষ তদন্তসহ দোষীদের বিরুদ্ধে বিচারের দাবি জানান। যদি মানববন্ধনে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের তদন্ত করে দ্রুত বিচার করা না হয় তবে রোজার পরে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।

এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব মো. হানিফ আলী (সম্পাদক- সাপ্তাহিক অবদান), এস এম তোহা- ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাসুদুর রহমান দিপু (মহাসচিব- জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা), অর্থ বিষয়ক সম্পাদক- আবু তাহের পাটোয়ারী, মো. মোশারেফ হোসেন- সদস্য, সাপ্তাহিক পত্রিকা পরিষদ, দেলোয়ার হোসেন- ঢাকা প্রেস ক্লাব,  এড. ইয়াসমিন- সুপ্রিম কোর্ট করেসপন্ডেন্টে, দৈনিক এই বাংলা, সুমী রহমান, সাহেল আহমেদ সোহেল- সভাপতি জুরাইন প্রেস ক্লাব, রাসেল কবির, ফয়সাল আহমেদ, মুহ: ওবায়দুল হক- সভাপতি, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং সম্পাদক দৈনিক সরকার, ফয়সাল- ক্রাইম চীপ, জাতীয় ক্রাইম রিপোর্টার সোসাইটি, উলফৎ জাহান মিলি শিকদার- রিপোর্টার, অপরাধ বিচিত্রা ও জাতীয় দৈনিক চিত্র, মো. পাঠান, মো. এজাজ আহমেদ, মো: আনসারী, ফয়েজউল্লাহ, মোল্লা নাসিরসহ আরো অনেকে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘ফেডারেশন অব বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অর্গানাইজেশন (এফবিজেও)’র চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ।

সভায় বক্তারা বলেন, নির্ভীক সাংবাদিক মো. মামুন ইবনে হাতেমীর মুগদা এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। উক্ত বাড়িটিতে তাঁর পৈত্রিক বাড়ি, একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা অফিস ও দোকানঘর ছিল। সন্ত্রাসীরা দিনের পর দিন লুটপাট ও তান্ডব চালিয়ে একটি আস্তভবন মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। অথচ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে এসব কিছুই ছিল না। ভুক্তভোগী ও নির্যাতিত সাংবাদিক বলেন, আমি দৈনিক এই বাংলা পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক। আমার পিতা খুব ধার্মিক ও সৎ ছিলেন। এই বাড়িটি ওনার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে বানিয়েছেন। তিনি বলতেন, বাড়িটি তিনি বানিয়েছেন মসজিদের সাথে সম্পর্কিত করে। তিনি মৃত্যুবরণও করেন, শুক্রবার দিন মেরাজ মাসে পবিত্র মসজিদে এশার জামাতে নামাজরত অবস্থায় থাকাকালীন। তিনি দলমত নির্বিশেষে অত্র মুগদা থানা এলাকার সকলের কাছেই খুব প্রিয় ও সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। পরবর্তীতে এই পরিবারের ইসলামী পরিচয় মুছে দিতে ও সহায় সম্পত্তি কেড়ে নিতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় হয়।

আমি গত ১৬ই মার্চ ২১ খ্রি. আমার পৈত্রিক ভবন, পত্রিকা অফিস ও দোকানঘর ভাঙ্গা ও লুটপাটের খবর জানতে পেরে সাথে সাথে ৯৯৯- এ কল করি এবং তাদের সহায়তা নিয়ে প্রাথমিকভাবে ভবন ভাঙ্গা ও লুটপাট বন্ধ করি। কিন্তু থানার ইশারায় কাউকেই গ্রেফতার করা হয় নাই। যেই অভিযোগের আইডি নম্বর: CFS ২৫৯৮৯৪৭৩। সেই দিনই জানতে পারি, তারা এলাকার প্রভাবশালী ও থানার সাথে যুক্ত হয়ে পৈত্রিক বাড়ি, সাপ্তাহিক পত্রিকা অফিস ও দোকানঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে। আমি দ্রুত সেই ভাঙ্গা অবস্থার বাড়ির ছবিগুলো তুলে ১৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি, পুলিশ কমিশনারসহ সর্বমহলে এবং ২১শে মার্চ স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রিসিভিং করাই। যার এক কপি মুগদা থানার বর্তমান ইন্সপেক্টর আশিশ কুমার দেব (অপারেশন্স)-কে দেই। তাকে আমার বাড়িটি রক্ষা করতে, এই বিষয়ে মামলা নিতে এবং লুটপাটকারীদের গ্রেফতারের আবেদন জানাই। তিনি তা না করে ওসি প্রলয়ের সাথে কথা বলতে বলেন। এর ২/৩ দিন পর আবারো শুনি ভাঙ্গা শুরু হয়েছে। আমার এতক্ষণে কিছু বুঝতে বাকি থাকে না। আমি আবারো ৯৯৯-এ ফোন করে ভবন ভাঙ্গা বন্ধ করাই। এরপর ওসি প্রলয়ের সাথে কথা বলি। কিন্তু তিনি কোনো মামলা নিতে অস্বীকার করেন। এভাবে ১/২ দিন পর পর  আমার মামলার আসামীরা ভবন ভাঙ্গা শুরু করে আর আমি ৯৯৯-এ ফোন দেই। পুলিশ সেখানে যায়, কাজ বন্ধ হয়, আবার কাজ শুরু হয়। এভাবে মুগদা থানার সহযোগীতায় আমার সকল সহায় সম্পত্তি, বাড়িঘরের আসবাপত্রসহ দরজা-জানালা সবকিছু ভেঙ্গে লুট করে সন্ত্রাসীরা নিয়ে যায়। বর্তমানে আমি আদালতে যে মামলা করি, যার সি আর নং- ২৮১/২২ তার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই গোলাম মোস্তফা তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলছেন:- ‘৯৯৯-এ কল পাইয়া পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া বাদীর আনিত অভিযোগের কোনো সত্যতা পায় নাই। তিনি জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯- এর সেবা ও সেবা পরবর্তী বক্তব্য তাদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহন করে নাই। ৯৯৯ কর্তৃপক্ষকে সেইসব কলরেকর্ড গ্রহণ না করে সুচতুর ও মনগড়া এক মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। অথচ মামলার মুলসূত্র কল-রেকর্ডগুলো যা ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ ও আমার উভয়ের কাছেই কল সংরক্ষিত আছে।

বর্তমানে আমি আদালতে যে মামলা করি, যার সি আর নং-২৮১/২২ এর আসামী স্থানীয় সন্ত্রাসী লুৎফর রহমানসহ মোট ৭জনকে মামলা দায়ের করেছি তার মধ্যে ঠিকাদার দুলাল মোল্লা প্রকাশ্যে মুগদা এলাকায় ঘোষনা দিয়ে বেড়ায়, সে ওসি প্রলয় কুমার সাহার খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।  ওসির সাথে সে বসে আড্ডা দিতো। আরেক ফ্রান্স নিবাসী, আসামী রাসেল সে দেশে আসার পরেই বাড়ি লুটপাটের কাজে হাত দেয় এবং আমার অসুস্থ স্ত্রী, সন্তানদের ধরে নিয়ে আটকানোর পরে মোবাইলের মাধ্যমে দিক-নির্দেশদাতাও ছিল সে। আরেক আসামী ইমরান মোল্লা, স্থানীয় গার্মেন্টসের মালিক। এই সকল আসামীদের কাছে সাংবাদিকের সহায় সম্পত্তি ও তাদের পরিবার পরিজনের যেন কোনো মূল্যই নাই। অন্যদিকে অভিযুক্ত পুলিশের কর্মকর্তারা যদি তাদের শেল্টার না দিতো তবে উক্ত আসামীগণ কখনোই এই সাহস পেতো না।

পরবর্তীতে মামলায় বর্ণিত আসামীরা পুলিশের সাহস পেয়ে আমার অসুস্থ স্ত্রী, সন্তান ও পরিবার মুগদা এলাকায় গেলে যখন জোর করে ধরে নিয়ে যায় এবং অন্যত্র এক ভবনে নিয়ে আটকিয়ে রাখে। আমি জুম্মার নামাজ পড়ে তা জানতে পারি। আমি দ্রুত জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল করি। ৯৯৯ মুগদা থানাকে নির্দেশ দেয় এবং আমাকে দ্রুত মুগদা থানায় যেতে বলে। আমি মুগদা থানায় গেলে এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মনের নেতৃত্বে মুগদা থানা নিয়োজিত পুলিশ ফোর্স এসে অপহৃত আমার পরিবারকে উদ্ধার করে। আমি সেই সময় দীর্ঘক্ষণ থানায় অবস্থান করে পুলিস ফোর্স নিয়ে পরিবারকে উদ্ধার অভিযানে বের হচ্ছি তার সকল ভিডিও ফুটেজও মুগদা থানার সিসি ক্যামেরায় রয়েছে। এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মনসহ সঙ্গীয় ফোর্স গিয়ে সেই ভবন থেকে আমার স্ত্রী-সন্তানকে উদ্ধার করলেও ওসি প্রলয় কুমার সাহার নির্দেশে এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মন কোনো আসামী গ্রেফতার ও মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। উল্টো সাংবাদিকের নির্যাতিত পুরো পরিবারকে রাতে থানায় আসতে বলেন। সেখানে গেলে প্রায় রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় বসিয়ে অপেক্ষা করিয়ে রাখেন।

আরো আশ্চর্যজনক, যেই দিন এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মনসহ সঙ্গীয় ফোর্স আমার পরিবারকে উদ্ধার করে আমার মামলা না নিলেও ঠিকই পরের দিন মুগদা থানার প্ররোচনায় আসামী লুৎফর রহমান আমার বিরুদ্ধে ১৯০০ টাকা ছিনতাইয়ের এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার সিআর মামলা নং ১০০/২০২১, মুগদা থানা। রাতারাতি সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করা হয় সেই পুলিশ কর্মকর্তা এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মনকে। তিনিও অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ সত্য জেনেও, থানা ও অত্র এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ  গ্রহণ না করে, মুগদা থানায় আমার দায়ের করা অনেকগুলো জিডি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমার অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে মিথ্যা প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে হয়রানী করে চলেছেন। যেই মিথ্যা মামলায় তাকে সহযোগীতা করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোতোষ বিশ্বাস। আবার এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোতোষ বিশ্বাস আইজিপির কাছ থেকে ভবন লুটপাটের যে তদন্ত আসে, সেখানে মুগদা থানার ইন্সপেক্টর(অপারেশন্স) আশিশ কুমার দেব ও সে অপরাধীদেরই শেল্টার দিয়ে বলে উক্ত ঠিকানায় কোনো বসত ভবনই ছিল না। এরা আস্তো আমার বাড়িঘর ভ্যানিস করে দিচ্ছে। কোথাও কোনো বিচার পাচ্ছি না। এভাবে পুলিশের কাছ থেকে আমি ন্যয় বিচার বঞ্চিত হয়ে উল্টো প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হয়ে চলেছি। এস.আই সুশীল চন্দ্র বর্ম্মনের ন্যয় বর্তমান আমার মামলা ২৮১/২২ এর তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই গোলাম মোস্তফাও ঠিক একইভাবে মামলার সকল বিষয়ই গোপন করে আদালতে আসামীর পক্ষ হয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আমি এর বিচার দাবি করছি। এই বিষয়ে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মুগদা থানার সিসি ক্যামেরা নষ্ট; এসব কিছুই নাই। তিনি বলেন, মুগদা থানার সিসি ক্যামেরা প্রায়ই নষ্ট হয় এবং মাত্র দেড় মাস আগেও একবার নষ্ট হয়েছে। আবার আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা আছে সিআর মামলা নং ১০০/২০২১, মুগদা থানা, সেই ঘটনাস্থলেও মুগদা থানার সিসি ক্যামেরা আছে, কিন্তু মুগদা থানা তা গোপন করে যাচ্ছে।

আমার মামলা ২৮১/২২ এর তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই গোলাম মোস্তফা একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেই থেমে থাকেন নাই বরং এমন প্রতিবেদন দাখিল করেছেন যাতে ভবিষ্যতে আমার ন্যয় বিচার পাবার সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আসামীদের কাছ থেকে বড় ধরণের উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই গোলাম মোস্তফা আমাকে ও আমার স্বাক্ষীদের কাছ থেকে বক্তব্য নেয়ার সময় উল্টাপাল্টা কথা বলে সবাইকে ভীতসন্ত্রস্ত করে দেয়। আমার ১ম স্বাক্ষী মুগদা থানা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। অন্যদিকে আসামীরা সমাজের খুবই প্রভাবশালী। ১ম স্বাক্ষী আমাকে গোপনে জানান, তার জবানবন্দী ও বক্তব্য যা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা দুর্ধর্ষ আসামীদের কাছে গিয়ে তা জানিয়ে দেয়। এভাবে সে ১নং স্বাক্ষীকে জীবনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। কিন্তু এরপরও ১নং স্বাক্ষীর জবানবন্দীও তিনি সম্পূর্ণ পাল্টিয়ে দিয়েছেন। যার প্রমানও আমার কাছে আছে। এছাড়া এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে, কয়েকদিন পর পরই তিনি আসামীদের কাছ থেকে এসে টাকা নিয়ে যেতেন।

আমি এই মামলায় ২জন স্বাক্ষী দাখিল করেছি। আমার ২য় স¦াক্ষীর থেকে তিনি যে জবানবন্দী গ্রহণ করেছেন, তা প্রেরণ না করে বড় ধরণের উৎকোচের বিনিময়ে সর্ম্পূর্ণ মিথ্যা প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন। কিন্তু তিনি জানেন না, প্রদানকৃত ২য় স্বাক্ষীর বক্তব্য একজন সাংবাদিক হিসাবে আমিও গোপনে ধারণ করে রেখেছিলাম। সেই ধারণকৃত ২য় স্বাক্ষীর বক্তব্য আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। অথচ তিনি তা না দিয়ে আমার ২য় স্বাক্ষীর নাম দিয়ে সুচতুর ও মনগড়া এক মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। কর্তৃপক্ষ চাইলে সেই জবানবন্দী যথাসময়ে প্রদান করা হবে। এই স্বাক্ষীদ্বয়ের বক্তব্যই প্রমান করে বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা কতবড় একজন অসৎ পুলিশ কর্মকর্তা।

তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বাক্ষীদ্বয়ের জবানবন্দী গ্রহণ করে ১৬১ ধারায় আদালতে যে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন তাতে কোথাও কোনো স্বাক্ষীর স্বাক্ষর পর্যন্ত গ্রহণ করা হয় নাই। কারণ তিনি জানতেন যে, এই মিথ্যা জবানবন্দীতে কোনো স্বাক্ষীই ১৬১ ধারায় স্বাক্ষর প্রদান করবেন না।

এছাড়া আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাদি হিসাবে আমাকে জানানোর প্রয়োজন তিনি মনে করে নাই। উল্টো আমি উপস্থিত হতে রাজি হই নাই বলে লিখেছেন। অথচ তার সাথে কথা হলে তিনি আমাকে অত্র থানার বাইরে তার বাসা গেন্ডারিয়ায় গিয়ে দেখা করতে বলেন। তিনি জানতেন, তার তার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমি স্বরাষ্ট্র, তথ্য, আইন, আইজিপি, পুলিশ কমিশনার, র‌্যাব, ডিজিএফআইসহ সর্বমহলে ২১-৩-২১ তারিখে, এরপর ২২-৬-২০২১ তারিখে, ৩-১০-২০২১ তারিখে অভিযোগ দাখিল করেছি। তাই তার সাথে সাক্ষাতে ভালো মানুষ সেজে আমার কাছে আব্দার করে বলেছিলেন, তিনি একজন খুবই সৎ কর্মকর্তা। তার পিতা একজন অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর কর্মকর্তা। আমাকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন, মুগদা থানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই মামলার তদন্ত থেকে তাকে যদি সরিয়ে  দেন, আমি তখন যেন না-রাজি দেই। এভাবে তিনি উর্ধ্বতন পুলিশের সাথেও গেম খেলেছেন। অন্যদিকে, সে আমার ও স্বাক্ষীদের প্রকৃত বক্তব্য গোপনে রেকর্ড করে আসামীদের কাছে গিয়ে গিয়ে তাদের শোনাতে থাকে, যাতে তারা আরো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং ফায়দা নিতে পারেন।

বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই গোলাম মোস্তফা মনে হয় সব কিছু ম্যানেজ করে এখন প্রতিবেদনের আরেক জায়গায় মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তরের নাম উল্লেখ না করে খুবই চালাকি করে লিখেছেন, উক্ত বিষয় নিয়ে বাদী (আমি) বিভিন্ন জায়গায় দরখাস্ত প্রেরণ করিলে তদন্তকারী অফিসারগণ সঠিক তদন্ত করিয়া তাহাদের তদন্ত প্রতিবেদন যথাসময়ে যথাস্থানে প্রেরণ করিয়াছেন- এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি জড়িত প্রভাবশালীদের দায়মুক্তি করতে চাইছেন; অথচ বর্তমান মন্ত্রণালয়সহ অন্য কোনো দপ্তর তাদের আজো দায়মুক্তি দেন নাই।

আমি আবারো মামলার মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দেখে জনাব আসাদুজ্জামান খান এমপি- মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, মো. আমিনুল ইসলাম খান, সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আসামীদের শেল্টার দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ১৩-৩-২৩ অভিযোগ দায়ের করে রিসিভিং করাই। এছাড়া মিসিং এড়াতে সরকারী রেজি: ডাকযোগে ও বেসরকারী সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসেও তা আবারো প্রেরণ করি। আমি এর আগে স্বরাষ্ট্র, তথ্য, আইন, আইজিপি, পুলিশ কমিশনার, র‌্যাব, ডিজিএফআইসহ সর্বমহলে ২১-৩-২১ তারিখে, এরপর ২২-৬-২০২১ তারিখে, ৩-১০-২০২১ তারিখে অভিযোগ দাখিল করেছিলাম। কিন্তু সকল দপ্তর থেকে এর তদন্তভার এর সাথে পুলিশেরই কতিপয় কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জড়িত তাই আজো আমি ন্যয় বিচার থেকে বঞ্চিত এবং পরিবারসহ হয়রানীর শিকার হয়ে চলেছি। অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হই।

আমি সব হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। ঢাকায় নিজের বাড়িঘর হারিয়ে, স্ত্রী-ছেলে-সন্তানকে অপহরণ ও নির্যাতনের বিচার চেয়ে আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও আইন-আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্ত কোথাও ন্যয় বিচার পাচ্ছি না। সঠিক তদন্ত হলে আসামির তালিকায় আরও প্রভাবশালীদের নাম আসবে।

অতএব ন্যয় বিচার থেকে বঞ্চিত একজন অসহায় সাংবাদিক ও তার পরিবারের ন্যয় বিচার নিশ্চিত এবং দোষী পুলিশ কর্মকতাদেরসহ সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen + nine =