একের পর এক বৈঠক ইইউ প্রতিনিধিদলের

0
363

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। এ দিন পাঁচটিরও বেশি বৈঠক করেছে তারা। এসব বৈঠক হয়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মানবাধিকার কমিশন, পুলিশ, আওয়ামী লীগের বিদেশ কমিটির সঙ্গে। বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েই আলোচনা করেছে দলটি।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, এসব বৈঠকে আগামী নির্বাচন ঘিরে তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে ইইউ প্রতিনিধিদল। জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় তারা। নির্বাচনের সময়ে পুলিশ কেমন নিরাপত্তা দেবে তার বিষয়ে জানতে চেয়েছে প্রতিনিধিদল। মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদল জানতে চেয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না।

ওবায়দুল কাদের হোয়াইটলি বৈঠক : গতকাল সকালে সচিবালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। তিনি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশে আসা নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল নিয়ে আলোচনা করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। ছয় সদস্যের একটি দল বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করছে। আপনারা হয়তো জানেন, তারাই মূলত সিদ্ধান্ত নেবেন ও সুপারিশ করবেন যে, নির্বাচনের সময় তারা সম্পূর্ণ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবেন কি না।’

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে এবং নির্বাচনে ইইউর সমর্থন ও আগ্রহ সম্পর্কে কথা বলার একটি ভালো সুযোগ ছিল। আমরা অবশ্যই এটি চাই যে, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।’

ইইউ নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগের কথা বলেনি বলে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো উদ্বেগের কথা তারা বলেননি। তারা ভালোটা আশা করছেন। খারাপ কিছু নিয়ে কোনো কথা বলেননি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হোক, এটাই তারা চেয়েছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী ও পরিপক্বতা অর্জন করুক, এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মূলত নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। এতে চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিও ছিল। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তাদের সে কথাই বলেছি। এ সরকার নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে। সরকার তখন শুধু রুটিনওয়ার্ক করবে, অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেমনটি হয়। এ বিষয়ে আমি ইইউ রাষ্ট্রদূতকে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। তাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আলোচনা খুবই সফল ও অর্থপূর্ণ হয়েছে।’

নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো সুপারিশ ছিল কি না, জানতে চাইলে আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা বলেছি তারা যদি পর্যবেক্ষক দিতে চায়, তাদের সুস্বাগত। তারা আসবেন, আমাদের অতিথি। যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন, একজন কূটনীতিক নিজের আওতার মধ্য থেকে কাজ করবেন। পর্যবেক্ষকদেরও দায়িত্ব পালনে ৪১ ভিয়েনা কনভেনশনের নীতিমালা আছে। তারা সেই নীতিমালার মধ্যে দায়িত্ব পালন করবেন। এখানে আমাদের কোনো আপত্তি থাকার প্রশ্ন নেই। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যবেক্ষকরা সরেজমিনে দেখতে পাবেন, নির্বাচন কীভাবে হচ্ছে। এ নিয়ে বাদানুবাদের কোনো সুযোগ থাকবে না।’

ভোটকেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় আনার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছি কি না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিস্তারিত কোনো আলোচনা হয়নি। তাদের ছয়জনের একটি দল এসেছে। তারা খুঁটিনাটি বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করবেন। তারা দলের সঙ্গেও বসবে ১৫ জুলাই।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পার্লামেন্টের বিলুপ্তি, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এসব নিয়ে কোনো কথা হয়নি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। তবে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না। এ কথা আমরা কেন বলব। তারা কাকে কী অনুরোধ করবেন, এটা তাদের ব্যাপার।’

বিএনপি তো রাস্তায় আছে। তারা এ সরকারের অধীন নির্বাচনে যাবে না, সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও রাস্তায় আছি। তারা বিক্ষোভে আছে, আমরা শান্তি সমাবেশে আছি।’

এ মাসের শেষদিকে ভারত যাচ্ছেন, বিজেপির সঙ্গে বৈঠক আছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আমার নেতৃত্বে একটি দল চার বছর আগে ভারতে গিয়েছিল। পরে রামমাধবের নেতৃত্বে ভারত থেকে একটি দল এসেছিল। এটি দলের সঙ্গে দলের আলোচনা। ভারতের প্রসঙ্গ এলেই আপনারা প্রশ্ন করেন। কিন্তু চীনের সঙ্গে প্রতি বছর সফর বিনিময় করি, তা তো বললেন না। এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেন না। চীন থেকেও ১৫ জন ঘুরে এসেছি। ভারতে যাবেন পাঁচজন।’

নির্বাচন পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো, ইইউ দলকে মানবাধিকার কমিশন : গতকাল দুপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ প্রতিনিধিদল। আগামী জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো বলে প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা আছে কি না, তা কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কমিশনের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক দলকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এ নিয়ে কমিশনকে কোনো প্রশ্নও করা হয়নি। তবে বৈঠকে সব ধরনের মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, তার ব্যক্তিগত ধারণা, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক দল পাঠাতে পারে।

৬ সপ্তাহ পার্বত্য অঞ্চল পর্যবেক্ষণে রাখতে চায় ইইউ : জাতীয় নির্বাচনের আগে ছয় সপ্তাহ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল পর্যবেক্ষণে রাখতে চায় ইইউ। গতকাল সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানায় সফররত ইইউর প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।

বৈঠক শেষে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে সহায়তা চাচ্ছে। আমরা বলেছি সব ধরনের সহায়তা দেব। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় যাওয়ার বিষয়ে বলেছে। এ বিষয়টি দেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আমরাও দেখি। আমাদের দিক থেকে সব সাপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে বলেছি। নির্বাচনের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সুতরাং তাদের থাকা, পরিদর্শন করা বা চলাচল করার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা আমরা দেব।’

তিনি বলেন, ‘আরেকজন জানতে চান, ২০০৮ সালে তারা যখন এসেছিলেন তখন ব্যাপক সহযোগিতা পেয়েছিলেন; এবারও পাবেন কি না? আমরা বলেছি ২০০৮ সালের চেয়েও ভালো এনজয় করবেন। কারণ ২০০৮ সালে যোগাযোগব্যবস্থা ততটা মসৃণ ছিল না। ওখানে গেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন, আমরা বলেছি, এটা যেহেতু নির্বাচনকেন্দ্রিক, এটি নির্বাচন কমিশন দেখবে। এটার সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত না।’

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘তারা নির্বাচনের আগে ছয় সপ্তাহ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা অবজারভে রাখতে চায়। তারা নির্বাচনের সময় আসবে। আমরা বলেছি সেটি নির্বাচন কমিশন দেখবে। আর আমাদের দিক থেকে অনুরোধ করেছি, এটা যেহেতু বিশেষ তিনটি জেলা সেখানে কিছু নিরাপত্তার ইস্যু আছে। যদিও এখন আগের চেয়ে অনেক অনেক ভালো পরিবেশ। আমরা তাদের ব্রিফ করেছি যে, তিনটি জেলায় ২৬টি উপজেলা, ১২২টি ইউনিয়ন এবং প্রশাসনিক বিষয়ে। তারা খুবই সন্তুষ্ট।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের আমন্ত্রণে তারা এসেছে, নির্বাচন বিষয়ে অবজারভার হিসেবে এসেছে এটিই তাদের উদ্দেশ্য। আমরা বলেছি এটা যেহেতু তাদের নির্বাচনকেন্দ্রিক ভিজিট, এটি তারা নির্ধারণ করবে। এটি আমাদের পার্ট না। তারা কবে ভিজিট করবে সেটি জানাননি। আমরা বলেছি, তারা আমাদের মেহমান, সব ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতা আমরা করব। সেখানে তারা কী করবে না করবে, সেটি দেখবে নির্বাচন কমিশন। আমরা তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছি, এখানে স্থানীয় প্রশাসন আছে, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, সেনাবাহিনী আছে, সুতরাং তারা যাতে নিরাপত্তার ইস্যুটি মাথায় রাখে সেটি বলেছি।’

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক ১৫ জুলাই : গতকাল বিকেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে ইইউ প্রতিনিধিদল। রাজধানীর গুলশানে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসবভনে এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়। বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদসহ পাঁচজন।

এ বিষয়ে শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘(আনুষ্ঠানিক) বৈঠক হবে ১৫ জুলাই। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতৃত্ব দেবেন। আজকের (গতকাল) বৈঠক সিরিয়াস কিছু নয়। সেদিন আপনাদের পুরো ব্যাপারটা জানানো হবে।’

বৈঠকটি সৌজন্যমূলক হয়েছে বলে দাবি করেন শাম্মী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘অনেকটাই পরিচিত হওয়ার মতোই। নির্বাচন নিয়ে তেমন কথা হয়নি। ওনারা হয়তো পরবর্তী সময়ে আরও দলের সঙ্গে বসবেন, কথা বলবেন।’

সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘এটা আমাদের এজেন্ডায় ছিল না। কোন দল আসবে না আসবে, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা আমার জায়গা থেকে শোভন মনে করি না। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়নি।’

বৈঠকে ইইউ কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা কোনো প্রস্তাব আমাদের দেয়নি। যেহেতু আমাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত আছে। তাই এখানে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’

পুলিশের সঙ্গে ইইউর পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক : গতকাল পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইইউ প্রতিনিধিদল। বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় পুলিশ কেমন নিরাপত্তা দেবে তার বিষয়ে জানতে চেয়েছে তারা। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসানের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের বৈঠকটি হয়। আইজিপি এতে উপস্থিত ছিলেন না।

গতকাল দুপুর পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ সদর দপ্তরে ইইউর ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠক করতে যান। বৈঠকটি ৪৫ মিনিট ধরে চলে। বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজিপি কামরুল আহসান বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ কী নিরাপত্তা দেবে তা প্রতিনিধিদল জানতে চেয়েছে।’ নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এ প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘না, এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।’

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে তারা। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউর প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।

বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ ও নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানী দলটি গত শনিবার ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় আসে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতিনিধিদলটির মূল কাজ হবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয় মূল্যায়ন করা।

পর্যবেক্ষক দলটি গত রবিবার তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ওইদিন প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে। ইইউর প্রতিনিধিদলটি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় রয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও প্রতিনিধিদলের কয়েক দফা বৈঠকের কথা রয়েছে।

ঢাকা সফরের পর প্রতিনিধিদলটি যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করে আসছে জাতীয় নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five + twenty =