আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন রেলপথের উদ্বোধন ট্রেন চালকদের সতর্ক থাকতে- প্রধানমন্ত্রী

0
698

 মো: খোরশেদ আলম: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধন করেছেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো সিঙ্গেল লাইন রইল না। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ রেলপথ উদ্বোধন করেন। লাকসাম রেলওয়ে স্টেশনে প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রেলপথমন্ত্রী মো.নূরুল ইসলাম সুজন, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বরুড়া আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, চাটখিল- সোনাইমুড়ি আসনের সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহিম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা পরিচালক কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) পার্থ সরকার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, প্রকল্প পরিচালক সুভক্তগীন, পূর্বাঞ্চলের মহা ব‍্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক শামীম আলম,পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান (বিপিএম) সহ রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা গন উপস্থিত ছিলেন। ৩২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরো অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত হচ্ছে। যার ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো সিঙ্গেল লাইন রইল না। এ পথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না, ফলে যাত্রার সময় কমে আসবে।

উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধনের পর এই লাইনে ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। এই লাইনে রেলের গতি এনে দিয়েছি। তবে চালকদের সতর্ক থাকতে হবে, কোন জায়গায় কতটুকু দ্রুতগতিতে চলবে সেটা ভাবতে হবে।

এটি আধুনিক ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম সবটুকু লাইনই ডাবল লাইনে উন্নীত হলো। এতে যাত্রীরা আরাম আয়েশে চলতে পারবে। পরিবহন খরচও কমে যাবে, এ পথে আগের চেয়ে এক ঘণ্টা সময় কম লাগবে। কক্সবাজার পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষের দিকে বলেও জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি-জামায়াত যেন রেললাইন ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে দেশের জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই এই কাজগুলো করা সম্ভব হয়েছে।

এটা জাতীয় সম্পদ, এটা জনগণকে রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না, এরা কিছু দিতে জানে না। এরা নিজেদের আখের গোছাতে জানে, লুটপাট করতে জানে, দুর্নীতি করতে পারে, মানিলন্ডারিং করতে পারে।

তাদের কাছ থেকে যেন দেশবাসী রক্ষা পায়। জানা গেছে, আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার অংশে আগে একটি রেললাইন ছিল। এখন তা দুই লাইন করা হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আন্তঃনগর ট্রেনের যাতায়াত সময় পৌনে এক ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা কমবে।

এ লাইনে এক সময় শুধু মিটারগেজ ট্রেন চলতে পারত। তবে দুই লাইন চালু হওয়ার পর থেকে সেখানে মিটারগেজের পাশাপাশি ব্রডগেজ ট্রেনও চলতে পারবে। রেলওয়ের সুত্রে জানা যায়,আখাউড়া-লাকসাম রেলপথকে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে উন্নীত করার প্রকল্পটি ২০১৪ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ হয় ২০১৬ সালের ১৫ জুনে।

তারপর প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের নভেম্বরে এবং তা ২০২০ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে কাজ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। বর্ধিত এই সময়েও পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। পরে তা ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

সেটাও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। মেয়াদ বাড়লেও প্রকল্প ব্যয় কমে। সংশোধিত ডিপিপিতে (আরডিপিপি) প্রকল্প ব্যয় ছয় হাজার ৫০৪ কোটি থেকে পাঁচ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা হয়। খরচ কমে ৯২১ কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × five =